ভারতের থেকে প্রায় ৩ কোটি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কিনছে আমেরিকা, মোদির প্রশংসা করে জানালেন ট্রাম্প
গতকাল, হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, ভারত যদি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন না পাঠায় তাহলে তার ফল ভুগতে হবে।
ওয়াশিংটন: গতকাল ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। বুধবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানালেন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের প্রায় ৩ কোটি ডোজ ভারত থেকে কিনছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে, আমেরিকায় বাড়তে থাকা কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের চিকিৎসায় এই অ্যান্টি-ম্যালেরিয়া ওষুধ বিক্রির অনুমতি দিয়ে তাঁকে সাহায্য করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে "গ্রেট" বলে উল্লেখ করে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে ফোনে কথা হয়েছিল। সেই সময়, মোদিকে যত দ্রুত সম্ভব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আমেরিকায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন পাঠাতে অনুরোধ করেছিলেন ট্রাম্প। প্রসঙ্গত, বিশ্বে, ভারতই হল এই অষুধের প্রধান প্রস্তুতকারক। তবে গতকাল, হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, ভারত যদি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন না পাঠায় তাহলে তার ফল ভুগতে হবে।
সম্প্রতি, কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য ওষুধ হিসেবে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনকে চিহ্নিত করেছে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। ইতিমধ্যেই, নিউইয়র্কে প্রায় দেড় হাজারের বেশি করোনা রোগীকে তা দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে, এই ওষুধে অতিবাচক ফল মিলেছে। যার পরই, ২.৯ কোটির বেশি ডোজ ভারত থেকে আমদানি করেছে মার্কিন প্রশাসন।
ট্রাম্প বলেন,
মঙ্গলবার, আমেরিকায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের রফতানিতে অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। প্রসঙ্গত, বর্তমানে, কোভিড-১৯ এর হটস্পটে পরিণত হয়েছে আমেরিকা। মঙ্গলবার রাতেই নতুন করে চার লক্ষ মার্কিনী করোনা পজিটিভ হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। ট্রাম্প বলেন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন হল একটি শক্তিশালী ম্যালেরিয়ার ওষুধ। শয়ে শয়ে মার্কিনীদের ওপর এখন এই ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
আদপে, এই ওষুধ ভীষণই পুরনো এবং সহজলভ্য ও কম মূল্যের। এখন কোভিড-১৯ মোকাবিলায় এই ওষুধে সাড়া মেলায় বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন। আমেরিকার পাশাপাশি, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল থেকেও এই ওষুধের অনুরোধ এসেছে। যে কারণে, ভারত এখন নতুন করে রফতানি নিষেধাজ্ঞা নীতি খতিয়ে দেখছে।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ভূমিকার কথা প্রমাণিত হতেই ভারত এই ওষুধ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যাতে দেশের বাজারে এই ওষুধের জোগানে না টান পড়ে এবং দেশে যথেষ্ট পরিমাণে এই ওষুধ মজুত থাকে।
বর্তমানে, প্রতি মাসে দেশে ৪০ টন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরি করার ক্ষমতা রয়েছে। সংখ্যার দিক দিয়ে বলতে গেলে ২০০ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট ২০ কোটি। প্রয়োজনে এই উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোও যেতে পারে। শুধু ম্যালেরিয়া নয়, রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস, লুপাসের চিকিৎসাতেও এই ওষুধ কার্যকরী। এই কারণে, দেশে সবসময় প্রচুর পরিমাণ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন মজুত থাকে।