Panchayat Election:মনোনয়ন পর্বে হিংসার জন্য় তৃণমূলের ভাবমূর্তি কি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে? কী বলছে C Voter-র সমীক্ষা?
Opinion Poll By C Voter: পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামবাংলার মনোভাবের আঁচ পেতে জনমত সমীক্ষা চালিয়েছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংস্থা সি-ভোটার। কী উঠে এল তাতে?
কলকাতা: মেরেকেটে আর কদিন বাদেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে গ্রামবাংলার মনোভাবের আঁচ পেতে জনমত সমীক্ষা চালিয়েছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংস্থা সি-ভোটার। সেখানে প্রশ্ন করা হয়, পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পর্বে হিংসার জন্য় তৃণমূলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে? ৫৯ শতাংশের ধারণা, হ্যাঁ, এতে তৃণমূলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৮ শতাংশের ধারণা, না ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়নি। ১৩ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা বলতে পারবেন না। রাজ্যের সমস্ত জেলা পরিষদের সব ক'টি কেন্দ্রে পৌঁছে ১০ হাজার ৫৪৮ জনের জনের সঙ্গে কথা বলেছেন সমীক্ষকরা। সমীক্ষা চালানো হয়েছে ১৫ জুন থেকে ২৬ জনের মধ্য়ে। এই সমীক্ষা কোনও রাজনৈতিক ভবিষ্য়দ্বাণী নয়। সেখান থেকেই এই ছবি উঠে এসেছে।
হিংসার ছবি...
ঘটনা হল, পঞ্চায়েত ভোটের আবহে বার বার রক্তাক্ত হয়েছে রাজ্য।গত ৮ জুন ভোট ঘোষণার পরের দিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব। আর সেদিন থেকেই রাজ্যে শুরু হয়ে গিয়েছিল রাজনৈতিক খুন। ২৭ জুন পর্যন্ত যা হিসেব, তাতে শেষ ১৯ দিনের মধ্যে ১১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। জখম হয়েছেন বহু। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ, সন্ত্রাসের রক্তচক্ষু ও রক্তের ছোপ ছোপ দাগ, কার্যত রাজ্যের সর্বত্র। মাঝে কোন কোন জেলায় কারা প্রাণ হারিয়েছেন ? গত ৯ই জুন, মনোনয়ন পর্বের একেবারে শুরুর দিনে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে খুন করা হয় কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ শেখকে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। এরপর ১৫ই জুন, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে ভাঙড়ে খুন হন আইএসএফ (ISF) কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লা ও ২ তৃণমূল (TMC) কর্মী রশিদ মোল্লা ও রাজু নস্কর। ওইদিনই মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মোজাম্মেল শেখকে পিটিয়ে ও গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ১৭ জুন কোচবিহারের (CoochBehar) দিনহাটায় বিজেপি প্রার্থীর দেওর শম্ভু দাসকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ছুরি মেরে খুন করা হয়। ওইদিনই মালদার (Malda) সুজাপুরে পিটিয়ে মারা হয় তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান মোস্তাফা শেখকে। ১৫ জুন মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় বাম-কংগ্রেসের মিছিলে গুলি চলেছিল। গুলিবিদ্ধ হন ২১ বছরের সিপিএম কর্মী মনসুর আলম। ২১ জুন তাঁর মৃত্যু হয়। পরের দিন ২২ জুন, পুরুলিয়ায় রেলশহর আদ্রায় পয়েন্ট ব্ল্য়াঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয় তৃণমূলের টাউন সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে। তা ছাড়াও গত ২৪ জুন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় দুষ্কৃতী আলিম বিশ্বাসের। সেই তালিকায় জুড়েছে কোচবিহারের দিনহাটা। গীতালদহে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জারি ধরলা গ্রামে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী বাবু হকের। আজকের সংযোজন, সবংয়ে বিজেপি নেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে তাঁকে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। সব মিলিয়ে হিংসার ছবি উঠে এসেছে বার বার। তাতে ভোটবাক্সে ছাপ পড়বে কিনা, সেটা বলবে সময়।
সঙ্গে একথাও মনে রাখা দরকার যে, সমীক্ষার ফলাফল সব সময় নিখুঁত ভাবে মেলে না। এই ধরনের পরিসংখ্য়ান থেকে মানুষের মনোভাব আঁচ করার চেষ্টা চলে যা কিনা নিখুঁত নয়।
আরও পড়ুন:মক্কা থেকে মনোনয়ন সংক্রান্ত মামলায় মিনাখাঁর তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল