এক্সপ্লোর

ঘুরে আসি : এল ডোরাডোয় কয়েকদিন

“কাল আমরা যাব এল ডোরাডো দেখতে !” ট্যুর অপারেটরের কথায় চমকে উঠলাম। লোকটা বলে কি ? পাগল না পেট খারাপ। ডিসেম্বরের ঠান্ডায় নির্ঘাৎ মাথার ঘিলু জমে গেছে। না হলে মাথার কেমিক্যাল লোচা। 

 সুব্রত মুখোপাধ্যায় : এল ডোরাডো, হারিয়ে যাওয়া সেই “সোনার শহর”। তা কি না ভারতে ? এমন আষাঢ়ে গল্প ডিসেম্বরে ! হজম করা কঠিন।  স্প্যানিশ দখলদারদের থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বহু অনুসন্ধানীদের মন্ত্রমুগ্ধের মত আকর্ষণ করেছে যে এল ডোরাডো,  তা কিনা ঘরের দুয়ারে। দুয়ারে “এল ডোরাডো”  প্রকল্প নাকি ?

আমাদের জিজ্ঞাসা চিহ্ন হয়ে আসা চোখের মণির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন ট্যুর অপারেটর। “অপেক্ষা করুন কাল বিকেল পর্যন্ত, নিজের চোখেই দেখতে পাবেন।“ আশ্বাস দিলেন তিনি। “ঠকবেন না, কথা দিচ্ছি।“

“আর হ্যাঁ, কাল আমরা রওনা হব সকাল সকাল, প্রায় ঘন্টা আটেক জার্নি। রাস্তায় লাঞ্চ করব।“ ডিনার শেষে আমাদের দ্বন্দ্ব সমাসে রেখে রাতে  তিনি বিদায় নিলেন। 

বছর শেষে ডিসেম্বরে সপরিবারে লম্বা ট্যুরে বেরিয়েছি। সঙ্গী প্রায় গোটা কুড়ি ফ্যামিলি। বিরাট টিম। যেখানে যাচ্ছি পুরো হোটেল বুক করে থাকছি। দুরন্ত শীতে অনবদ্য ভ্রমণ।

ভোর ভোর লটবহর নিয়ে হোটেল ছাড়লাম। এখানে সকালে বেশ ঠান্ডা।  আর হবেই বা না কেন, ডিসেম্বরের শেষ।  ঠান্ডা তো পড়ারই কথা।  যাত্রাপথও দীর্ঘ সময়ের।  যাত্রাপথে ঠান্ডা লাগবে মনে করে গায়ে চাপিয়ে নিয়েছি যথেষ্ট শীত পোশাক।  কিন্তু ঘন্টাখানেক গাড়িতে চলার পরেই একে একে খসতে লাগলো শীত পোশাকের বোঝা।  বেশ গরম বাইরে। শীতের রোদের তাপ বেড়েছে।  আমাদের যাত্রী বোঝাই বাস ছুটে চলেছে মসৃণ ঝকঝকে জাতীয় সড়ক ধরে।  ব্রেকফাস্ট পরে পথের উত্তাপ এতটাই বেড়ে গেল যে বাসের এসি চালাতে বাধ্য হলাম।  শেষ ডিসেম্বরে যেখানে কলকাতায় দিনের বেলাতেই গায়ে চাদর সোয়েটার চাপিয়ে চলতে হয়, সেখানে আমাদের চলছে এসি।  দীর্ঘ যাত্রার মাঝেমধ্যে বিরতিতে চা টয়লেট। রাস্তার পাশের ধাবায় দাঁড়াচ্ছিলাম। 

ষোল এবং সতের শতকের দিকে ইউরোপীয়রা বিশ্বাস করত যে দক্ষিণ আমেরিকার কোন  একটা অংশে লুকিয়ে আছে সোনায় মোড়ানো একটি শহর যার নাম এল ডোরাডো। সেই সোনার শহরের স্বপ্নে বিভোর হয়ে বহু অভিযাত্রী দল দক্ষিণ আমেরিকার রেইন ফরেস্ট এবং পার্বত্য অঞ্চল সমূহে ব্যর্থ অভিযান চালিয়ে আসছে কিন্তু এই সোনার সন্ধান আজও মেলেনি।  এল ডোরাডো অভিযানের পেছনে রয়েছে সোনার প্রতি মানুষের এক অদম্য লোভ। শত শত বছর ধরে ধনরত্নের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা থেকেই জন্ম নিয়েছে কাল্পনিক সেই সোনার শহরের গল্প।

এল ডোরাডো মিথের  উৎপত্তির কাহিনী মূলত দক্ষিণ আমেরিকার কলম্বিয়ায় বসবাসকারী মুইসকা (Muiska) সম্প্রদায় এর সঙ্গে জড়িত। ‘এল ডোরাডো’ শব্দটি স্প্যানিশ, যার অর্থ ‘স্বর্ণের তৈরি’ । মূলত, স্প্যানিশরা ‘এল হমব্রে ডোরাডো’ বা সোনায় খচিত মানুষ বা ‘এল রেই ডোরাডো’ ,সোনায় খচিত রাজা, এই শব্দগুলো ব্যবহার করত একটা প্রাচীন উপজাতি, কলম্বিয়ার ‘মুইসকা’ জাতির প্রধান ‘জিপা’-কে নির্দেশ করতে। প্রচলিত কাহিনী অনুসারে, ‘মুইসকা’-রা রাজ্যাভিষেক এর সময় নতুন রাজা কে সোনাদানায় সজ্জিত করে নিয়ে যেত গুয়াতাভিতা নামক একটি হ্রদের কাছে। রাজা সেই হ্রদে ডুব দিয়ে তার শরীরে জড়ানো সোনা দানা বিসর্জন দিত সূর্য দেবতাকে খুশি করতে। আর সেই থেকেই এসেছে ‘এল ডোরাডো’ লোককথা। ‘এল ডোরাডো’-কে নিয়ে লোককথা সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয় ; এটা শুরু হয় একটা সোনায় মোড়ানো মানুষ দিয়ে, তারপর সোনার শহর , সোনার রাজ্য হয়ে পরবর্তীতে এটা  সোনার সাম্রাজ্যের লোককথায় পরিণত হয়। কিন্তু আমাদের ভ্রমণের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক ?

 
রাস্তার গতিপথ ও গন্তব্যের মাইলস্টোন দেখে ততক্ষণে আমাদের ধারণাটা স্পষ্ট হয়েছে।  কোন  “এল ডোরাডোর” সন্ধানে আমরা চলেছি।  জায়গার নামটা আমাদের খুবই পরিচিত। ঝপ করে মাথায় এল অতি পরিচিত সিনেমার বিখ্যাত এক ডায়লগ।  যেটি মনে করতেই সব দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ঘুচে গেল।  পরিষ্কার বুঝতে পারলাম কোথায় চলেছি আমরা।  আর কেনই বা ট্যুর অপারেটর সেটাকে বলেছেন এল ডোরাডো।  সিনেমার দৃশ্যে, জোধপুর  সার্কিট হাউসে রুমে বসে কথা হচ্ছে ফেলুদা ও তোপসের। বিষয়, মুকুল ধর নামে এক আশ্চর্য বালকের। 

“তোপসে - আচ্ছা ও কেন সোনার কেল্লা সোনার কেল্লা করছে বলতো? সোনার তৈরি নয় নিশ্চয়?
 ফেলুদা - সে রকম কেল্লা তো ভূ ভারতে আছে বলে মনে হয়না।
তোপসে - তাহলে ? ফেলুদা - তাহলে একটু বুদ্ধি খরচ করতে হবে। সোনার ছেলে কি সোনা দিয়ে তৈরি ? সোনার বাংলা, সোনার ফসল  এসব কি সোনা দিয়ে তৈরি ?”
ফেলুদার কথাটাই যেন কিউ লাইন। ‘এল ডোরাডো’ --সোনার শহর বলতে একটু বুদ্ধি খরচ করতে হবে।

আমাদের গন্তব্য মরু শহর জয়সলমির । হ্যাঁ, এখানেই রয়েছে ভারতের একমাত্র এল ডোরাডো, যা কিনা আমরা সোনার কেল্লা হিসাবে মনে রেখেছি।  সত্যিই তো !  কোনদিন তলিয়ে ভেবে দেখিনি, এল ডোরাডো, যা কিনা সোনার তৈরি শহর বলে লোককথায় পরিচিত, তা বলতে তো সোনার কেল্লাকেই বোঝায়।  কারণ এখানকার কেল্লার বাড়িঘর দেওয়াল প্রাচীর সবই যে সোনালি রঙের পাথরে তৈরি।  জয়সলমির শহরের সোনার কেল্লা বাদেও আর পাঁচটা সাধারণ বাড়ি বা হোটেল দেখলেও মনে হবে তা যেন সোনার পাথরে তৈরি। তার কারণ, সমস্ত বাড়ি হোটেল এমনকি বাড়ির পাঁচিল তৈরি সোনালি রঙের পাথর দিয়ে। পুরোটাই যেন সোনা দিয়ে মোড়া।  বহু বছর ধরে ট্যুর অপারেটর এখানে যাত্রীদের নিয়ে আসার সময় তাদের কৌতূহল একেবারে তুঙ্গে তোলার লক্ষ্যে এল ডোরাডো উপমাটি ব্যবহার করে থাকেন। তাতে যারা ঘুরতে আসছেন তারা যেমন উৎসাহী হন সেইসঙ্গে রোমাঞ্চিত হন এল ডোরাডোর বর্ণনার সঙ্গে এই জয়সলমির শহরের মিল খুঁজে পেয়ে। 

 

জোধপুর থেকে চলেছি জয়সলমির
জোধপুর থেকে চলেছি জয়সলমির

আমাদের যাত্রাপথ কাকতালীয়ভাবে অর্ধশতক আগের জাতিস্মর মুকুলের খোঁজে  ফেলুদা অ্যান্ড কোং চলার পথ। জোধপুর থেকে চলেছি জয়সলমির। 
যাত্রাপথের এক পেট্রোল পাম্পে আমাদের লাঞ্চ সারা হল। গতকাল মাঝরাত  থেকে ভোর পর্যন্ত  ট্যুরে সঙ্গে আসা কুকরা আমাদের ব্রেকফাস্ট ও লাঞ্চ বানিয়ে রেখেছিলেন।  বিশাল আকারের টিফিন ক্যারিয়ারে তা তোলা হয়েছিল বাসে।  পথের বিরতিতে হাতে হাতে থালা নিয়ে খাওয়া হলো সাদামাটা লাঞ্চ।  দীর্ঘ যাত্রাপথে শরীর ঠিক রাখতে ভারী খাবার বাদ দিয়ে সহজপাচ্য খাবারই বানিয়েছেন সঙ্গে আসা কুকেরা। সারাদিন জার্নির পরে ডিনারটা কিন্তু রসে-বশে হবে বলে আগেই জানিয়ে রেখেছেন তারা।

আমরা যখন সোনার শহরে পৌছালাম তখন ঘড়ির হিসেবে বলছে বিকেল কিন্তু পশ্চিমের রাজ্য বলে এখানে দিব্যি রোদ রয়েছে। কলকাতা হলে এতক্ষণে সূর্য পাটে যেতে বসেছে। আর এখানে দিব্যি ফটফটে রোদ। শহরে ঢুকতেই নজরে পড়ল দূরে পাহাড়ের মাথায় সোনার মুকুটের মত দেখা যাচ্ছে আমাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার সেই সোনার কেল্লা। এমনই এক ডিসেম্বরে ইতিহাস থেকে ভ্রমণ ভূগোলে জায়গা পেয়েছিল এই কেল্লা।
মে থেকে ডিসেম্বর, সাত মাসের ব্যবধানে বদলে গেল এক রাজ্যের ভূগোল ও ইতিহাস। সলতে পাকানোর পর্ব শুরু হয়েছিল অনেকটা আগে থেকেই। নজরে আসতেই সাড়া পড়ল দেশ থেকে আন্তর্জাতিক মহলে। ১৯৭৪ সাল। মে মাসে রাজস্থানের মরু অঞ্চল পোখরানে ভারতের প্রথম পারমাণবিক শক্তি পরীক্ষা। রাতারাতি খবরের শিরোনামে উঠে এল অখ্যাত অঞ্চল পোখরান। ডিসেম্বরে মুক্তি পেল ফেলুদা সিরিজের প্রথম সিনেমা “সোনার কেল্লা”।

জয়সলমির কেল্লা রাতারাতি বিখ্যাত হল সোনার কেল্লা নামে। এর আগে বাঙালির ভূ-পর্যটনে জয়সলমির কেল্লার তেমন কদর ছিলনা।   বাঙালি অবশ্য পোখরান নামও শুনেছে ফেলুদার কল্যাণে। জোধপুর সার্কিট হাউসের পিছনে জটায়ুর পাওয়া দলাপাকানো কাগজ। সাংকেতিক ভাষায় লেখা, P ফর পোখরান। সেটাও গত শতকের সত্তরের দশকের প্রথম দিকে, সোনার কেল্লা প্রকাশ পাওয়ার পর।

 

সোনার বাড়ি, সোনার হোটেল
সোনার বাড়ি, সোনার হোটেল

জয়সলমির কেল্লা এখন সবাই চেনেন সোনার কেল্লা নামে। রাজস্থানে এই একমাত্র কেল্লা যা বেশিরভাগ পর্যটকেরা দেখতে আসেন রাজপুতানার ইতিহাস বর্হিভূত কারণে, সিনেমার কল্যাণে।সিনেমার ক্লাইম্যাস্কে নকল ডা. হাজরা মুকুলকে খুঁজে পাচ্ছেনা সোনার কেল্লার ভেতর। মূল গল্পে কিন্তু এই ঘটনাস্থল আলাদা, ফেলুদা সোনার কেল্লার ভেতরই ঢোকেনি। সোনার কেল্লা থেকে কিছুটা দূরে, মোহনগড় যাওয়ার রাস্তায় এক পরিত্যক্ত প্রাচীন গ্রামে মুকুল খুঁজে পায় তার পূর্বজন্মের ভিটে। ভবানন্দ গুপ্তধন খুঁজতে গিয়ে ময়ূরের ঠোক্করে আহত হয়ে ফেলুদার হাতে ধরা পড়ে। গল্প আর সিনেমার পরিবর্তনের বিষয়ে সত্যজিৎ রায় তাঁর “বিষয় চলচ্চিত্র “-এ লিখেছেন, “উপন্যাস বা ছোট গল্পকে চিত্ররূপ দিতে হলে শিল্পের খাতিরে পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়”। 

 

গাদি সাগর লেক
গাদি সাগর লেক


সোনার কেল্লার সঙ্গে আরও কয়েকটা নতুন জায়গার নাম সামনে আসে। পশ্চিম রাজস্থানের বারমের, মন্দার বোস ফেলুদাকে ভুল পথে পাঠাতে যে নামটা বানান করে পড়েছিল। রামদেওরা স্টেশন, যেখানে শীতের রাতে জয়সলমিরের ট্রেন ধরার জন্য ফেলুদা এন্ড কোং বসেছিল গভীর রাত পর্যন্ত। শীতের রাতে আগুন জ্বেলে দেহাতি গান কি ভোলা যায় ?

 
সোনার কেল্লা উপন্যাস প্রকাশিত  হয় ১৯৭১ সালের শারদীয়া দেশ পত্রিকায়। সেবছরই ডিসেম্বরে বই আকারে প্রকাশিত হয়। অনুমান করা যায়, লেখা শুরু হয় ১৯৭০ সাল নাগাদ। সে হিসাবে সত্যজিতের শতবর্ষের সঙ্গে সোনার কেল্লারও অর্ধশতবর্ষ। সোনার কেল্লার শুটিং শুরু হয় ১৭৭৩ সালে। চলচ্চিত্রে যা দেখনো হয় তা আজ থেকে পঞ্চাশ বছরের পুরানো দৃশ্য, সেটাই স্বাভাবিক। ফেলুদারা যে ট্রেনে রাজস্থান পৌঁছেছিলেন তা ছিল কয়লার স্টিম এঞ্জিন। সেসব এখন ইতিহাস। জয়পুর বা জয়সলমির যেতে এখন আর বারবার ট্রেন বদলানোর দরকার পড়ে না। ট্রেন ছাড়াও সড়ক ও বিমানযোগে সহজেই পৌঁছানো যায়।

