Tripura: ত্রিপুরায় পুর ভোটের আগে ফের অশান্তি, আগরতলায় তৃণমূলের পতাকা-ফেস্টুন ছেঁড়ার অভিযোগ
Tripura Political Chaos: আগরতলা শহরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বটতলা বাজার এলাকায় তৃণমূলের পতাকা-ফেস্টুন ছেঁড়ার অভিযোগ উঠল।
প্রসেনজিৎ সাহা, আগরতলা: ত্রিপুরায় পুর ভোটের আগে ফের অশান্তি। আগরতলা শহরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বটতলা বাজার এলাকায় তৃণমূলের পতাকা-ফেস্টুন ছেঁড়ার অভিযোগ উঠল।
অন্যদিকে, চারটি মামলায় আজ কুণাল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ত্রিপুরা পুলিশ। সূত্রের খবর, আগরতলা থেকে দূরে পুলিশ ফাঁড়িতে চলবে জিজ্ঞাসাবাদ। একসঙ্গে চারটি থানার পুলিশ কুণাল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে, খবর সূত্রের।
পুরভোটের আগে যেন অশান্তি থামার নাম নেই ত্রিপুরার আগরতলায়। বুধবার রাতেও তৃণমূল প্রার্থীর বাড়িতে চলল তাণ্ডব। বাইরে থেকে ক্রমাগত দরজায় ধাক্কা। কোনওরকমে দরজা আটকে আতঙ্কে আর্তনাদ তৃণমূল প্রার্থীর পরিবারের সদস্যদের। আগরতলার ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অপর্ণা বিশ্বাসের অভিযোগ, প্রার্থীপদ কেন প্রত্যাহার করেননি, এই প্রশ্ন তুলে বুধবার রাতে দুষ্কৃতীরা তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়। ভাঙচুর করা হয় বিভিন্ন আসবাব। বাদ যায়নি বাইক, স্কুটার, ফুলের টব। অভিযোগ, বাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টাও করা হয়।
এই ঘটনা নিয়ে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ত্রিপুরা তৃণমূলের স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক। এ নিয়ে বিজেপির কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছয় পুলিশ।
পশ্চিমবঙ্গের গত পঞ্চায়েত ভোটে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি যে অভিযোগ তুলেছিল, এবার বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় ঠিক সেই অভিযোগই উঠছে পদ্ম শিবিরের বিরুদ্ধে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একের পর এক পুরসভা দখল করেছে বিজেপি। মনোনয়ন তুলে নিয়ে, বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। ২৫ নভেম্বর ত্রিপুরার একটি কর্পোরেশন, ১৩টি পুরসভা এবং ৬টি নগর পঞ্চায়েতের ভোট। তিনটি স্তর মিলিয়ে মোট ৩৩৪টি ওয়ার্ডে ভোট। কিন্তু, ভোটের আগেই ১১২টি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেছে বিজেপি। অর্থাৎ প্রায় ৩৪ শতাংশ ওয়ার্ড ভোটের আগেই বিজেপির ঝুলিতে চলে গেছে।
ত্রিপুরায় আগরতলাই একমাত্র কর্পোরেশন। আগরতলা কর্পোরেশনে মোট আসন ৫১টি। তার মধ্যে ৮ জন বিরোধী প্রার্থী ইতিমধ্যে মনোনয়ন পেশের পরও তা প্রত্যাহার করেছেন। এর মধ্যে ৪ জন সিপিএমের, ১ জন ফরওয়ার্ড ব্লকের, ২ জন কংগ্রেসের এবং একজন নির্দল প্রার্থী। ১৩টি পুরসভার মধ্যে ৫টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেছে বিজেপি। এই পুরসভাগুলি হল রানিরবাজার, মোহনপুর, বিশালগড়, উদয়পুর এবং শান্তিরবাজার। এছাড়া ২৫ আসন বিশিষ্ট ধর্মনগর পুরসভায় ১০ জন বিরোধী প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। ১৫ আসনের খোয়াই পুরসভায় ৪ জন, ১৫ আসনের তেলিয়ামুড়া পুরসভায় ২ জন, ১৩ আসনের মেলাঘর পুরসভায় ৫ জন বিরোধী প্রার্থী মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন। ৬টি নগর পঞ্চায়েতের মধ্যে দু’টিতে বিজেপি জিতে গেছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। মোট ৩৬ জন বিরোধী প্রার্থী এখনও পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।
বিজেপির সন্ত্রাসের জেরেই প্রার্থীরা মনোনয়ন তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি সিপিএম-কংগ্রেসের। এবারই ত্রিপুরায় প্রথম পুরভোট লড়ছে তৃণমূল। তারাও বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। বিজেপি অবশ্য সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছে। ২৫ নভেম্বর ত্রিপুরা পুরসভায় ভোট। ২৮ নভেম্বর ফল ঘোষণা।