Ranjit Mallick Exclusive: 'লজ্জা করত, তবু উত্তমদা বলতেন, রঞ্জিত, শট টা ঠিক আছে তো?'
ফ্লোরে কিংবদন্তিরা। তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করতে হবে, তাও আবার কেন্দ্রীয় চরিত্রে! তখন নিতান্ত অল্প বয়স তাঁর। সবে চিনতে বুঝতে শুরু করেছেন রুপোলি পর্দাকে।
কলকাতা: ফ্লোরে কিংবদন্তিরা। তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করতে হবে, তাও আবার কেন্দ্রীয় চরিত্রে! তখন নিতান্ত অল্প বয়স তাঁর। সবে চিনতে বুঝতে শুরু করেছেন রুপোলি পর্দাকে। উত্তমকুমারের (Uttarm Kumar) সঙ্গে অভিনয় করতে হবে শুনে প্রথমটা কিন্তু বেশ ভয়ই পেয়েছিলেন। কিন্তু সেটে গিয়েই সব ভয় উধাও। কোন যাদুবলে কেবল পর্দার নয়, উত্তমকুমার যেন হয়ে উঠলেন নিজের দাদা। 'মৌচাক' দিয়ে শুরু করে আরও বেশ কয়েকটি ছবিতে মহানায়কের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তিনি। এবিপি লাইভের আড্ডায় স্বর্ণযুগের স্মৃতি ফিরে দেখলেন রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallick)।
প্রথমবার উত্তমকুমারের সঙ্গে কাজ করেছিলেন 'মৌচাক' ছবিতে। কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা? রঞ্জিত মল্লিক বলছেন, 'প্রথমটা একটু ভয় পেয়েছিলাম। এত বড় অভিনেতার সঙ্গে কাজ করব! কিন্তু উত্তমকুমার এত ভদ্রলোক.. প্রথমেই ভয়টা কাটিয়ে নিলেন যাতে অভিনয় করতে কোনও সমস্যা না হয়। একেবারে দাদা-ভাইয়ের মতো সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল ওনার সঙ্গে। আমার অভিনয়ের কোনও প্রথাগত শিক্ষা ছিল না। ভালো ভালো অভিনেতা অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজ করে নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করতাম। শট না থাকলে অনেকেই ফ্লোর ছেড়ে চলে যেতেন। কিন্তু উত্তমদার শট থাকলে আমি ফ্লোরে বসে থাকতাম। ওঁর অভিনয় দেখতাম। উত্তমকুমার অসম্ভব খুঁতখুতে। একটা অসাধারণ শট দিয়েও কখনও সন্তুষ্ট থাকতেন না। কেবল পরিচালক নয়, ক্যামেরা ম্যান থেকে শুরু করে জুনিয়রদেরও প্রশ্ন করতেন, শটটা ঠিক আছে কি না। আমি ওঁর তুলনায় কিছুই নয়, তবু আমায় শট দেওয়ার পর প্রশ্ন করতেন, রঞ্জিত শটটা ঠিক আছে তো? ভীষণ লজ্জা লাগত। মনে মনে বলতাম, আমি তোমায় কী করে বিচার করব উত্তমদা! আমার সেই ক্ষমতাই নেই।'
আরও পড়ুন: 'রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে কোয়েল বলে দর্শক প্রথম ছবিটা দেখবে, তারপর আর নয়'
একবার থামলেন রঞ্জিত মল্লিক। তারপর বললেন, 'এত বছর পেরিয়েও যে উত্তমদা সবার মনে মহানায়ক হয়ে বসে রয়েছেন তা এমনি এমনি নয়। ওঁর ওই খুঁতখুতে স্বভাব আর কাজের প্রতি অসম্ভব নিষ্ঠাই ওঁকে মহানায়কের জায়গা দিয়েছে। আর সেই নিষ্ঠা আমি চোখের সামনে দেখেছি।'