 
কেমন আছে সোনার কেল্লা আর জয়সলমির পৌঁছবার পথ ? 
সিনেমায় দেখানোর  সময়ের পর কেটে গেছে অর্ধশতক। পঞ্চাশ বছরের সময় নেহাৎ কম নয়, বদলও। আমরা দেখছি আধুনিক শহর।  জোধপুর থেকে জয়সলমির পৌঁছবার পথই ধরা যাক। চওড়া জাতীয় সড়ক ধরে চলছে প্রচুর গাড়ি। “এ রাস্তায় ট্রাফিক খুব কম”, ড্রাইভার গুরুবচন সিংহের স্পেয়ার শেষ হওয়ার আফশোস করার দরকার পড়ে না। মার্বেল পাথর ভরা ট্রাক, ট্যুরিস্ট গাড়ি ছাড়াও প্রচুর প্রাইভেট গাড়ি চলছে দিনরাত। পাকিস্তান বর্ডার কাছে থাকার জন্য মিলিটারি ট্রাকও অনেক। পথের মাঝে মাঝে টোল ট্যাক্স দিতে দাঁড়াতে হয়। প্রাকৃতিক দৃশ্যও কিছুটা হলেও বদল এসেছে। দীর্ঘ পথের দু’ধারের বালিময় ঊষর ঢেউখেলানো জমি এখন আর সর্বত্র রুক্ষ নয়। দীর্ঘ পাইপ জোড়া দিয়ে দিয়ে সেচ ক্যানেল থেকে জল এসে পৌঁছচ্ছে মরুবুকে। সবুজ ফসলে ভরে উঠছে একসময়ের মরুপ্রান্তর। দু’একটা জায়গা নয়, মাইলের পর মাইল সেজে উঠেছে সবুজ সমারোহে। সড়ক পথে চলার সময় চোখে পড়ে দূরে বড় বড় পাখাসহ হাওয়াকল বা উইন্ডমিল। অপ্রচলিত বায়ুশক্তি থেকে বিদ্যুৎ বানাবার কল। 

টেলিগ্রাফের তারের বদলে হাইটেনশন ইলেকট্রিক তারের লাইন। মাঝে মাঝে খাড়া মোবাইল টাওয়ার। কিন্তু ভীষণ কমে গেছে ময়ূর আর বন্য উটের সংখ্যা। চলতি পথে কদাচিৎ চোখে পড়ে। বেড়েছে গ্রাম, পথের ধারে ধাবা আর যোগাযোগের মাধ্যম। এখন টায়ার পাংচার হলে বাবলা  গাছের তলায় অসহায় বসে থাকার দরকার পড়বে না। দিগন্ত পর্যন্ত ঢেউ খেলানো ন্যাড়া প্রান্তর, মাঝে মাঝে ছোট ছোট ঝোপ, বালি আর পাথরের প্রান্তর অমিল নয়।  

আর হ্যাঁ, শনিমনসা  কিন্তু হারিয়ে যায়নি। যাত্রাপথে বাইরে চোখ মেললেই দেখা মেলে । এখনো শনিবারে শনিবারে রাস্তার ধারে ফুল ধরে।   
আমরা যে হোটেলে দলবল মিলে দখল করলাম তা সোনার হোটেল বলা চলে। হলুদ বেলে পাথর দিয়ে তৈরি। বেশিরভাগ হোটেল হলদে বেলে পাথরের কারুকার্যময় করা অপরূপ সুন্দর। সারাদিনের জার্নির ক্লান্তি কাটাতে রুমে ঢুকেই স্নান সারলাম। চা পর্ব সেরে দিনের আলো থাকতে থাকতে ঘুরে এলাম হোটেলের চারদিকে। বিকেলের পড়ন্ত আলোয় দূর থেকে  যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে সোনার কেল্লা।

 

সোনার কেল্লা
সোনার কেল্লা


জয়সলমির ছোট শহর। শহরের প্রায় সর্বত্র থেকে দেখা যায় সোনার কেল্লা। অনুচ্চ টেবিল মাউন্টেন ত্রিকুট পাহাড়ের  মাথায় হলুদ বেলেপাথরের তৈরি কেল্লা সূর্যের  আলোয় ঝলমল করলে সত্যিই মনে হয় সোনার তৈরি কেল্লা। কেল্লার বয়স প্রায় ৮৬৪ বছর। যাদব বংশের ভাটি রাজপুত রাজা রাওয়াল জয়সোল (Rawal Jaisal) ১১৫৬ সালে এই কেল্লাটি গড়েন। চিতোরের পর এটা রাজস্থানের  দ্বিতীয় প্রাচীন কেল্লা। হলুদ বেলে পাথর বা ইয়েলো স্যান্ডস্টোন দিয়ে তৈরি আশপাশের হোটেল, বাড়ি, সরকারি অফিস থেকে শুরু করে প্রায় সব নির্মাণ । ফলে পুরো জয়সলমির শহরটাই সোনার শহর। হলুদ পাথর  ছাড়া আর যেটা চোখে পড়বে তা হল পাথরের অপূর্ব কারুকাজ। হোটেল তো বটেই, সাধারণ বাড়ির জানালা দরজার চারধারে পাথরের কাজ হাঁ করে দেখার মত।  সারা পৃথিবীতে হাতে গোনা যে কটা বসবাসকারী দুর্গ আছে  তার মধ্যে জয়সলমির কেল্লা অন্যতম। পুরানো শহরের প্রায় এক চতুর্থাংশ পরিবার কেল্লার ভিতর বাস করে। 


