Type-1 Diabetes: ডায়াবেটিস হতে পারে বাচ্চাদেরও! কোন উপসর্গগুলো দেখলেই সতর্ক হবেন?
টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস কী? ঝুঁকিতে কোন শিশুরা, সমস্যা এবং তার সমাধানই বা কোন পথে? তা নিয়ে এবিপি লাইফকে বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অপূর্ব ঘোষ।
কলকাতা : ছোটদেরও ডায়াবেটিস! শুনতে অবাক লাগলেও এই সমস্যা নতুন নয়। দেশে অনেক শিশুরাই টাইপ ওয়ান আক্রান্ত হয়। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস কী? ঝুঁকিতে কোন শিশুরা, সমস্যা এবং তার সমাধানই বা কোন পথে? তা নিয়ে এবিপি লাইফকে বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অপূর্ব ঘোষ।
সমস্যার শিকড়ে: ডায়াবিটিস রোগটিকে মূলত তিন-ভাগে ভাগ করা যায় টাইপ ওয়ান (Type 1 diabetes) ও টাইপ টু (Type 2 diabetes), এবং Mody (Maturity Onset Diabetes of the Young)। টাইপ ওয়ান ডায়াবিটিস একটি অটোইমিউন রোগ। এ ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয় থেকে বিটা কোষ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে শিশুর শরীরে ইনসুলিন (Insulin) তৈরিই হয় না। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে সব ক্ষেত্রেই বাইরে থেকে ইনসুলিন ইনজেক্ট করতে হয় শিশুর শরীরে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অপূর্ব ঘোষ বলছেন, 'শিশুদের মধ্যে ওয়ান অফ কমন এন্ড্রোক্রাইম ডিজিজ'।
উপসর্গগুলো চিনুন: অতিরিক্ত ওজন হ্রাস, খাওয়ার পরেও সঠিক ওজন না হওয়া, বার বার মূত্রত্যাগ, অতিরিক্ত খিদে, তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি খিটখিটে হয়ে যাওয়া। ইত্যাদির মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তবে পেট ব্যথা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে শিশুর মধ্যে।
সচেতনতা জরুরি:
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সচেতনতার অভাবে ছোটদের মধ্যে ডায়াবেটিস ধরা পড়তেই অনেক দেরি হয়ে যায়। ডাঃ অপূর্ব ঘোষের কথায়, উপসর্গগুলো খুব সাধারণ হওয়ার কারণে চিকিৎসক বা অভিভাবকরা কেউ বুঝতেই পারেন না শিশুটি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। তাই বাচ্চারা প্রাথমিক উপসর্গ নিয়ে গেলেও অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, চিকিৎসকেরা বাচ্চাদের ডায়াবেটিস বাদে বাকি পরীক্ষা করিয়েছেন। কারণ ওই বয়সে যে ডায়াবেটিস হতে পারে, সেটাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাথায় থাকে না কারও।
ঝুঁকিতে কারা
২ থেকে ১০ বা ১২ বছরের শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হয়। এটি মূলত জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে।
ইনসুলিনের ঘাটটিতে কী কী হতে পারে
- কিটোনবডি তৈরি হতে পারে
- ডিহাইড্রেশন হতে পারে
মিষ্টি খেলেই ডায়াবেটিস?
মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলেই ডায়াবেটিস হবে এই ধারনা ভুল। জেনেটিক কারণে ছোটরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। তবে ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পর খাদ্যাভ্যাসে নজর দেওয়া জরুরি। চকোলেট, মিষ্টি ইত্যাদি বাদ দিতে হবে খাদ্যতালিকা থেকে।
সমাধান কোন পথে
দুই ধরনের ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে সমাধান আলাদা। টাইপ ওয়ান ডায়াবিটিস আলাদা করে আটকানোর কোনও উপায় নেই। এই ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় কেবল ইনসুলিনই ভরসা। সময়মতো চিকিৎসা, ঠিকমতো ইনসুলিন প্রয়োগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এর পর সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শর্করা জাতীয় খাবার কম খেয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব। বর্তমানে বিভিন্ন সহজ উপায়ে ইনসুলিন প্রয়োগ করা যায়। ইনসুলিন পাম্প যাকে আর্টিফিসিয়াল প্যানক্রিয়াসও বলা যায়।
এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ বলেন, 'ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় মেনে চলতেই হবে, ডায়েট, ইনসুলিন এবং এক্সারসাইজ। এ ক্ষেত্রে শরীরচর্চার বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখা জরুরি।
এক নজরে টাইপ-টু ডায়াবেটিস
- টাইপ টু ডায়াবিটিসে শরীরে ইনসুলিন হরমোন কম তৈরি হয় বা ইনসুলিন হরমোন তৈরি হলেও শরীর তা ব্যবহার করতে পারে না শরীর। এর ফলে শুরু হয় যত সমস্যা। অ্যাডোলোসেন অর্থাৎ ১০ থেকে ১৯ বছরের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে দেখা দিতে পারে টাইপ-টু ডায়াবেটিস। মূলত স্থূলতা, পারিবারিক ইতিহাস টাইপ টু ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ।
- টাইপ ২ থেকে বাঁচতে লাইফস্টাইল মডিফিকিকেশন জরুরি। আপনার শিশুকে খেলতে দিন। জাঙ্কফুডের বদলে ফল, শাকসবজি খেতে দিন, ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ান। এ ক্ষেত্রেও হঠাৎ রোগা হওয়া, বারবার প্রস্রাব, অতিরিক্ত জল তৃষ্ণা, খিদে বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখলে সতর্ক থাকুন। অপরদিকে জীবনযাত্রায় বদল এনে টাইপ ২ ডায়াবিটিস রিভার্স করা যায় যেমন তেমনই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় বা পিছিয়ে দেওয়াও সম্ভব। অর্থাৎ ডায়াবিটিস আটকানো সম্ভব হতে পারে কিছু ক্ষেত্রে।
- অর্থাৎ তাদের অগ্ন্যাশয় সম্পূর্ণ ভাবে ইনসুলিন নিঃসরণ করা বন্ধ করে দিয়েছে। বেঁচে থাকার জন্য দিনে নিয়মিত তিন থেকে চার বার ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নিতে হয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বাচ্চাদের মধ্যে ‘টাইপ টু’ ডায়াবেটিসও দেখা যায়, যাদের অগ্ন্যাশয় আংশিক কাজ করে। ইঞ্জেকশন নিতে হয় তাদেরও।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )