Bengal Day: ১লা বৈশাখ ‘বাংলা দিবস’, ১৬৭-৬২ ভোটে বিধানসভায় পাস প্রস্তাব
West Bengal Assembly: বিধানসভায় 'বাংলা দিবস' পালনের প্রস্তাবের পক্ষে পড়ল ১৬৭টি ভোট। বিপক্ষে পড়ল ৬২টি ভোট।
কলকাতা: রাজ্য বিধানসভায় 'বাংলা দিবস' পালনের প্রস্তাব পাস হয়ে গেল। পয়লা বৈশাখের প্রথম দিন অর্থাৎ পয়লা বৈশাখে 'বাংলা দিবস' (Bengal Day) পালনের প্রস্তাব পাস হল। বিধানসভায় (West Bengal Assembly) 'বাংলা দিবস' পালনের প্রস্তাবের পক্ষে পড়ল ১৬৭টি ভোট। বিপক্ষে পড়ল ৬২টি ভোট। একই সঙ্গে রাজ্যসঙ্গীত হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'বাংলার মাটি, বাংলার জল' গানটি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজ্য বিধানসভায় দু'টি প্রস্তাব জমা পড়ে। এর মধ্যে একটি ছিল, পয়লা বৈশাখ দিনটিকে বাংলা দিবস পালনের, দ্বিতীয়টি ছিল রাজ্যসঙ্গীত হিসেবে 'বাংলার মাটি, বাংলার জল' গানটিতে সিলমোহর দেওয়া। সেই নিয়ে শাসকদল তৃণমূল এবং বিরোধী দল বিজেপি-র বিধায়কদের মধ্যে তুুল বচসা বাধে। মূলত বাংলা দিবস পালনের দিন নিয়েই শুরু হয় গন্ডগোল।
১৯৪৭ সালের ২০ জুন তৎকালীন অখণ্ড বাংলা বিভাজনের বিষয়টি উত্থাপিত হয় বিধানসভায় এবং বঙ্গভঙ্গের সপক্ষে ভোট বেশি পড়ে। তাই সেটিই পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে বিবেচিত হওয়া কাম্য বলে দাবি করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সংখ্যার জোরে রাজ্য সরকার প্রস্তাব পাস করিয়ে নিলেও, রাজ্যপালকে তাতে সই করতে দেবেন না বলে হুঁশিয়ারিও দেন।
এর পাল্টা গর্জে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় এদিন মমতা জানান, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা হয়নি। সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তার পরেও কয়েক মাস অবিভক্ত ছিল বাংলা। বরং ২০ জুন বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার ওই দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে যন্ত্রণাময় ইতিহাস। তাই ওই দিনটি পালনের কথা এতদিন কারও মাথাতেও আসেনি। বিজেপি-ই সেই ঘা খুঁচিয়ে তুলেছে। তাই আগামী প্রজন্ম যাতে ভুল ইতিহাস জেনে বড় না হয়, তা দেখার দায়িত্ব তাঁদের।
বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে মমতা আরও বলেন, "কেন্দ্র সরকার বিজ্ঞপ্তি দেয় বটে। কিন্তু এত বছরে আগে কখনও পালন করা হয়নি। ২০ জুন দিনটির সঙ্গে বাংলার কোনও সম্পর্ক নেই। ওই বিধ্বংসী দিনটি ইতিহাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বাংলার মানুষের কাছে কখনও গৃহীত হবে না। একটি দলের ইচ্ছে অনুযায়ী সব হবে, যা চাপিয়ে দেবে, মেনে নিতে হবে, এটা হতে পারে না।"
বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে মমতা আরও বলেন, "কেন্দ্র সরকার বিজ্ঞপ্তি দেয় বটে। কিন্তু এত বছরে আগে কখনও পালন করা হয়নি। ২০ জুন দিনটির সঙ্গে বাংলার কোনও সম্পর্ক নেই। ওই বিধ্বংসী দিনটি ইতিহাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বাংলার মানুষের কাছে কখনও গৃহীত হবে না। একটি দলের ইচ্ছে অনুযায়ী সব হবে, যা চাপিয়ে দেবে, মেনে নিতে হবে, এটা হতে পারে না।"
এর পরই ভোটাভুটি হলে, প্রস্তাবের সপক্ষে বেশি ভোট পড়ে। শাসকদলের বিধায়করা বিধানসভাতে 'বাংলার মাটি, বাংলার জল' গেয়ে ওঠেন সমস্বরে। 'জয় বাংলা' ধ্বনিও ওঠে। তবে প্রস্তাব পাস হলেও, তাতে রাজ্যপালের সই প্রয়োজন। রাজ্যপালকে সই করতে দেবেন না, আগের বিলগুলির মতোই অবস্থা হবে এই প্রস্তাবের, এই মর্মে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন শুভেন্দু। তাই বিষয়টি নিয়ে ফের রাজ্য-রাজভবন সংঘাত দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক মহল।