Jiban Krishna Saha: 'কোথায় পাব ? আমার ঘরে খুঁজে দেখে নাও', জীবনকৃষ্ণর গ্রেফতারির মধ্য়েই সামনে এল ভাইরাল ভিডিও ! কী আছে তাতে ?
Jiban Krishna Saha's Arrest: একজন বারবার করে টাকা ফেরতের আর্জি জানাচ্ছেন। আরেকজন সম্পূর্ণ নির্বিকার !

পার্থপ্রতিম ঘোষ, শিবাশিস মৌলিক ও আশাবুল হোসেন, কলকাতা : জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারির মধ্য়েই সামনে এল এক ভাইরাল ভিডিও। যেখানে তৃণমূল বিধায়কের সামনে বারবার টাকা ফেরতের আর্জি জানাচ্ছেন একজন। আর কার্যত নির্বিকার জীবনকৃষ্ণ ! যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। এনিয়ে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। যদিও, এনিয়ে কিছু বলতে চায়নি তৃণমূল। এরইমধ্য়ে, জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে প্রতারণারও অভিযোগ তুলেছেন বড়ঞার বাসিন্দা এক ব্য়ক্তি।
একজন বারবার করে টাকা ফেরতের আর্জি জানাচ্ছেন। আরেকজন সম্পূর্ণ নির্বিকার ! ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ঘরের ভিতর সোফার মধ্য়ে বসে রয়েছেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। উল্টোদিকের ব্য়ক্তি সমানে তাঁর কাছে টাকা ফেরতের অনুরোধ করে যাচ্ছেন।
তাঁদের মধ্যে কথোপকথন অনেকটা এরকম-
কণ্ঠ: দাদা আপনি বললেন, ৪ লাখের মধ্য়ে ২ লাখ দেব। আপনি বললেন... আমি বললাম শরীর খারাপ কবে থেকে আপনাকে বলছি.. ২ লক্ষ টাকা দিন... ৪ লাখের মধ্য়ে ২ লাখ দিন অন্তত...
যাঁর বিরুদ্ধে চাকরি বিক্রির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে... সেই তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা বারবার বলে চলেছেন টাকা কোথায় পাব?
জীবনকৃষ্ণ সাহা - কোথায় পাব?
কণ্ঠ: ২ লাখ টাকা দিন... প্লিজ...
জীবনকৃষ্ণ সাহা -কোথায় পাব আমি?
কণ্ঠ: প্লিজ স্য়র...
জীবনকৃষ্ণ সাহা - কোথায় পাব ? আমার ঘরে খুঁজে দেখে নাও।
সিবিআই-এর দাবি, শিক্ষকতার চাকরি দেওয়ার নাম করে বহু লোকের থেকে টাকা নিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা ! একেক জনের থেকে একেক রকম অঙ্ক !
এনিয়ে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "জীবনকৃষ্ণ সাহা আগে থেকেই এই নানারকম দালালির কাজে যুক্ত ছিলেন। শুধু শিক্ষা ক্ষেত্রে নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরি বিক্রির ব্যবসাটাই তাঁর মূল ব্যবসা ছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের ছাতার তলায় বসেই এটা তিনি করেছেন। যে কারণে তৃণমূল কংগ্রেস এখন জীবনকৃষ্ণ সাহাকে নানাভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু, আমি মনে করি, জীবন সাহাও রক্ষা পাবে না। জীবন সাহার সঙ্গে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরাও রক্ষা পাবেন না। যাঁরা টাকার ভাগ নিয়েছেন তাঁরাও কেউ রক্ষা পাবেন না।"
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "জীবনকৃষ্ণ নিয়ে আমরা কোনও কথাই বলছি না। এটা দলের কোনও বিষয়ই না। আইন আইনের পথে চলবে। জীবনকৃষ্ণবাবু বা তাঁর আইনজীবীরা এর উত্তর দেবেন। আমি জীবনকৃষ্ণবাবুর মুখপাত্র নই এবং এনিয়ে দলের কোনও বক্তব্য নেই। আইন আইনের পথে চলবে।"
CBI সূত্রে দাবি, ২০২২ সালের ১৮-ই অক্টোবরের একটি চ্য়াট হিস্ট্রি পাওয়া গেছে। সেখানে এক চাকরিপ্রার্থী বলছেন, 'স্য়র, আমার টাকার দরকার। চারদিক থেকে খুব চাপ আসছে।' উত্তরে জীবনকৃষ্ণ সাহা বলছেন, 'আমি অর্ধেক টাকা দিয়েছি। বাকি টাকার জন্য় ধৈর্য ধরতে হবে। বারবার ফোন করলে কিন্তু গ্রেফতার হতে হবে।'
শুধু চাকরিবিক্রির বিনিময়েই টাকা নেওয়া নয়। অভিযোগ, টাকা তোলার একাধিক পন্থা ছিল জীবনকৃষ্ণ সাহার। যা নিয়ে গত বছরের শেষে, বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে বড়ঞা থানাতেই অভিযোগ করেন মহম্মদ সালাউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, বালির ঘাট পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে, তাঁর কাছ থেকে, ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। মহম্মদ সালাউদ্দিন বলছেন, "আমাদের এমএলএ জীবনকৃষ্ণ সাহার নামে থানায় অভিযোগ করেছিলাম। উনি বালির ঘাট পাইয়ে দেবেন বলে টাকা দাবি করেছিলেন। আমার কাছে অনেক দাবি করেছিলেন। আমি ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ইতিমধ্যে জমা করেছিলাম। কিন্তু, আমাকে দেননি, কোনও কথাও বলেননি। অনেকবার টাকা চাইতে গিয়েছি। ফোনও করেছি। চিনি না বলেছিলেন।"
২০২৪-এ বড়ঞা থানায় জীবনকৃষ্ণ সাহার নামে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, টাকা এখনও উদ্ধার হয়নি।






