ঘুরে আসি : এল ডোরাডোয় কয়েকদিন

পরদিন সকালে প্রথম গন্তব্য সোনার কেল্লা। অটো ভাড়া করে চললাম কেল্লার পথে। হাল্কা কুয়াশা ঘেরা কেল্লার গায়ে পড়েছে নরম সূর্যের আলো, মোহময় দৃশ্য। গতকাল রাতে হোটেলের ছাদে ডিনার করার সময় চোখে পড়েছিল কুয়াশার আড়ালে আলোয় সাজানো সোনার কেল্লা।
 কেল্লার ঢোকার মুখে গয়ার পান্ডার মত কিলবিল করছে গাইড। অপটু হাতে আঁকা বাঁকা বাংলা হরফে লেখা দোকানের নাম থেকে শুরু করে গাইডের ভাঙা বাংলা এটাই প্রমাণ করে যে অর্ধশতক আগের এক বাংলা সিনেমা এখনও ওদের রুটি রুজির উপায়। কেল্লায় বাস করে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার। দোকান পাট, হোটেল, বসতি মিলিয়ে গমগম করছে কেল্লা। জলের সমস্যা বাড়ে বই কমেনি। ফলে রাজা রাওয়াল জয়সোল আমল থেকে এখন পর্যন্ত জমে থাকা বর্জ্যের সিংহভাগ সরলেও কোন কোন জায়গায় গন্ধে টেকা দায়। ট্যুরিস্ট সিজনে কেল্লার ভিতর গড়িয়াহাটের চৈত্র সেলের ভিড় লেগে থাকে। কেল্লার ভেতর আছে বেশ কয়েকটি মন্দির, রানির বাড়ি, কামান আর প্রচুর দোকান ও হোটেল। কাজকরা কাপড়ের  ব্যাগ, চাদর, চামড়ার  ও পাথরের জিনিসপত্র – সবমিলিয়ে পসার জমজমাট। 


ঘুরে আসি : এল ডোরাডোয় কয়েকদিন

কেল্লার মধ্যে যেখানে  ছবির শুটিং হয়েছিল সে জায়গা মনে হয় সবচেয়ে অবহেলিত ও নোংরা। সিনেমায় যে গলিতে মুকুলকে খুঁজতে ভবানন্দ “মুকুল, মুকুল “ ডাক ছেড়ে পাগলের মত দৌড়াদৌড়ি করছিল সেখানকার পাথুরে দেওয়ালে এক মজাদার কথা লেখা আছে। সরকারি বিজ্ঞাপনে, একটি ছোট ছেলের মুখ এঁকে পাশে হিন্দিতে লেখা, অগলা বাচ্চা অভি নেহি, তিনকে জ্যাদা কভি নেহি। 


ঘুরে আসি : এল ডোরাডোয় কয়েকদিন
মুকুলের বাড়িরও ভগ্নদশা। নকল ডা. হাজরাকে কব্জা করার পর মুকুল যে বাড়ির  বারান্দা থেকে নেমে আসে সেই সিঁড়ি থাকলেও দরজাটা পাথর গেঁথে বন্ধ। পাশের চাতালে উঠেছে প্রকান্ড এক জলাধার। কোথাও কোনও স্থাননির্দেশক বোর্ড নেই, গাইডের খুচরো জ্ঞান আর নিজ কল্পনায় মেলানো গল্প একমাত্র ভরসা। রাজস্থান পর্যটন বিভাগ এ বিষয়ে বেশ উদাসীন।

 
সোনার কেল্লা জয়সলমির ফোর্ট ২০১৩ সালে ইউনেস্কো হেরিটেজ হিসাবে ঘোষিত হয়। হেরিটেজ হলে কী হবে, কেল্লার ভেতর বসবাসকারী রাজপুত পরিবারগুলি সরতে নারাজ।বরং দিন দিন বাড়ছে বসতির সংখ্যা। 


 ঘন্টাখানেক সোনার কেল্লায় কাটিয়ে রওনা দিলাম অদূরে অবস্থিত “পাটোয়া কি হাভেলি”র উদ্দেশে। হাবেলি অর্থ সুন্দর বাড়ি বা প্রাসাদ।  রাজস্থানে পাথরের সূক্ষ্ম কারুকাজ ও শিল্পের যদি কোন শ্রেষ্ঠ নিদর্শন  থাকে তা হল এই পাটোয়া কি হাভেলি।  এই হাভেলি হল জয়সলমিরের প্রথম প্রাসাদ।  নামে হাভেলি হলেও এটি আসলে পাঁচটি ছোট ছোট প্রাসাদের সমাহার।

 

“পাটোয়া কি হাবেলি”
“পাটোয়া কি হাবেলি”

“পাটোয়া কি হাবেলি”র ইতিহাস নিয়ে অনেক ধরনের কথা প্রচলিত আছে । কিছু কথাবার্তা ইতিহাসে পাওয়া যায় কিন্তু তার মধ্যে কতটা সত্যি আর কতটা কল্পনা মিশ্রিত তা বোঝা কঠিন। মোটামুটি জলটল বাদ দিয়ে যেটুকু বিশ্বাসযোগ্য ইতিহাস জোগাড় করতে পেরেছি তা হল গাইড ও কর্ণেল টডের বইতে। 


