Guillain Barre Syndrome: স্নায়ুর বিরল রোগ Guillain Barre Syndrome, এই GBS আসলে কী? কতটা ভয়ঙ্কর?
Rare Nerve Disorder: এইমসের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান ডক্টর মঞ্জরী ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, গুলেন বারি সিনড্রোম একটি জটিল রোগ এবং আচমকাই হানা দেয়।

Guillain Barre Syndrome: গুলেন বারি সিনড্রোম- স্নায়ুর এক বিরল রোগ। ক্রমশ ভারতে ছড়াচ্ছে এই স্নায়বিক রোগ। মহারাষ্ট্রের পুণেতে প্রভাব সবচেয়ে মারাত্মক। আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ পেরিয়েছে। এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গিয়েছে। শুধু পুণে নয়, মহারাষ্ট্রের অন্যান্য জেলাতেও এই বিরল স্নায়বিক রোগে আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গিয়েছে ইতিমধ্যেই। গুলেন বারি সিনড্রোমে আক্রান্ত হলে যে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে সেই অনুমান আগেই করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
এই গুলেন বারি সিনড্রোম বা জিবিএস আসলে কী
গুলেন বারি সিনড্রোম বা জিবিএস- এর ক্ষেত্রে মূলত ব্যাকটেরিয়াল বা ভাইরাল ইনফেকশন দেখা যায় যা মারাত্মক আকারে প্রভাব ফেলে আমাদের স্নায়ুতন্ত্রে। যাঁরা জিবিএস- এ আক্রান্ত হন, তাঁদের ক্ষেত্রে ভুলবশত ইমিউন সিস্টেম আক্রমণ করে স্নায়ুতন্ত্রকে। মস্তিষ্ক এবং শিরদাঁড়ার বাইরে থাকা ভাল, স্বাস্থ্যকর স্নায়ুগুলিকে আক্রমণ করে ইমিউন সিস্টেম। প্রথমে দুর্বলতা দেখা দেয় আক্রান্তের শরীরে। পরবর্তীতে প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাত এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
এইমসের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান ডক্টর মঞ্জরী ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, গুলেন বারি সিনড্রোম একটি জটিল রোগ এবং আচমকাই হানা দেয়। আক্রান্ত ব্যক্তিরা কয়েক সপ্তাহ ধরে ছোটখাটো সংক্রমণে ভুগতে পারেন। সাধারণ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইনফেকশন দেখা দেয় জিবিএস আক্রান্ত রোগীর শরীরে। কম্পাইলোব্যাক্টরের কারণে হয় এই সমস্ত সংক্রমণ, যার কারণে হতে পারে ডায়েরিয়া। ডক্টর ত্রিপাঠীর কথায়, যেকোনও সাধারণ, ছোট ইনফেকশনও এই রোগে পরিণত হতে পারে। শুরুটা হয় ডায়েরিয়া দিয়েই। এর পাশাপাশি এইমএসের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান ডক্টর মঞ্জরী ত্রিপাঠী আরও বলেছেন যে, জিবিএস বা গুলেন বারি সিনড্রোমের ক্ষেত্রে প্যারালিসিস বা পক্ষাঘাত হতে পারে আক্রান্তের। প্রথমে পায়েই হবে প্যারালিসিস। তারপর দেখা দেবে শ্বাসকষ্টের সমস্যা। রোগীকে ভেন্টিলেটরের সাপোর্টেও রাখতে হয়।
অন্যদিকে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ভাইরোলজি (এনআইভি) - রিপোর্টে বলা হয়েছে ২১টি জিবিএস নমুনায় তারা norovirus এবং Campylobacter jejuni ব্যাকটেরিয়ার হদিশ পেয়েছে। Campylobacter jejuni এবং norovirus (a family of viruses)- এই দুইয়ের কারণে গা-গোলানো, বমি ভাব এবং ডায়েরিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। পুণের অনেক রোগীর মধ্যেই সম্পূর্ণ ভাবে জিবিএস দেখা দেওয়ার আগে, উল্লিখিত লক্ষণগুলিই দেখা গিয়েছিল।
সিনিয়র নিউরোলজিস্ট (পুণের একটি হাসপাতালের) ডক্টর অংশু রোহাতগি জানিয়েছেন, norovirus - এর কারণে জিবিএস, যা একটি বিরল স্নায়বিক রোগ, তা এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যেতে পারে। ডক্টর রোহাতগি আরও বলেছেন যে, নন-ব্যাকটেরিয়াল যে সমস্ত গ্যাস্টোএন্টেরাইটিস সংক্রমণ দেখা যায়, তার বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই দায়ী হল এই norovirus। এক্ষেত্রে উপসর্গও থাকে গ্যাস্ট্রোইন্টেসটিনাল সমস্যার মতো, যেমন- গা-গোলানো, বমি ভাব, ডায়েরিয়া। জিবিএস হওয়ার আগে এইসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে। ডক্টর রোহাতগির কথায়, জিবিএস প্রাণনাশের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে সমস্ত বয়সীদের ক্ষেত্রেই। মা এবং বাচ্চার জন্য এর আলাদা করে কোনও বিশেষ প্রবণতা নেই।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, এই রোগের কোনও প্রতিকার নেই। আর লক্ষণগুলি যেমন- দুর্বলতা, সাড় অনুভূত না হওয়া কিংবা হঠাৎ করেই মনে হওয়া যেন পিন ফুটছে, জ্বালা করছে, ঝনঝন করছে (tingling sensation) - উপসর্গগুলি প্রথমে পায়ে দেখা যায়। তারপর তা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে শরীরের উপরের অংশে। দুই পায়ের থেকে এইসব লক্ষণ ছড়িয়ে পড়তে পারে দুই হাতেও। তবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। জিবিএস- এর উপসর্গগুলি কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থায়ী হয়। বেশিরভাগ আক্রান্তই সম্পূর্ণ ভাবে সুস্থ হয়ে যান। তবে কিছু রোগীর মধ্যে রোগের প্রভাব থেকে যায়।
তথ্যসূত্র- আইএএনএস
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )






















