![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
MLA Kanchan Mullick Interview: 'অভিনয়ই অক্সিজেন, প্রার্থী হয়েই ঠিক করেছিলাম জিপে উঠে মালা পরে ঘুরব না'
সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছেন টালিগঞ্জের বাড়ি থেকে। প্রথমে উত্তরপাড়ার রক্তদান শিবির, তারপর শ্রীরামপুরের মাহেশে কর্মসূচী। বিকেলে আবার ত্রাণ বিতরণ করতে যেতে হবে দুই জায়গায়। তারই ফাঁকে দুপুরে কোন্নগরের পার্টি অফিসেই খাওয়া দাওয়া সেরে একটু জিরিয়ে নেওয়া। সারাদিনের ধকলে ঘুমিয়েই পড়েছিলেন। ঘরে এসি নেই, তাতে ভ্রুক্ষেপও নেই। ২০ মিনিটেই বিশ্রাম শেষ। হাসিমুখে ঘরে ডেকে নিলেন নিজেই। ক্যামেরা অন করার সময় সাহায্য করতেও এগিয়ে এলেন। অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক এখন বিধায়কও। তাঁর 'নতুন ঠিকানায়' বসেই শুরু হল জীবনের নতুন ইনিংসের গল্প।
![MLA Kanchan Mullick Interview: 'অভিনয়ই অক্সিজেন, প্রার্থী হয়েই ঠিক করেছিলাম জিপে উঠে মালা পরে ঘুরব না' Exclusive Actor-MLA Kanchan Mullick Interview shares how life changed after joining politics MLA Kanchan Mullick Interview: 'অভিনয়ই অক্সিজেন, প্রার্থী হয়েই ঠিক করেছিলাম জিপে উঠে মালা পরে ঘুরব না'](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2021/06/08/d6c70b614da4e4da2c48be5a76d74199_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কোন্নগর: সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছেন টালিগঞ্জের বাড়ি থেকে। প্রথমে উত্তরপাড়ার রক্তদান শিবির, তারপর শ্রীরামপুরের মাহেশে কর্মসূচী। বিকেলে আবার ত্রাণ বিতরণ করতে যেতে হবে দুই জায়গায়। তারই ফাঁকে দুপুরে কোন্নগরের পার্টি অফিসেই খাওয়া দাওয়া সেরে একটু জিরিয়ে নেওয়া। সারাদিনের ধকলে ঘুমিয়েই পড়েছিলেন। ঘরে এসি নেই, তাতে ভ্রুক্ষেপও নেই। ২০ মিনিটেই বিশ্রাম শেষ। হাসিমুখে ঘরে ডেকে নিলেন নিজেই। ক্যামেরা অন করার সময় সাহায্য করতেও এগিয়ে এলেন। অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক এখন বিধায়কও। তাঁর 'নতুন ঠিকানায়' বসেই শুরু হল জীবনের নতুন ইনিংসের গল্প।
প্রশ্ন: রাজনীতিতে পা দিয়েই জয়লাভ। এখন দিনভর দলের কাজ থাকছে। এরপর অভিনয়ের জন্য সময় পাবেন কী করে?
কাঞ্চন মল্লিক: টাইম ম্যানেজমেন্ট এমন একটা জিনিস, যেটা চাইলে করা যায়। যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। প্রত্যেকটা মানুষেরই একটা রাজনৈতিক মতামত থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই আমি দলে যোগদান করি। তারপর উনিই বলেন, ভোটে দাঁড়াতে হবে। আমায় উত্তরপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মনে হয়েছিল, আমি পারব। আমি যদি সিনেমায় কাজ করতে করতে একটা ধারাবাহিকে কাজ করতে পারি, ধারাবাহিকে কাজ করতে করতে একটা শোয়ের সঞ্চালনা করতে পারি, তাহলে বিনোদনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কাজটাও করতে পারব। সত্যি বলতে, বিনোদনও তো মানুষেরই জন্য।
প্রশ্ন: নির্বাচনী প্রতিপক্ষের মা মারা যাওয়ার পর নিজে ফোন করে খবর নিয়েছিলেন। অভিনয় কি এই রাজনৈতিক সৌজন্য শিখিয়েছে?
কাঞ্চন: এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে মানবিকতা থাকাটা খুব প্রয়োজন। উনি আমার বিরোধী দলনেতা, তাঁর নীতি আলাদা হতে পারে। কিন্তু মাতৃবিয়োগ সবার কাছেই সমান কষ্টের। গত বছর জুলাই মাসে আমার মা মারা গিয়েছেন। মানবিক দিক থেকে আমার মনে হয়েছিল সমবেদনা জানানো উচিত। বললাম না, থিয়েটার, সিনেমা, রাজনীতি.. সবটাই মানুষের জন্য কাজ। মনে হয়েছিল মানুষের কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ানো উচিত।
প্রশ্ন: এতরকম রাজনৈতিক ব্যস্ততার মধ্যে অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক কেমন আছেন?
কাঞ্চন: (হাসি) অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক খুব ভালো আছেন। অভিনয় আমার অক্সিজেন। ভোটের পরে ৪ দিন 'দিদি নম্বর ওয়ান'এর শ্যুটিং করেছি। ভোটের প্রচারের মধ্যেই সময় বার করে একটা ওয়েব সিরিজের শ্যুটিং করেছি। একটা ওয়েব সিরিজের ডাবিং শেষ করেছি। এভাবেই চলবে।
প্রশ্ন: থিয়েটারের জন্য নিয়মিত রিহার্সালের প্রয়োজন। সেই সময়টা কীভাবে পাবেন?