১৮০৫ সালে  জয়সলমিরে এক ধনী ব্যবসায়ী গুমন চাঁদ পাটোয়া এই হাভেলি তৈরি করেন।  তিনি তার পাঁচ ছেলের জন্য একই চত্বরে পাঁচটি আলাদা আলাদা হাবেলি তৈরি করেছেন। সেসব তৈরি করতে সময় লেগেছিল প্রায় চার দশক। গুমন চাঁদ পাটোয়া ছিলেন সোনা রুপোর ব্যবসায়ী,  সেইসঙ্গে চলত সুদের ব্যবসা। তখনকার দিনে রাজা ও সম্ভ্রান্ত ঘরের মহিলাদের পোশাকে ব্যবহার করা হতো সোনা এবং রুপোর সুতোর কাজ। সে সুতো সাপ্লাই দিতেন গুমন চাঁদ পাটোয়া।  এছাড়া ইতিহাসে তার একটি অপর পরিচয় পাওয়া যায়। সামনে সোনা এবং রুপোর কারবারি হিসাবে পরিচিত থাকলেও পাটোয়ার মূল ব্যবসা ছিল আফিঙের এবং সেই সময় জয়সলমির ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কেন্দ্র। 

পাটোয়ার হাভেলির একটির  করুণ ইতিহাস আছে,। জয়সলমিরের  জৈন মন্দিরের একজন পুরোহিত  গনৎকার পাটোয়াদের পরামর্শ দিয়েছিলেন যে তারা যেন আর জয়সলমিরে না থাকে।  তাদের পরামর্শ মেনে পাটোয়া ভাইরা অন্য শহরে চলে যায় এবং তাদের সোনার ব্যবসার সাথে সাথে সুদ ও আফিংয়ের ব্যবসা জমে ওঠে।  প্রচুর টাকার মালিক হয়ে তারা আবার একসময় ফিরে আসে জয়সলমিরে। পরিবারের সেই সময়কার প্রধান গুমন চাঁদ পাটোয়া পুরোহিতের পরামর্শ উপেক্ষা করে তার পাঁচ ছেলের প্রত্যেকের জন্য পৃথক এবং বৈভব ভরা প্রাসাদ উপহার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পাঁচটি  অপূর্ব কারুকার্য করা হাভেলি বা প্রাসাদ তৈরি করে তার ছেলেকে উপহার দেয়।  মনে হতে পারে, সেই সময়ে এটাই ছিল অবিভক্ত দেশের প্রথম ফ্ল্যাট সিস্টেম!  ছেলেরা একসাথে থাকলে পারিবারিক অশান্তি হতে পারে।  সে কল্পনা করেই তাদের আলাদা আলাদা ফ্ল্যাট তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিচক্ষণ স্বর্ণ ব্যবসায়ী।  তবে পরিমাপ এবং ধরন ধারন একটু বেশি খরচ বহুল, এই যা আলাদা। 


 দুর্ভাগ্যক্রমে জয়সলমিরে ফিরে আসার পর পাটোয়দের অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমে খারাপ হতে থাকে।  তাদের ভাগ্যের করুণ পরিণতি শুরু হয়।  এমনকি এক সময় তাদের সাধের হাভেলি ছেড়ে চলে যেতে হয় অন্য জায়গায়। তার অন্যতম কারণ হয়তো সিল্ক রুট বন্ধ হয়ে যাওয়া। 
জয়সলমির শহর একসময় ছিল দেশ-বিদেশের বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ জংশন।  ২০০০ বছর পুরনো বাণিজ্য পথ সিল্ক রোড যা চীনকে তুরস্ক এবং ইতালির সাথে ভারতের মাধ্যমে সংযুক্ত করেছিল, সে পথ গিয়েছিল জয়সলমিরের বুক দিয়ে। পামির পর্বত মালা অতিক্রম করার পরিবর্তে থর মরুভূমির দিয়ে ভারত হয়ে মধ্য এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে বানিজ্য চলাচলের সিল্ক  রুট ছিল একসময় গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথ । এই পথেই চলতো মসলা সিল্ক মূল্যবান পাথর নানা ধরনের অলংকার শুকনো ফল এক দেশ থেকে আরেক দেশের বানিজ্য। সেইসঙ্গে অবশ্যই পোশাকের আড়ালে চোরাগোপ্তায় মাদক পাচার ছিল সিল্ক রোডের ব্যবসার অন্যতম অংশ। 


ঐতিহাসিক সিল্ক রুট চালু থাকা অবস্থায় জয়সলমির ছিল  সিল্ক রুটের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সেসময়কার সিল্ক রুট বর্তমান ইউরোপ, চীন, ভারত, আফগানিস্তান, তুরস্ক ও মিশরকে সংযুক্ত করেছিল। এই পথে সিল্ক পরিবহনের পাশাপাশি অনেক মূল্যবান পাথর, পশু-পাখি, চা, আফিম ইত্যাদি পণ্যও পরিবহণ করা হতো। এসব পণ্য বহনকারী বাণিজ্য দল দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার সময় বিভিন্ন স্থানে বিশ্রাম নেয়ার প্রয়োজন হতো।  প্রায় ৪০০ বছর আগে রাজস্থানের জয়সলমির  ছিল  যাতায়াত করা ব্যবসায়ীদের বিশ্রামের একটি নিরাপদ আশ্রয়।  সে সময় এটি হয়ে উঠেছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র।  উষর মরুভূমির বুকে অবস্থিত  পরিত্যক্ত গ্রাম ও হাবেলির ধ্বংসাবশেষ সে সময়কার পুরনো ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে। জয়সলমির শহরটা ব্যবহার করা হতো বাণিজ্য পথের ব্যবসায়ীদের আদান-প্রদান, ভ্রমণের কাগজপত্র স্ট্যাম্প কেনা পশু বিক্রি এবং তাদের নিরাপদ যাত্রার জন্য পাহারাদারের কেন্দ্র হিসেবে। 


