বেহাল অর্থনীতি, ‘অসুখ’ সারাতে মোদি সরকারকে পাঁচ দাওয়াই ডঃ মনমোহনের
মনমোহনের পাঁচ দাওয়াই কী কী?
নয়াদিল্লি: বিগত ছয় বছরে দেশের সার্বিক আর্থিক বৃদ্ধির হার সর্বনিম্ন ৫ শতাংশে এসে ঠেকেছে। জিডিপি হারও তলানিতে। দেড় দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। গাড়ি শিল্প ধুঁকছে। চাকরি নেই, বাড়ছে বেকার সমস্যা। এই বেহাল অর্থনীতিই গোটা দেশে সঙ্কটকালীন অবস্থার জন্ম দিয়েছে। আর এই কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিংহ দায়ী করলেন মোদি সরকারের নীতিকেই। ‘বিমুদ্রাকরণ’ এবং ‘গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্সের ত্রুটিপূর্ণ বাস্তবায়ন’, এই দুই কারণেই বিগত কয়েক বছরে ধাক্কা খেয়েছে ভারতীয় অর্থনীতি, মত মনমোহন সিংহর।
তাঁর পরামর্শ, এই অবস্থায় সরকার শুধু শিরোনাম তৈরিতে ব্যস্ত না থেকে, অর্থনৈতিক পরিকাঠামো নিয়ে পরিকল্পনা করলে তা মঙ্গলময় হবে। দেশের এক হিন্দি ভাষার সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মোদি সরকারের উচিত শিরোনাম তৈরির অভ্যাস থেকে বেরিয়ে এসে অর্থনৈতিক কাঠামো পুনর্গঠন নিয়ে ধারাবাহিকভাবে পরিকল্পনা করা। অনেক সময় অতিবাহিত হয়েছে, এখন থেকেই পরিকল্পনা শুরু করা উচিত।” জিএসটি-কে ‘যুক্তিগ্রাহ্য’ করার পক্ষেও সওয়াল করেন ডঃ মনমোহন। একইসঙ্গে দেশের ‘অসুখ’ সারাতে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারকে পাঁচ দাওয়াইয়ের পরমার্শও দিয়েছেন তিনি।
Former PM & world renowned economist, Dr. Manmohan Singh talks about the current state of the economy. #FixTheEconomy pic.twitter.com/U937m3gMPZ
— Congress (@INCIndia) September 12, 2019
কী কী দাওয়াইয়ের পরামর্শ দিলেন দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা দু’বারের প্রধানমন্ত্রী?
১. লাইনচ্যুত অর্থনীতি-কে পথে আনতে জিএসটি-কে বাস্তবোচিত করতে হবে। এতে কিছু সময় পর্যন্ত রাজস্ব ঘাটতি হলেও এটা করতেই হবে, মত মনমোহনের।
২. কৃষিকে চাঙ্গা করে গ্রামীণ উপভোক্তাদের পুনর্জীবিত করা। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস ইস্তেহারের কথা বলে মনমোহন বলেন, সেখানে ‘বিকল্পের’ কথা উল্লেখিত আছে। কৃষির বাজারকে উন্মুক্ত করলেই মানুষের হাতে টাকা আসবে, মত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর।
৩. বাজারে পুঁজির বিন্যাসে বাড়াতে হবে জোগান।
৪. শ্রমিকের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কযুক্ত শিল্প যেমন- বস্ত্র, গাড়ি, ইলেকট্রনিক্স এবং আবাসনের পুনরুজ্জীবন প্রয়োজন। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে ঋণের বিষয়টি আরও সহজ করতে হবে।
৫. আমেরিকা ও চীনের বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে বিকল্প পথ খুঁজে বার করতে হবে। এই পথ অনুসরণ করলেই আগামী তিন-চার বছরের মধ্যে আমাদের সার্বিক বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।