Alzheimer’s Risk : ভুলে যাওয়ার অসুখ অ্যালঝেইমার্স, পরিণতি ভয়ঙ্কর! বেশি ঝুঁকি মহিলাদেরই, কোন লক্ষণে চিনবেন?
Alzheimer’s symptoms: মহিলারা কীভাবে বুঝবেন কোনটা বার্ধক্যের স্বাভাবিক লক্ষণ আর কোনটা অ্যালঝেইমার্স ? চিকিৎসক জানালেন অ্যালঝেইমার্সের শুরুটা হতে ছোট ছোট লক্ষণ দিয়ে।

অ্যালঝেইমার্স। অনেকেই এই ভুলে-যাওয়ার-অসুখকে শুধুমাত্র বয়স্কদের রোগ বলেই মনে করেন। হ্য়াঁ এটা ঠিকই এই অসুখের আশঙ্কা বয়সকালেই বাড়ে। কিন্তু জানেন কি, মহিলাদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি কয়েকগুণ বেশি ! চমকে দেবে পরিসংখ্যান। এই রোগে আক্রান্তদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই মহিলা। চিন্তার বিষয় হল,অনেকেই এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি সম্পর্কে অবহিত নন। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই রোগ নিয়ে সচেতনতা বা বোধ খুবই কম। মনে করা হচ্ছে এই অসুখের পেছনে দায়ী অনেকগুলি কারণ। যেমন হরমোনাল পরিবর্তন, জেনেটিক প্রবণতা এবং জীবনযাত্রা।
আর্টেমিস হাসপাতালের নিউরোলজি ও এপিলেপ্সি বিশেষজ্ঞ ডাঃ বিবেক বারুনের সঙ্গে এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছিল এবিপি লাইভ । এতে উঠে এসেছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। ডাঃ বিবেক বারুন জানালেন এই অসুখ আসলে একটি নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার । আর এর প্রথম টার্গেটই হল স্মৃতি। তারপর একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবনকেও রীতিমতো বিপর্যস্ত করে এই অসুখ। গবেষণা বলছে এই অসুখে আক্রান্ত রোগীদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই মহিলা। আর এদেশে মহিলাদের মধ্যে নিজের প্রতি লক্ষ অপেক্ষাকৃত অনেক কম। তাই অসুখটা বেড়ে যেতে সময় লাগে না ।
মহিলারা কেন অ্যালঝেইমার্সে বেশি আক্রান্ত হন ? ডাঃ বিবেক বারুন জানালেন, মহিলাদের মধ্যে এই অসুখে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। সাম্প্রতিক গবেষণাগুলিবলছে এর পিছনে আছে হরমোনাল কারণগুলিও । মেনোপজের পরে ইস্ট্রোজেন ক্ষরণে হ্রাস মস্তিষ্কের মেটাবলিজমের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। মহিলাদের এই অসুখে আক্রান্ত হওয়ার পিছনে জিনগত কারণও রয়েছে।
মহিলারা কীভাবে বুঝবেন কোনটা বার্ধক্যের স্বাভাবিক লক্ষণ আর কোনটা অ্যালঝেইমার্স ? চিকিৎসক জানালেন অ্যালঝেইমার্সের শুরুটা হতে ছোট ছোট লক্ষণ দিয়ে। যেমন ধরুন, কী কথা হয়েছে ভুলে যাওয়া, জরুরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট ভুলে যাওয়া, জিনিসপত্র হারিয়ে ফেলা। অ্যালঝেইমার্স ডিজিজ জার্নালে ২০২১ সালে প্রকাশিত গবেষণায় উল্লেখ রয়েছে, মহিলা রোগীরা পুরুষদের তুলনায় প্রাথমিক পর্যায়ে বেশি ভুলে যান।
এরপর শুরু হয় ভাষাগত সমস্যা। যেমন কিছু বোঝাতে শব্দ খুঁজে না পাওয়া...বা কথার খেই হারিয়ে ফেলা। কথোপকথন অনুসরণ করতে না পারা ইত্যাদি। এই ভাষায় প্রকাশের ঘাটতি থেকেই সমস্যা বাড়তে থাকে। যাঁদের কথাবার্তায় এমনিতে তুখোড় ছিলেন, তাঁরা যদি কথা হারিয়ে ফেলেন, তাহলে সেই পরিবর্তন সহজে চোখে পড়ে।
মহিলাদের ক্ষেত্রে,অ্যালঝেইমার্স রোগে ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তনের বিষয়টিও দেখা যায়। এই ধরনের মেজাজের পরিবর্তন মস্তিষ্কের পরিবর্তন বা হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে হতে পারে । এটিও এই রোগের গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক লক্ষণ।
এছাড়া অ্যালঝেইমার্সে অনিদ্রা বা বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে রাত কাটানো আরও একটি লক্ষণ। বিটা-অ্যামিলয়েড প্রোটিন মস্তিষ্কে জমা হওয়ার ফলে এই সমস্যা হয়। বিশেষ করে মেনোপজের পর মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা অ্যালঝেইমার্সের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
ডাঃ বিবেক বারুনের মতে, লক্ষণ বুঝে প্রাথমিক নির্ণয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মস্তিষ্কের ইমেজিং, জ্ঞানীয় পরীক্ষা এবং রক্তের বায়োমার্কারের মতো সরঞ্জাম ব্যবহার করে রোগ সনাক্তকরণের ক্ষমতাও উন্নত হচ্ছে। দরকার হতে পারে পজিট্রন এমিশন টমোগ্রাফি (পিইটি) স্ক্যান।
অ্যালঝেইমার্স রোগের ঝুঁকি কি কমানো যায়? চিকিৎসক জানাচ্ছেন, কিছু প্রতিরোধমূলক কৌশল রয়েছে। যদিও অ্যালঝেইমার্স নিরাময়যোগ্য নয়। জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন রোগের গতি মন্থর করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে কিছু বৌদ্ধিক এক্সারসাইজ, শারীরিক কার্যকলাপ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে । এছাড়া সুস্থ জীবনযাপনের জন্য দরকার সুষম খাদ্য। ফল, সবজি, হোল গ্রেইন এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সহ খাবার রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )






