 বহুযুগ ধরে সিল্ক রুটে চলে আসা ব্যবসা বাণিজ্য মার খেতে লাগলো যখন সমুদ্রপথে বাণিজ্যের পথ খুলে গেল।  এবং সেই সঙ্গে দেশে দেশে মতান্তরের কারণে প্রধান স্থলপথগুলি বন্ধ করার ফলে জয়সলমির হারালো তার বাণিজ্য কেন্দ্রের গুরুত্ব।  ফলে মরুভূমির বুকে তা এক নিঃসঙ্গ শহরে হিসাবেই পরে রইলো পরবর্তী বহু দশক ধরে। 


ইতিহাসের এই অংশ জানার সময় একটা প্রশ্ন বারবার মনে উঠে আসতে লাগে।  সিল্ক রুটে  ব্যবসায়ীরা জয়সলমির হয়ে মধ্যপ্রাচ্য পেরিয়ে ইউরোপে ব্যবসা করার সময় হয়তো তাদের  মুখে মুখে রটে গিয়েছিল এখানকার সোনালী দুর্গের কথা।  ইউরোপের লোকেদের কাছে কানে সেই সোনালী কেল্লার  বা সোনালী শহরের কথা হয়তো বা দিনে কালে রূপান্তরিত হয়েছিল রূপকথায় সোনার শহরে। গহীন প্রান্তরের মধ্যে সোনার তৈরি শহর সোনার বাড়িঘর তা যেন মরুভূমির বুকে জয়সলমির শহরেরই এক অপভ্রংশ বলে মনে হতে পারে। 


মরু শহরের অন্যান্য আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে গাদি সাগর লেক, ওয়ার মিউজিয়াম ও অবশ্যই স্যাম  ডেজার্ট । এখান থেকে পাকিস্তান সীমান্ত বেশি দূরে নয়।  মাঝখানে রয়েছে থর মরুভূমি।  সেখানকার ভ্রমণ  অভিজ্ঞতা  এক অনবদ্য স্মৃতি বহন করে। কিন্তু আকর্ষন হারাচ্ছে রাজস্থানের রাজপুত । 
শুধু জয়সলমির নয়, পুরো রাজস্থানে কমে এসেছে গালপাট্টা আর পাগড়ি। গ্রামাঞ্চল বাদে শহরের ছেলে মেয়েরা আধুনিক পোষাকে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে উটের দুধে চুমুক দিয়ে রংচংয়ে পোষাক পড়ে পাগড়ি আর হাতে লাঠি হাতে নাগরা পড়া রাজস্থানি পুরুষ কেল্লা ছাড়া বিরল। সে তুলনায় বেশ অপরিবর্তিত  রামদেওরা স্টেশন। 


এই সেদিনও একদল উৎসাহী বাঙালি ট্যুরিস্ট হই হই করে জোধপুর সার্কিট হাউজে ঢুকে নিরাপত্তাকর্মীর তাড়া খেয়েও পটাপট ছবি তুলে এনেছে। সোনার কেল্লায় দেখানো সার্কিট হাউজের বারান্দা, ঘর , তাদের ছবিতে, সার্কিট হাউজ রয়ে গেছে অবিকল। 


মাঝে কথা উঠেছিল সোনার কেল্লা রিমেকের। কেমন হবে এখন সোনার কেল্লা সিনেমা নতুন করে বানালে ? ডা. হাজরা হয়তো মুকুলের পূর্বজন্মের কেল্লার কথা শুনে গুগলে সার্চ মেরে রাজস্থানের সব কেল্লা দেখিয়ে বলতে বলবে কোনটা তার সোনার কেল্লা। মুকুল তার সোনার কেল্লা ছবিতে দেখানো মাত্র ডা. হাজরা প্লেনে চাপিয়ে মুকুলকে নিয়ে যাবে জয়সলমির সোনার কেল্লায়। বেচারা মন্দার বোস ও ভবানন্দ,  প্লেনে চেপে ধাওয়া করার রেস্ত তাদের নেই !