কাঞ্চন: কেন? ব্রাত্য (বসু) নাটক করছে না? এই নিয়ে তৃতীয়বার নির্বাচনে জয়ী হল ও। মন্ত্রী থাকার সময়ও ও নাটক লিখছে, ছবি বানাচ্ছে.. কত কী করছে। ব্রাত্য কিন্তু আমার কাছে অনুপ্রেরণা। ও যদি রাজনীতি করে এত কিছু করতে পারে তাহলে আমিও ঠিক পারব। একটা সময় ছিল যখন ভেবেছিলাম নাটক করব না। কিন্তু যে একবার থিয়েটারের ড্রাগটা নিয়েছে তাকে ফিরতেই হবে। আমি নীল, ব্রাত্য সবার সঙ্গেই কাজ করেছি। হয়ে যাবে এভাবেই..ঠিক সময় বার করে নেব।
প্রশ্ন: প্রচার থেকে শুরু করে এত ছুটোছুটি করছেন এখন, মানুষের সঙ্গে মিশছেন। কোনও বিশেষ ঘটনা মনে দাগ কেটেছে?
কাঞ্চন: যখন উত্তরপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে আমার নাম ঘোষণা করা হল, সেদিনই বলেছিলাম আমি জিপে উঠে ঘুরব না। আমার মনে হয় জিপে উঠে মালা পরে ঘুরলে কোনোদিন মানুষের পাশের লোকটা হতে পারব না। দূরত্বটা রয়ে যাবে। আমি উত্তরপাড়া, কোন্নগর, হিন্দমোটর, কানাইপুর, চারিদিকে পায়ে হেঁটে ঘুরেছি। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়েছি। সকালবেলার দিকে সেই সময় প্রচণ্ড রোদ। রোজ অন্তত ৮-১০ কিলোমিটার হাঁটতাম। একদিন তেমনই মিছিল নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ একটা বাচ্চা ছেলে ছুটে এসে এক বোতল জল আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে ছুটে চলে গেল। শুনলে মনে হবে এটা খুব সামান্য ঘটনা। কিন্তু আমার কাছে এটা একটা অসামান্য প্রাপ্তি। ওই বাচ্চা ছেলেটা দল, রাজনীতি বোঝে না। ও হয়ত ভেবেছে এই লোকটাকে আমি টিভিতে দেখি। লোকটা রোদে হাঁটছে। হয়ত কষ্ট হচ্ছে। ওই এক বোতল জলটা আমার কাছে পুরস্কারের মতই ছিল। জীবনের অনেক ছোট ছোট ঘটনা অনেক বড় হয়ে থেকে যায়।
প্রশ্ন: কমেডিয়ান কাঞ্চনের হাতেই মানুষ গুরুদায়িত্ব তুলে দেবেন, এই আত্মবিশ্বাসটাই কি জয়ের চাবিকাঠি?
কাঞ্চন: আমি সংগঠন করেছি অন্যভাবে। থিয়েটারে সেক্রেটারি ছিলাম ১১ বছর। মানুষকে হাসানো সবচেয়ে কঠিন কাজ। আমি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারি। সেটা আগে অভিনয়ের মাধ্যমে ফোটাতাম। এবার কাজের মাধ্যমে ফোটাতে হবে। বড় দায়িত্ব। চ্য়ালেঞ্জ নিতে আমার কোনও অসুবিধা নেই। পৃথিবীতে কখনও কেউ সব শিখে আসেন না। সবারই একটা প্রথম দিন থাকে। আমার মাথার ওপর সাংসদ রয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। তাঁরা আমায় সাহায্য করেছেন মানুষের কাছে যেতে, তাঁদের কথা শুনতে। কখনও কোনও সমস্যা হয়নি। এখন মানুষের জন্য কিছু কাজ করে যেতে চাই কেবল।
প্রশ্ন: অভিনেতা থেকে বিধায়ক, জীবন কতটা বদলাল?
কাঞ্চন: জীবন পাল্টেছে। নাকতলায় থাকতাম। প্রথমদিন যখন উত্তরপাড়া এলাম কিচ্ছু চিনতাম না। এখন জায়গার নামগুলো রপ্ত হয়েছে। এটা একটা দ্বিতীয় বাড়ি হয়ে যাচ্ছে। এখন যেখানে বসে কথা বলছি, ভোটের সময় এটাই আমার মূল পার্টি অফিস ছিল। এখানেই থাকতাম.. স্নান করতাম, খেতাম, ঘুমাতাম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবনটা বদলে যাচ্ছে। এখানকার মানুষের পছন্দ, অপছন্দ, চাহিদা বুঝতে শিখছি। ভালো লাগছে।
প্রশ্ন: কাঞ্চনের কাছে রাজনীতির সংজ্ঞাটা ঠিক কী?
কাঞ্চন: সাধারণ মানুষ যেটা চাইছেন, কোনও ব্যক্তি বা দল যদি তাতে বিঘ্ন ঘটায়, আমায় তার প্রতিবাদ করতে হবে। আমার কাছে রাজনীতি এমন একটা মঞ্চ যেখানে দাঁড়িয়ে আমি সাধারণ মানুষের ভালো করার চেষ্টা করতে পারি, তাঁদের কথা শুনতে পারি। ব্যাস.. এটুকুই।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)