এক্সপ্লোর

ABP Exclusive: 'কালকক্ষ' বাস্তবকে তুলে ধরবে, মানুষ একাত্ম হতে পারবেন: তন্নিষ্ঠা

Tannishtha Biswas Exclusive: 'আমি কখনওই শিল্পী হিসেবে মনে করি না যে নামটাই দর্শকের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের একমাত্র উপায় হতে পারে। একটা সিনেমা শুধু একটা নামের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে না।'

কলকাতা:দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। অবশেষে মুক্তি পেতে চলেছে 'কালকক্ষ (হাউস অফ টাইম)'(Kalkokkho)। অঞ্জন বসু নিবেদিত, শর্মিষ্ঠা মাইতি রাজদীপ পাল পরিচালিত, অরোরা ফিল্ম কর্পোরেশনের আসন্ন ছবি 'কালকক্ষ' (হাউস অফ টাইম) ঘিরে বাংলা সিনে প্রেমীদের উদ্দীপনা বহুদিনের! একাধিক চলচ্চিত্র উৎসব ঘুরে এসে, ১৯ অগাস্ট ছবি মুক্তির আগে এবিপি লাইভকে একান্ত সাক্ষাৎকার (Exclusive Interview) দিলেন ছবির অন্যতম মুখ্য অভিনেত্রী তন্নিষ্ঠা বিশ্বাস (Tannishtha Biswas)।

প্রশ্ন: এতগুলো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সম্মানিত হয়েছে 'কালকক্ষ'। প্রথমেই জিজ্ঞেস করব কেমন লাগছে?
তন্নিষ্ঠা বিশ্বাস: ভীষণ এক্সাইটেড আমি। অবশেষে ছবিটা যে মুক্তি পাচ্ছে। যেভাবে বাইরের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে আমাদের ছবি প্রশংসিত হয়েছে সেভাবে এখানেও চিহ্নিত হওয়ার একটা ইচ্ছে ও আশা আছে। একইসঙ্গে যেহেতু এই ছবিতে সেরকম কমার্শিয়াল উপাদান নেই, একদম অন্যভাবে ছবিটা বানানো। তাই মানুষ কীভাবে গ্রহণ করবেন জানি না। তবে কনটেন্টটা, আমার মনে হয়েছে খুব প্রয়োজনীয় এবং খুব একাত্ম বোধ করা যাবে। তাই আমি একেবারে মিশ্র অনুভূতি নিয়ে রয়েছি। কীভাবে মানুষ গ্রহণ করবেন সেটা ভাবছি, তবে উত্তেজিত তো বটেই।

প্রশ্ন: আপনার কথার রেশ টেনেই বলছি, কনটেন্ট অন্যরকমের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির তথাকথিত বড় নাম কোনও নেই ছবিতে। সেটাও কি চিন্তার জায়গা?
তন্নিষ্ঠা: আমি না কখনওই শিল্পী হিসেবে মনে করি না যে নামটাই দর্শকের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের একমাত্র উপায় হতে পারে। একটা সিনেমা শুধু একটা নামের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে না। সিনেমা ভাল হলে নাম এমনিই হয়। ছবির কনটেন্ট, গোটা ছবির উপস্থাপনা এবং যেভাবে অভিনেতারা পারফর্ম করেছেন, পরিচালক যেভাবে ছবিটাকে বেঁধে এগিয়ে নিয়ে গেছেন সবটা নিয়েই তো একটা সিনেমা তৈরি হয়। আমি মনে করি, দর্শক আজকের দিনে দাঁড়িয়েও কনটেন্ট ও পারফর্ম্যান্সের ওপরেই বেশি জোর দেন। সেই দিক থেকে আমি আত্মবিশ্বাসী যে তাঁদের ছবির বিষয়বস্তু নিঃসন্দেহে ভাল লাগবে। 

