Centre New Labour Code: এবার থেকে সপ্তাহে মাত্র ৪টে কর্মদিবস? তাই বলছে কেন্দ্রের নয়া শ্রম নীতি
শ্রম সচিব বলেছেন, শ্রমিক সংগঠনগুলি প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা কাজের সময় আর তিনটে সবেতন ছুটির বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছিল। তাই ঠিক হয়েছে, সপ্তাহে কাজ করতে হবে সর্বাধিক ৪৮ ঘণ্টা। যদি কেউ দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করেন, তবে সপ্তাহে ৬ দিন তাঁকে কাজ করতে হবে।
নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক সম্ভবত শিগগরিই নতুন চারটি শ্রম নীতি চূড়ান্ত করতে চলেছে। প্রস্তাবিত এই শ্রম নীতি কোম্পানিগুলিকে সপ্তাহে ৪টি কর্মদিবস চালু করার সুবিধে দেবে কারণ সপ্তাহে কাজের সময় বরাদ্দ হবে ৪৮ ঘণ্টা! কেন্দ্রীয় শ্রম সচিব অপূর্ব চন্দ্র এ কথা জানিয়েছেন।
শ্রম সচিব বলেছেন, শ্রমিক সংগঠনগুলি প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা কাজের সময় আর তিনটে সবেতন ছুটির বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছিল। তাই ঠিক হয়েছে, সপ্তাহে কাজ করতে হবে সর্বাধিক ৪৮ ঘণ্টা। যদি কেউ দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করেন, তবে সপ্তাহে ৬ দিন তাঁকে কাজ করতে হবে। আর যদি কোনও কোম্পানি কর্মীদের নিয়ে রোজ ১২ ঘণ্টা করে কাজ করায় তবে সপ্তাহে ৪ দিন কাজ করলেই চলবে, সঙ্গে মিলবে তিনটে ছুটি। অপূর্ব চন্দ্র বলেছেন, নতুন শ্রম নীতি কোনওভাবেই শ্রমিক ও কর্মীদের স্বার্থবিরোধী হবে না। যদি কাজের সময় বাড়ানো হয়, তবে ছুটিও বাড়াতে হবে। কাজের সময় বাড়ালে কর্মদিবস হবে ৪ বা ৫টি। এবার কোম্পানির মালিক ও কর্মীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করবেন, তাঁদের পক্ষে কোনটা সুষ্ঠু হবে। দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়।
শ্রম সচিব জানিয়েছেন, কাজের সময় সংক্রান্ত নিয়মকানুন এখন ঠিক হচ্ছে। চূড়ান্ত কিছু হয়নি। আইন তৈরি হয়ে গেলে সব কিছু আরও স্পষ্ট হবে। কোনও সংস্থাই তাদের কর্মীদের শোষণ করতে পারবে না, সেই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে শ্রম মন্ত্রক। এই প্রথম সব ধরনের কর্মী ন্যূনতম বেতনের সুবিধে পাবেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্যও নতুন প্রকল্প আনা হচ্ছে। সব ধরনের শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড দেওয়া হবে। সংগঠিতই হোক বা অসংগঠিত- সব ক্ষেত্রের শ্রমিকদের ইএসআই-এর সুবিধে দেওয়া হবে। মহিলারা সব ধরনের কাজ করার সুযোগ পাবেন, নাইট শিফটও করবেন তাঁরা। এমপ্লয়িজ স্টেট ইনসিওরেন্স কর্পোরেশনের মাধ্যমে কর্মীদের বিনা মূল্যে ডাক্তারি পরীক্ষার সুবিধেও দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
শ্রম মন্ত্রক বলেছে, রাজ্য সরকারগুলি তাদের সুবিধেমত শ্রম আইন চালু করতে পারবে। কেন্দ্র, রাজ্য প্রত্যেকের এই অধিকার রয়েছে। তবে যদি কোনও ক্ষেত্রে কেন্দ্র-রাজ্য মতবিরোধ হয়, তবে কেন্দ্রের নির্ধারিত আইনই তখন প্রযোজ্য হবে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এ বছর তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের নাম রেজিস্টার করার জন্য একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করা হবে। মে বা জুন মাসের মধ্যে চালু হয়ে যাবে এই পোর্টাল, জানিয়েছেন শ্রম সচিব। এর ফলে অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরতরা, যাঁদের মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিক আছেন, তাঁদের ব্যাপারে যাবতীয় প্রকৃত তথ্য ওই সাইটে থাকবে, যাতে সেইমতো সরকারি নীতির সুযোগসুবিধে তাঁদের সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।
এই সাইটে নাম নথিবদ্ধ করা কর্মীরা ১ বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বীমা যোজনার আওতায় দুর্ঘটনা ও শারীরিক অক্ষমতা জনিত কভার পাবেন।
এ বছরের ১ এপ্রিল থেকে ৪টি নতুন শ্রম নীতি কার্যকর করতে চায় শ্রম মন্ত্রক। ৪৪টি কেন্দ্রীয় শ্রম আইন তারা বেতন, শিল্প সম্পর্ক, সামাজিক নিরাপত্তা এবং পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের মত ৪টি নীতিতে মিশিয়ে দিতে চায়।