Skydiving: মাঝ আকাশে রোমাঞ্চের স্বাদ, চেখে দেখবেন নাকি?
Skydiving in India: সাধারণত স্কাইডাইভিং অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের গোত্রে পড়ে। প্রতিযোগিতামূলক ভাবে অনেকেই এতে অংশগ্রহণ করেন। পাশাপাশি দেশে-বিদেশে নানা জায়গায় পর্যটনেও জুড়েছে এই অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস।
কলকাতা : মাটি থেকে দাঁড়িয়ে আকাশে উড়ে যাওয়া বিমান দেখেননি এমন হয়তো কেউ নেই। অনেকে বিমানে যাতায়াতও করেছেন। মনে করুন, মাঝ আকাশে অত উঁচু থেকে যদি লাফ দিতে পারতেন? না না, আঁতকে উঠবে না। আমার-আপনার এমন ইচ্ছে না হলেও অনেকেই কিন্তু মনে মনে এমন ইচ্ছে রাখেন। টিভির পর্দায়, সিনেমার পর্দায় অনেকসময়ই এই দৃশ্য দেখা যায়। বিমান থেকে প্যারাশুট বেঁধে ঝাঁপ দিচ্ছে এক বা একসঙ্গে অনেকে। তারপর হাওয়ায় ভেসে নীচে নামতে নামতেই খুলে যাচ্ছে প্যারাশুট। তারপর পাখির মতো ভেসে আলতো করে মাটি ছোঁয়া। এই গোটা বিষয়টির একটি গালভরা নাম রয়েছে, স্কাইডাইভিং (skydiving)। অনেকে একে প্যারাশুটিংও (parachuting) বলে থাকেন।
সাধারণত স্কাইডাইভিং অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের গোত্রে পড়ে। প্রতিযোগিতামূলক ভাবে অনেকেই এতে অংশগ্রহণ করেন। পাশাপাশি দেশে-বিদেশে নানা জায়গায় পর্যটনেও জুড়েছে এই অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস।
ইতিহাসের খোঁজে
আজ নয়। স্কাইডাইভিংয়ের শুরুটা বহু পুরনো। ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে। ফ্রান্সে হট এয়ার বেলুন থেকে ঝাঁপ দিয়ে হয়েছিল শুরুটা। এখন অবশ্য তেমন হয় না। বিমান বা উঁচু কোনও জায়গা থেকে ঝাঁপ দেন স্কাইডাইভার।
রোমাঞ্চের রকমফের
সাধারণত তিন ধরনের স্কাইডাইভিং কৌশল রয়েছে। সেগুলি কী কী?
১. ট্যান্ডেম জাম্প (tandem jump): তুলনামূলক সহজ পদ্ধতি। একজন প্রশিক্ষকের সঙ্গে বাঁধা থাকবেন আপনি। একটাই প্যারাশুটে থাকবে। তার দড়ি থাকবে প্রশিক্ষকের হাতে।
২. স্ট্যাটিক লাইন জাম্প (static line jump): বিমানের সঙ্গে একটি শক্তপোক্ত দড়ি দিয়ে বাঁধা থাকবেন আপনি। বিমান থেকে লাফ দেওয়ার নির্দিষ্ট সময় পরে প্যারাশুট খুলবে নিজে থেকে। এই ধরনের লাফে বেশ কিছু সতর্কতা রয়েছে।
৩. অ্যাক্সেলারেটেড ফ্রি ফল (accelerated free fall): দুর্বলচিত্তের কারও জন্য এটা নয়। বেশ কঠিন প্রক্রিয়া। সঙ্গে কেউ থাকবে না। বিমানের সঙ্গে দড়িও বাঁধা থাকবে না। খুব ভাল প্রশিক্ষণ ছাড়া এমনটা করা বিপজ্জনক।
মাঝ আকাশে পর্যটন
অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের হাত ধরে এখন যথেষ্ট জনপ্রিয় স্কাইডাইভিং। বিশেষ সুরক্ষা প্রক্রিয়া মেনে অনেক সংস্থাই করিয়ে থাকে এটি। ভারতেও নানা জায়গায় মিলবে দুরন্ত এই অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ
অ্যাম্বে ভ্যালি, মহারাষ্ট্র: এক একদিন এক একরকম খরচ। একবারের জন্য খরচ পড়তে পারে ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা
মাইসোর, কর্নাটক: স্কাইডাইভিংয়ের রকমফের অনুযায়ী মাথাপিছু খরচ হতে পারে ২৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা
পন্ডিচেরি, তামিলনাড়ু: এখানে খরচের বহর অনেকটাই বাড়তে পারে। কুড়ি হাজার থেকে ৬২ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
দিসা, গুজরাত: বিভিন্ন ধরনের স্কাইডাইডিংয়ের সুযোগ রয়েছে এখানে। ১৬ হাজার টাকা থেকে ৩৭ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ
হায়দরাবাদ, তেলেঙ্গানা: ২০ হাজার টাকার আশেপাশে মাথাপিছু খরচ। লাফ দেওয়ার মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করার সুযোগও রয়েছে। তার জন্য অবশ্য লাগবে অতিরিক্ত অর্থ।
আলিগড়, উত্তরপ্রদেশ: এখানেও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের লাফের সুযোগ। ২৭ হাজার টাকা থেকে প্রায় ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত মাথাপিছু খরচ হতে পারে
বীর বিলিং, হিমাচল প্রদেশ: এখানেও খরচ বাকি জায়গাগুলির মতোই
নারনাউল, হরিয়ানা: ট্যান্ডেম এবং স্ট্যাটিক লাইন জাম্প--এই দুধরনের জন্য আলাদা খরচ। ১৮ হাজার থেকে প্রায় ২৭ হাজার টাকা পর্যন্ত মাথাপিছু খরচ।
সুযোগ রয়েছে মধ্যপ্রদেশেও
কী কী নজরে থাকবে
আরামপ্রদ জামাকাপড় পড়বেন
অত উঁচুতে অল্প শ্বাসকষ্ট হতেও পারে, আতঙ্কিত হবেন না
স্কাইডাইভিংয়ের আগে কোনওরকম নেশাদ্রব্য খাওয়া বা পান করা চলবে না
ওজন এবং আরও যা যা শর্তাবলী থাকবে সেগুলি পূরণ করতে হবে
প্রশিক্ষকের কথা অক্ষরে অক্ষরে শুনবেন
হৃদযন্ত্রের সমস্যা থাকলে স্কাইডাইভিং নৈব নৈব চ
ভার্টিগো থাকলে এটা করা উচিত নয়
শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকলে সম্ভব হলে বিরত থাকুন
প্রয়োজনে আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরেই স্কাইডাইভিং করুন
আর অপেক্ষা কেন? যদি ইচ্ছে হয় এখনই বেরিয়ে পড়ুন মাঝ আকাশে রোমাঞ্চের খোঁজে।