প্রশ্ন: চরিত্রটির অফার কীভাবে আসে?
তন্নিষ্ঠা: আমি আসলে রাজদীপ দা ও শর্মিষ্ঠা দির (পরিচালকদ্বয় রাজদীপ পাল ও শর্মিষ্ঠা মাইতি) সঙ্গে অন্য একটা প্রজেক্ট নিয়ে বসেছিলাম। তারপর অতিমারী আর লকডাউনে সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তার মাস তিনেক পরে যখন সকলে ঘরবন্দি সেই সময়ে আমার কাছে 'কালকক্ষ' ছবির অফার আসে। এরপর স্ক্রিপ্ট রিডিংয়ে গল্প শুনে ভীষণ ভাল লাগে। আমার একজন শ্রোতা হিসেবে গল্পটা শুনে প্রথম মনে হয়েছিল যে এটা ভীষণ আমাদের গল্প। প্যান্ডেমিককে নিয়ে একটা গল্প। সত্যিই তো আমরা তখন জানতাম না যে আগামী দিনে কী হবে! পৃথিবীর অবস্থা বা আমার আশেপাশের অবস্থা কেমন হবে কিছুই জানতাম না। এই আশঙ্কাটাকেই নানা অভিব্যক্তির মাধ্যমে গল্পে তুলে ধরা হয়েছে। এবার দেখা যাক। আমরা তো খুব নিখুঁতভাবে ওয়ার্কশপ করে, কোভিড প্রোটোকল মেনে কাজটা করেছি। বাকিটা দর্শকের ওপর।

প্রশ্ন: কীভাবে নিজেকে তৈরি করেছিলেন?
তন্নিষ্ঠা: আমার চরিত্রের 'লাইন অফ অ্যাক্টিং'টা একটু আলাদা। আমি কখনওই গতে বাঁধা পদ্ধতিতে অভিনয় করি না। আমার সবসময় মনে হয় একজন অভিনেতার বহুমুখী প্রতিভা থাকতে হয়। যাঁকে সবরকম চরিত্রে বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে। এই চরিত্রটার জন্য পরিচালকদ্বয়ের সঙ্গে আলোচনা করে অনেক শিখেছি। আমার চরিত্রটা ভীষণ জটিল। আমাকে সারাক্ষণ ওই চরিত্রের মধ্যে থেকে ওর সাইকোলজিটাকে অনুসরণ করতে হয়েছে। এই ছবির চরিত্রগুলির গঠন অন্যান্য সিনেমার থেকে অনেক আলাদা, সেটা দেখলেই বুঝতে পারবেন। মানে সাধারণভাবে মানুষকে বোঝা কঠিন হয় কিন্তু তাও তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য একটা রেখায় চলে, যে সুতোয় চরিত্রটাকে বাঁধা যায়। আমার চরিত্রটার ক্ষেত্রে সেই একটা সুতো ছিল না। এই চরিত্রটা কখনও ভীষণ অভদ্র, বদমেজাজী, কখনও খুব ভীত আবার কখনও খুব অসহায়। এতগুলো স্তর রয়েছে চরিত্রটার। আমি ভীষণ উপভোগ করেছি চরিত্রটা।

প্রশ্ন: আপনার লকডাউনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে সিনেমার চরিত্রটার কতটা মিল পেয়েছিলেন?
তন্নিষ্ঠা: অনেকটা। মানে গল্পটা যেহেতু অতিমারীকে ঘিরে। এবং আমার চরিত্রটা ভীষণ প্যানিক করতে থাকে যে বাড়িতে বয়স্ক মা ও মেয়ের কে যত্ন নেবে! আর সেই কারণে যদি একজন ডাক্তারকে নিয়ে এসে বাড়িতে রাখি। সে রক্ষা করবে। এই যে প্যানিক করা বা ভয় পাওয়া, সেটা তো বোধ হয় আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই হয়েছে। কারণ বেশি, কারও কম। কিন্তু এই অনুভূতির মধ্যে দিয়ে আমরা প্রত্যেকে গিয়েছি। মানে ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে বিনোদন দুনিয়ার কর্মী হিসেবে আমি জানতাম না লকডাউনের পরে আমার কোথায় স্থান হবে। আর চারিদিকে তখন এত খারাপ খবর। এত প্রিয়জন, পরিবার পরিজন চিরতরে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। সর্বক্ষণ মনে হওয়া তাহলে আমারও কি এটাই পরিণতি! আর এইসব থেকে যে ভয়, আশঙ্কা থেকে ডিপ্রেশন, মন খারাপ। এই যে প্রত্যেকদিন একইরকম। আগের দিনের সঙ্গে পরের দিনের কোনও পার্থক্য নেই। যেন একটা লুপে জীবন কাটছে। সেই কনসেপ্ট থেকেই এই ছবি। ফলে খুবই রিলেট করতে পেরেছি। আমারও তো সেই একঘেয়ে জীবন, কিছু করার নেই, হতাশা, সবকিছুর মধ্যে দিয়ে আমিও গিয়েছি লকডাউনে।

আরও পড়ুন: Bonny Kaushani: শ্যুটিং থেকে ছুটি নিয়ে দুবাই সফরে বনি-কৌশানী, সময় কাটাচ্ছেন কার্টুন চরিত্রদের সঙ্গে!

