Parambrata Chatterjee: আমি অভিনেতা, আমার সঙ্গীকে বুঝতে হবে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় ও সেই পেশার মধ্যেই পড়ে: পরমব্রত
Parambrata Chatterjee on Killbill Society : 'কিলবিল সোস্যাইটি'-তে পরমব্রতর লুক সামনে আসতেই অবাক সবাই। এই প্রথমবার বড়পর্দায় পরমব্রত একেবারে মুন্ডিত মস্তক। নিজে এই লুকটার জন্য প্রস্তুত ছিলেন তিনি?

কলকাতা: হাতে একের পর এক কাজ, সামনেই নতুন ছবির মুক্তি। কিন্তু তার মধ্যেও পরিবারকে সময় দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। সেই জন্যই স্ত্রী পিয়া চক্রবর্তী (Piya Chakraborty) -কে নিয়ে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় (Parambrata Chatterjee) উড়ে গিয়েছিলেন গোয়ায়। সেখানে ছুটি কাটিয়ে ফিরেই ফের মন দিয়েছেন ছবির প্রচারে। সামনেই মুক্তি পাচ্ছে পরমব্রত ও কৌশানী মুখোপাধ্যায় (Kaushani Mukherjee) অভিনীত ছবি 'কিলবিল সোস্যাইটি' (Killbill sociaty)। সেই ছবি নিয়েই এবিপি লাইভ বাংলার সঙ্গে কথা বললেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।
বাবা হতে চলেছেন পরমব্রত, তার আগে স্ত্রীকে গিয়ে গোয়ায় একান্তে সময় কাটাতে গিয়েছিলেন। ছুটি কেমন কাটল অভিনেতার? পরমব্রত বলছেন, 'ভালই ঘুরেছি। একটু অবসরযাপন করতে গিয়েছিলাম। সেটাই করেছি।' 'হেমলক সোস্যাইটি'-র এত বছর পরে ফের 'কিলবিল সোস্যাইটি'। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের (Srijit Mukherjee)-র থেকে এই ছবির অফার পেয়ে কী মনে হয়েছিল পরমব্রতর? অভিনেতা বলছেন, 'এই অফারটা আমার কাছে একেবারে যে নতুন, এমনটা নয়। অনেকদিন থেকেই সৃজিত আর আমার মধ্যে কথা হয় হেমলক সোস্যাইটির সিক্যুয়াল নিয়ে। তবে এবার সৃজিত যখন উঠেপড়ে লেগেছিল, মনে হয়েছিল ও সিক্যুয়ালটা বানিয়েই ছাড়বে। আসলে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির একটা ঘটনা ওকে খুব অনুপ্রাণিত করেছিল। সেখান থেকেই গল্পটা শুরু।'
'কিলবিল সোস্যাইটি'-তে পরমব্রতর লুক সামনে আসতেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন অনুরাগীরা। এই প্রথমবার বড়পর্দায় পরমব্রত একেবারে মুন্ডিতমস্তক। নিজে এই লুকটার জন্য প্রস্তুত ছিলেন তিনি? পরমব্রত বলছেন, 'সৃজিত আমায় আগেই বলেছিল, একটু ভেবে নিয়ে এই ছবিটার ডেট দিতে। কারণ আমায় নেড়া হতে হবে। এটা যদি অন্য ছবি হত, আমি হয়তো সৃজিতকে বলতাম যে আমরা কি অন্যভাবে কাজটা করতে পারি না? তবে হেমলক সোস্যাইটির সিক্যুয়াল যেহেতু, আমি নেড়া হওয়া নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবিনি, ছবিটা এতই কাছের আমার।' নতুন বিয়ের পরে, এমন নেড়া হয়ে বাড়ি আসলেন, কি বলেছিলেন স্ত্রী? হাসতে হাসতে পরমব্রতর উত্তর, 'স্কুলে নেড়া হলে ছোটদের যেমন নেড়ু বলে ক্ষ্যাপানো হয়, আমাকেও তাই হয়েছিল।'