কীভাবে যাবেন

জয়সলমির পশ্চিম রাজস্থানের শেষ প্রান্তে হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে পৌঁছানো সহজ হয়ে এসেছে। শহর থেকে ৫ কিমি দূরে জয়সলমির বিমানবন্দর। জয়পুর ও জোধপুর থেকে উড়ান আছে। হাওড়া-জয়সলমির সাপ্তাহিক সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেন রয়েছে। এছাড়া জয়পুর, জোধপুর, উদয়পুর থেকে সড়কপথে আসা যায় জয়সলমির। দিল্লি থেকে দূরত্ব ৮৮২ কিমি। 


কোথায় থাকবেন

জয়সলমির শহরে রয়েছে  প্রচুর  সরকারি  ও বেসরকারি হোটেল। ভাড়াও বিভিন্ন। তবে সিজনে ঘরভাড়া আকাশছোঁওয়া। আগে থেকে বুক করে যাওয়া ভাল। সোনার কেল্লার আশপাশে অনেক হোটেল। কেল্লার ভিতরেও আছে, তবে দামি। 

আরও দেখুন
Advertisement
Advertisement
Advertisement

সেরা শিরোনাম

Digital Bed Vacancy: সহজেই জানা যাবে কতগুলি বেড খালি, এবার আরজি করে চালু ডিজিটাল বেড ভ্যাকেন্সি
সহজেই জানা যাবে কতগুলি বেড খালি, এবার আরজি করে চালু ডিজিটাল বেড ভ্যাকেন্সি
South 24 Parganas News: প্রতিবাদে ক্যানিংয়ে ২ মহিলাকে বেধড়ক 'মার', ফের প্রশ্নের মুখে নারী নিরাপত্তা
প্রতিবাদে ক্যানিংয়ে ২ মহিলাকে বেধড়ক 'মার', ফের প্রশ্নের মুখে নারী নিরাপত্তা
RG Kar Case: 'ছেলেখেলা মনে করছে', ফের 'সুপ্রিম'-শুনানি পিছনোয় ক্ষোভ উগরে দিলেন তরুণী চিকিৎসকের মা
'ছেলেখেলা মনে করছে', ফের 'সুপ্রিম'-শুনানি পিছনোয় ক্ষোভ উগরে দিলেন তরুণী চিকিৎসকের মা
US Election 2024: শিকড় ভারতে, আমেরিকার 'সেকেন্ড লেডি' হতে চলেছেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত !
শিকড় ভারতে, আমেরিকার 'সেকেন্ড লেডি' হতে চলেছেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত !
Advertisement
ABP Premium

ভিডিও

RG Kar Update: সিভিক নিয়োগ নিয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টে কী জানাবে রাজ্য ?Ghanta Khanek Sange Suman (০৬.১১.২৪) পর্ব ২ : ফের মার্কিন মসনদে ট্রাম্প | পুরনো বন্ধুত্ব নতুন করে শুরুর বার্তা মোদির, লাভ হবে ভারতের?WB News:'খেটে খাওয়া মহিলাকে প্রার্থী করেছিলেন মোদিজী, কিন্তু তাঁদের সহ্য হয় না', কটাক্ষ রেখা পাত্রেরGhanta Khanek Sange Suman (০৬.১১.২৪) পর্ব ১ : রাজ্যের আবাস-প্রকল্পেও ভুরিভুরি দুর্নীতির অভিযোগ, ঘেরাও থানা, অব্যাহত বিক্ষোভ | ABP Ananda LIVE

ফটো গ্যালারি

ব্যক্তিগত কর্নার

সেরা প্রতিবেদন
সেরা রিল
Digital Bed Vacancy: সহজেই জানা যাবে কতগুলি বেড খালি, এবার আরজি করে চালু ডিজিটাল বেড ভ্যাকেন্সি
সহজেই জানা যাবে কতগুলি বেড খালি, এবার আরজি করে চালু ডিজিটাল বেড ভ্যাকেন্সি
South 24 Parganas News: প্রতিবাদে ক্যানিংয়ে ২ মহিলাকে বেধড়ক 'মার', ফের প্রশ্নের মুখে নারী নিরাপত্তা
প্রতিবাদে ক্যানিংয়ে ২ মহিলাকে বেধড়ক 'মার', ফের প্রশ্নের মুখে নারী নিরাপত্তা
RG Kar Case: 'ছেলেখেলা মনে করছে', ফের 'সুপ্রিম'-শুনানি পিছনোয় ক্ষোভ উগরে দিলেন তরুণী চিকিৎসকের মা
'ছেলেখেলা মনে করছে', ফের 'সুপ্রিম'-শুনানি পিছনোয় ক্ষোভ উগরে দিলেন তরুণী চিকিৎসকের মা
US Election 2024: শিকড় ভারতে, আমেরিকার 'সেকেন্ড লেডি' হতে চলেছেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত !
শিকড় ভারতে, আমেরিকার 'সেকেন্ড লেডি' হতে চলেছেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত !
Junior Doctors Protest: বৈঠকের পরেও একাধিক কাজ এখনও হয়নি, ফের মুখ্যসচিবকে ইমেল জুনিয়র ডাক্তারদের
বৈঠকের পরেও একাধিক কাজ এখনও হয়নি, ফের মুখ্যসচিবকে ইমেল জুনিয়র ডাক্তারদের
Kamala Harris: দোরগোড়া থেকে ফিরে আসতে হল,  ট্রাম্পের সঙ্গে কেন পেরে উঠলেন না কমলা?
দোরগোড়া থেকে ফিরে আসতে হল, ট্রাম্পের সঙ্গে কেন পেরে উঠলেন না কমলা?
Donald Trump : 'দ্বিতীয় ইনিংস' শুরুর পথে ট্রাম্প, ভারতের লাভ না ক্ষতি ?
'দ্বিতীয় ইনিংস' শুরুর পথে ট্রাম্প, ভারতের লাভ না ক্ষতি ?
Donald Trump Victory: দীপাবলিতেই ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট, ট্রাম্পের জয়ে কি অস্বস্তি বাড়ল বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের?
দীপাবলিতেই ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট, ট্রাম্পের জয়ে কি অস্বস্তি বাড়ল বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের?
Embed widget