হাতে আর মাত্র ১১ দিন, বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের সবরকম চেষ্টা চলছে: ইসরো
ল্যান্ডার বিক্রম ও তার পেটে থাকা রোভার প্রজ্ঞান অক্ষত থাকলেও, যোগাযোগ স্থাপন না হলে এই দুয়ের পক্ষে পৃথিবীতে তথ্য পাঠানো সম্ভব নয়।
বেঙ্গালুরু: চাঁদের বুকে ‘হার্ড ল্যান্ড’ করা ‘বিক্রম’ ল্যান্ডারের সঙ্গে গত তিনদিন ধরে নিরন্তর যোগাযোগ স্থাপন করতে সবধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
মঙ্গলবার, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তরফে টুইট করে বলা হয়েছে, বিক্রম ল্যান্ডারকে চিহ্নিত করতে পেরেছে চন্দ্রযান ২-এর অর্বিটার। কিন্তু কোনও যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। টুইটে আরও বলা হয়েছে, ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে সবরকমের প্রচেষ্টা চলছে।
ল্যান্ডারের জীবনকাল মাত্র ১৪ দিন। যা এক চন্দ্রদিবসের সমান। ইতিমধ্যেই মধ্যেই তিনদিন অতিক্রান্ত। অর্থাৎ, যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ইসরোর হাতে আর মাত্র ১১ দিন রয়েছে। প্রসঙ্গত, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার প্রাণপুরুষ বিক্রম সারাভাই-এর নামানুসারে ল্যান্ডারের নামকরণ হয়েছিল। গত শুক্রবার গভীর রাতে চন্দ্রপৃষ্ঠে সফট-ল্যান্ডিং করার কথা ছিল ল্যান্ডারের।
#VikramLander has been located by the orbiter of #Chandrayaan2, but no communication with it yet. All possible efforts are being made to establish communication with lander.#ISRO
— ISRO (@isro) September 10, 2019
শুক্রবার রাত সওয়া একটা নাগাদ চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৫ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত কক্ষপথের অবস্থান থেকে অবতরণ শুরু করে ল্যান্ডার। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ২.১ কিলোমিটার পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। ৩,৮০,০০০ কিলোমিটার (পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব) পাড়িও দিয়ে ফেলেছে বিক্রম ল্যান্ডার। কিন্তু, তারপরই ঘটে ছন্দপতন। ল্যান্ডার যখন চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ২.১ কিলোমিটার দূরে, তখনই আচমকা ইসরোর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ল্যান্ডারের। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গতিবেগে অবতরণ করে ল্যান্ডার। যার যেরে তা হার্ড ল্যান্ড করে। ইসরো চেয়ারম্যান কে শিবন আগেই জানিয়েছিলেন, অবতরণের পর্বটি অত্যন্ত উত্তেজক। বিশেষ করে, সফট ল্যান্ডিংয়ের শেষ মুহূর্তহগুলি ভীষণই আতঙ্কের। কারণ, কেউ জানে না কী হবে। ওই সময়ে ল্যান্ডারের ওপর কারও নিয়ন্ত্রণ থাকে না। কিন্তু, কী অবস্থায় রয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম? ইসরোর তরফে এই নিয়ে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য বা তথ্য দেওয়া হয়নি। তবে, সংস্থার এক বিজ্ঞানীর দাবি, ল্যান্ডারটি অক্ষত থাকলেও হেলে রয়েছে। অর্থাৎ, সরাসরি চার পা একসঙ্গে চাঁদের মাটি ছোঁয়নি। বিজ্ঞানীদের মতে, যেভাবে ল্যান্ডারটি হেলে রয়েছে, তাতে এই পরিস্থিতিতে যোগাযোগ স্থাপন করাটা কঠিন। অর্থাৎ, হয়ত ল্যান্ডার বিক্রম ও তার পেটে থাকা রোভার প্রজ্ঞান অক্ষত থাকলেও, যোগাযোগ স্থাপন না হলে এই দুয়ের পক্ষে পৃথিবীতে তথ্য পাঠানো সম্ভব নয়।