Militants Camouflage : কেউ টোটো চালাত, কেউ কাঠ মিস্ত্রি, কেউ ইলেকট্রিশিয়ান; আড়ালে চলত জঙ্গি কার্যকলাপ; চাঞ্চল্যকর দাবি গোয়েন্দা সূত্রের
Militants Activities: যা দেখে প্রশ্ন উঠছে, আমাদের আশপাশেও এমন ছদ্মবেশে কোনও জঙ্গি লুকিয়ে নেই তো ?
আবির দত্ত ও সৌমিত্র রায়, কলকাতা : কেউ টোটো চালাত। কেউ মুরগি কাটত। কেউ কাঠের মিস্ত্রি। কেউ ইলেকট্রিশিয়ান। তবে, সেটা লোক দেখাতে। আসলে সবাই জঙ্গি। তাও আবার আনসারুল্লা বাংলা টিমের মতো ভয়ঙ্কর জঙ্গি সংগঠনের সদস্য়। অসমের কোকরাঝাড়, ধুবড়ি থেকে একের পর এক জঙ্গিকে গ্রেফতারের পর সামনে এসেছে এই চাঞ্চল্য়কর তথ্য়। যা দেখে প্রশ্ন উঠছে, আমাদের আশপাশেও এমন ছদ্মবেশে কোনও জঙ্গি লুকিয়ে নেই তো ?
বছরের পর বছর একই এলাকায় থেকেছে... মিশেছে। কিন্তু, আচমকা তাদেরই জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে পুলিশ। অসমের কোকরাঝাড়, ধুবড়ি থেকে আনসারুল্লা বাংলা টিমের একের পর সদস্যকে গ্রেফতারের পর, এখন কার্যত আকাশ থেকে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ABT-র ধৃত ১২ জন জঙ্গির অন্যতম নুর ইসলাম মণ্ডল। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, এলাকায় সে টোটো চালালেও, পিছনে পুরোদমে জড়িত ছিল জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে। এবারই প্রথম নয়, এর আগে ২০১৬ ও ২০২১ সালেও গ্রেফতার হয়েছিল নুর ইসলাম। অসমে সেই ধৃত জঙ্গির এলাকায় পৌঁছে গিয়েছে এবিপি আনন্দ। শুধু এই তদন্তে তার বিষয়ে জানা গেছে, তাই নয়। পুলিশ সূত্রে দাবি, ২০১৪ সালে বর্ধমান বিস্ফোরণের সময়েও স্থানীয় পুলিশ এসে তদন্ত চালিয়েছিল। তারপরে গ্রেফতারও হয়। ২০২১ সালে, বাড়ির কাছ থেকে পাওয়া কাগজে দেখা যাচ্ছে, এক্সপ্লোসিভ সাসটেন্ট অ্যাক্টে এবং অস্ত্র আইনের একাধিক ধারাতেও মামলা হয়েছিল। দিনের পর দিন এই ধরনের অভিযোগ কেন তার নামে ছিল? কী পরিকল্পনা ছিল, কারা ছিল তার পিছনে ? খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা।
কোকরাঝাড়ে ধৃত নুর ইসলামের প্রতিবেশী জহিরুল ইসলাম বলেন, এর আগেও পুলিশ ধরেছিল।
অসম STF সূত্রে খবর, নুর ইসলাম মণ্ডল নামে এক জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ২৫ ডিসেম্বর খোঁজ মেলে আব্দুল জাহির শেখ-সহ দুই জঙ্গির।
এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন বলছে, নুর ইসলাম টোটো চালাত, কাঠমিস্ত্রি ছিল আব্দুল জাহির শেখ। বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম মেরমত করত হামিদুল ইসলাম। কিন্তু এতো সামনে থেকে দেখা! আসলে পিছনে কী চলত ? ধৃত হামিদুলের ভাই রুস্তম আলি বলে, 'এখানে মোটামুটি ১৫-১৬ বছর হয়েছে আসা। এখানে আসার পর আমরা ডিশের কাজ করতাম। টিভি লাগানোর কাজ করতাম। তারপর হঠাৎ একদিন দাদাকে বাজার টাউন থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেল। এটা ১৬ দিন হল। তারপর খবরে দেখতে পাই জেহাদির সঙ্গে জড়িত আছে।'
বিভিন্ন পেশার আড়ালে লুকিয়ে থেকে জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর উদাহরণ নতুন নয়। ছদ্মবেশে নাশকতামূলক কাজকর্ম চালানোর উদাহরণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বারবার সামনে এসেছে ! জঙ্গিরাও দীর্ঘদিন ধরে সেই পথেই হাঁটে ! আর তাই চিন্তাটা বাড়ে, যে, আমাদের আশেপাশেও কোনও জঙ্গি ঘুরে বেড়াচ্ছে নাতো ?