কৌশানীর সঙ্গে প্রথমবার জুটি বেঁধে অভিনয়, তার ওপর চুম্বনদৃশ্য, সহ অভিনেত্রীকে কতটা পরিণত মনে হল পরমব্রতর? অভিনেতা পরিচালক বলছেন, 'কৌশানীকে আমরা যে ধরণের ছবিতে দেকেছি, তার থেকে ও অনেকটা খোলনলচে বদলে ফেলেছে নিজের। 'আবার প্রলয়' থেকে ওর অন্য ধরণের কাজ দেখা শুরু। কৌশানী যে ভাল অভিনেত্রী, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ইন্ডাস্ট্রি এর আগে ওকে হয়তো এইভাবে চিনতেই পারেনি। একটা ধারার ছবির মধ্যে ওকে বেঁধে ফেলা হয়েছিল। কৌশানী নতুন করে নিজেকে চিনিয়েছে।' চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় নিয়ে কৌশানী প্রথমে অস্বচ্ছন্দ ছিল, কী করে সাবলীল হলেন পরমব্রতর সঙ্গে? অভিনেতা বলছেন, 'কৌশানী প্রথমটা আমার সঙ্গে সহজ হতে পারেনি। ওর বোধহয় আমায় অঙ্ক স্যরের মতো খুব গম্ভীর বলে মনে হত। আমার সঙ্গে ওর সাবলীল হতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছে। আমার স্বভাব, আমি একবার দেখে নিয়ে, নিজের মতো করে সংলাপ বলি, আর কৌশানী সংলাপ মুখস্থ করে অভ্যস্থ। আমার একবার দেখে নিয়ে লম্বা লম্বা সংলাপ বলে দেওয়া ওকে ভীষণ অবাক করত। তবে ধীরে ধীরে কাজ করতে করতে ও সাবলীল হয়ে যায়। আর চুম্বনদৃশ্যে একজন ইন্টিমেসি কোয়ার্ডিনেটর ছিল। সেই কারণে কাজ করতে সুবিধা হয়েছে।'
বিয়ের পরে প্রথম চুম্বনদৃশ্যে অভিনয়, পিয়া বিষয়টাকে সাবলীলভাবে নিয়েছিলেন? পরমব্রত বললেন, ' আমি যে পেশার সঙ্গে যুক্ত, সেই পেশায় চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে আমায় চুম্বন করতে হতেই পারে। চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে যদি চুম্বন বা শয্যাদৃশ্য থাকে, তা নিয়ে আমার কোনও ছুৎমার্গ নেই। তবে যদি চিত্রনাট্যে প্রয়োজন না থাকে, তারপরেও আমায় শয্যাদৃশ্যে অভিনয় করতে বলা হয় বা আমার সহঅভিনেত্রীকে অস্বস্তিতে ফেলেন কেউ, অবশ্যই রুখে দাঁড়াব। তবে এক্ষেত্রে তেমনটা নয়। চুম্বন দৃশ্য হবে কি না, সেটা পুরোপুরি সৃজিত আর কৌশানীর সিদ্ধান্ত ছিল। কৌশানীর প্রথমে চুম্বনদৃশ্যে একটু আপত্তি ছিল। কিন্তু আমার ছুৎমার্গ নেই বলে যে আর কারোর থাকবে না, বিষয়টা এমন নয়। কিন্তু আমি যখন এই পেশায় এসেছি, এই ছুৎমার্গগুলো ছেড়েই এসেছি। কৌশানীর ক্ষেত্রে আমি কেবল বোঝার চেষ্টা করেছি কৌশানী কতটা ঘনিষ্ঠতায় সাবলীল। উল্টোদিকের অভিনেতাকে বোঝা এইরকম দৃশ্যে সবচেয়ে বেশি জরুরি।'
পর্দায় ঘনিষ্ঠদৃশ্য পিয়ার ওপর কী কোনও প্রভাব ফেলে? পরমব্রত বলছেন, 'আমার মনে হয় না। আর আমরা প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা ভাবধারায় বিশ্বাস করি। আমি যে মুহূর্তে একজন অভিনেতা, আমি আমার সঙ্গিনীর কাছ থেকে এটা আশা করব যে তিনিও বুঝবেন, এটা আমার পেশার অন্তর্গত। সেটা নিয়ে কোনও সমস্যা থাকলে, আমার সঙ্গে সেই মানুষটার থাকতেই সমস্যা হবে। আমি এইসব দিকগুলো একেবারেই মেনে বা মানিয়ে নিতে পারি না।'
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