প্রশ্ন: লকডাউনে যে এই এত মানসিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে আমরা অনেকেই গেছি। কীভাবে সেটাকে সামলাতেন?
তন্নিষ্ঠা: আমি মনে করি 'সেল্ফ মোটিভেশন' অর্থাৎ নিজেকে নিজে অনুপ্রাণিত করা শ্রেষ্ঠ উপায়। নিজেকে মোটিভেটেড ও পজিটিভ ভাইবে মুড়ে রাখাই প্রয়োজন। নিজেকে যত নেতিবাচকতায় মুড়িয়ে রাখব তত নতুন কাজ করার তাগিদটাই হারিয়ে যাবে। আমি প্রচুর সিনেমা, গল্পের বই, উপন্যাস নিয়ে থেকেছি। মনটাকে সবসময়ে সক্রিয় রেখেছি। আমার মনে হয় প্রত্যেক মানুষের সেটা করা উচিত।

প্রশ্ন: দর্শককে কেন এই সিনেমাটা দেখতে বলবেন?
তন্নিষ্ঠা: প্রধান কারণ এই ছবির যে দর্শন। সময়কে কি আমরা আদৌ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি নাকি সময় আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন আমরা সকলে যে যার নিজের নিজের ইঁদুর দৌড়ে দৌড়চ্ছি। কিন্তু তার মাঝে এই লকডাউন। সবকিছু যে এমন থমকে যেতে পারে সেই অভিজ্ঞতা তো আমাদের কারোরই ছিল না। এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা। এই সবকিছুর মধ্যে দিয়ে মানুষ গেছেন। আর তা মানুষের কাছে চিরস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে বলে মনে করি। কেউ কেউ লকডাউনটা অনেক পজিটিভ ভাবেও কাটিয়েছেন। অনেকে দুঃস্বপ্নের মতো। কিন্তু এই যে গোটা অভিজ্ঞতাটা বিভিন্ন উপাদান দ্বারা এই ছবিতে দেখানো হয়েছে। এবং সর্বোপরি সবশেষে বার্তাটা দিচ্ছে এই ছবি যে, ভয়টাই কি সব নাকি ভয়কে জয় করা যায়? এবং সেটা কীভাবে? তাছাড়া এই সময়ের আবর্তে মানুষ দিন কাটাচ্ছে সেখান থেকে উত্তরণের পথ কী? 

অনেকেই আমাকে ট্রেলার দেখে প্রশ্ন করেছেন যে এটা হরর ছবি কি না। বা থ্রিলার কি না। আমি বলব এই ছবিটা ভীষণভাবে ভালবাসার কথা বলে। মানুষ খুবই একাত্ম বোধ করতে পারবেন এই ছবির সঙ্গে, কারণ বাস্তব চিত্রটাকে তুলে ধরা হয়েছে।

আরও দেখুন
Advertisement
Advertisement
Advertisement

সেরা শিরোনাম

Jalpaiguri News: দ্বিতীয়ায় হকার উচ্ছেদ অভিযান, 'কেন বারবার এই অত্যাচার ?', লাঠির আঘাত, আটক ব্যবসায়ী
দ্বিতীয়ায় হকার উচ্ছেদ অভিযান, 'কেন বারবার এই অত্যাচার ?', লাঠির আঘাত, আটক ব্যবসায়ী
Delhi Doctor Murder Update : ‘খুন করতে পারলে মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেব’, দিল্লির ডাক্তারকে খুন করার সুপারি দিয়েছিল নার্সের স্বামী !
স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ, দিল্লির ডাক্তারকে খুন করার সুপারি দিয়েছিল নার্সের স্বামী !
New Star in Sky: রাতের আকাশে এবার নয়া নক্ষত্র, টেক্কা দেবে ধ্রুবতারাকেও
রাতের আকাশে এবার নয়া নক্ষত্র, টেক্কা দেবে ধ্রুবতারাকেও
Posthumous Reproduction: ক্যান্সার কেড়ে নিয়েছে তরতাজা ছেলেকে, সারোগেসিতে সন্তানের শুক্রাণু ব্যবহারে মা-বাবাকে অনুমতি দিল আদালত
ক্যান্সার কেড়ে নিয়েছে তরতাজা ছেলেকে, সারোগেসিতে সন্তানের শুক্রাণু ব্যবহারে মা-বাবাকে অনুমতি দিল আদালত
Advertisement
ABP Premium

ভিডিও

SSKM Hospital: নতুন সাফল্য পেল SSKM | এই প্রথম সরকারি হাসপাতালে IVF পদ্ধতিতে কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন মহিলা | ABP Ananda LIVEJaynagar: আমরা পুলিশের অপরাধমূলক অবহেলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি', মন্তব্য প্রাক্তন SUCI বিধায়কের।RG Kar Protest: দোষী সাব্যস্ত ইন্টার্নরা হস্টেলে থাকতে পারবেন না, সিদ্ধান্ত কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে | ABP Ananda LIVERG Kar Protest: পুজোর মধ্যেই আমরণ অনশনে জুনিয়র ডাক্তাররা, প্রথম দফায় আমরণ অনশনে ৬জন জুনিয়র ডাক্তাররা | ABP Ananda LIVE

ফটো গ্যালারি

ব্যক্তিগত কর্নার

সেরা প্রতিবেদন
সেরা রিল
Jalpaiguri News: দ্বিতীয়ায় হকার উচ্ছেদ অভিযান, 'কেন বারবার এই অত্যাচার ?', লাঠির আঘাত, আটক ব্যবসায়ী
দ্বিতীয়ায় হকার উচ্ছেদ অভিযান, 'কেন বারবার এই অত্যাচার ?', লাঠির আঘাত, আটক ব্যবসায়ী
Delhi Doctor Murder Update : ‘খুন করতে পারলে মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেব’, দিল্লির ডাক্তারকে খুন করার সুপারি দিয়েছিল নার্সের স্বামী !
স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ, দিল্লির ডাক্তারকে খুন করার সুপারি দিয়েছিল নার্সের স্বামী !
New Star in Sky: রাতের আকাশে এবার নয়া নক্ষত্র, টেক্কা দেবে ধ্রুবতারাকেও
রাতের আকাশে এবার নয়া নক্ষত্র, টেক্কা দেবে ধ্রুবতারাকেও
Posthumous Reproduction: ক্যান্সার কেড়ে নিয়েছে তরতাজা ছেলেকে, সারোগেসিতে সন্তানের শুক্রাণু ব্যবহারে মা-বাবাকে অনুমতি দিল আদালত
ক্যান্সার কেড়ে নিয়েছে তরতাজা ছেলেকে, সারোগেসিতে সন্তানের শুক্রাণু ব্যবহারে মা-বাবাকে অনুমতি দিল আদালত
Madhabi Puri Buch: ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার্থে পক্ষপাতিত্ব? আদানিদের বিরুদ্ধে তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ, SEBI প্রধানকে তলব করল PAC
ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার্থে পক্ষপাতিত্ব? আদানিদের বিরুদ্ধে তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ, SEBI প্রধানকে তলব করল PAC
Malda News: গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে জমি, ফের নদী ভাঙন মালদায়, আতঙ্কে স্থানীয়রা
গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে জমি, ফের নদী ভাঙন মালদায়, আতঙ্কে স্থানীয়রা
Junior Doctors Protest: ঘড়ি হাতে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা, কেন ঘড়ি ? কী জানালেন তাঁরা
ঘড়ি হাতে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা, কেন ঘড়ি ? কী জানালেন তাঁরা
RG Kar Case : 'দুর্গাপুজো? সে তো অনেক খরচ' ! মেয়ে বলেছিল, 'সব পারব মা', ঘরভরা শূন্যতার মাঝে ডুকরে উঠলেন মা
ঠাকুরঘরে মা দুর্গার শাড়ি, এবারও বায়না হয়ে গিয়েছিল ঢাকির, এখন শুধুই ঘরভরা শূন্যতা-হাহাকার
Embed widget