Barbie: সৌন্দর্যের কি মাপকাঠি হয়? পুতুলখেলায় নয়া দিগন্ত, এল ডাউন সিনড্রোমের বার্বি
Down Syndrome: তানুগতিকতার ধারায় পরিবর্তন আনতে চলেছে ম্যাটেল। শিশুমনে যাতে সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়, তার জন্যই এমন উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলস: ঘরকন্নার মতো পিতৃতান্ত্রিক সমাজে পুতুলখেলার সঙ্গেও অবধারিত ভাবে নাম জড়িয়ে গিয়েছ মেয়েদের। বিশ্বায়নের যুগে ইদানীং তাতে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে বটে, তবে এখনও অনেক দূর যেতে হবে (Barbie)। সেই পথেই আরও এক কদম এগোল জনপ্রিয় পুতুল তৈরির সংস্থা ম্যাটেল। এ বার ডাউন সিনড্রোমের (Down Syndrome) বার্বি বাজারে আনতে চলেছে তারা।
শিশুমনে সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা তৈরিই লক্ষ্য
সমাজে সকলের সমানাধিকার, বৈচিত্রর মধ্যে ঐক্যের পক্ষে মুখে সওয়াল করলেও, বাস্তবে ছবিটা একেবারেই উল্টো। সেই গতানুগতিকতার ধারায় পরিবর্তন আনতে চলেছে ম্যাটেল। শিশুমনে যাতে সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়, তার জন্যই এমন উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে (Barbie with Down Syndrome)।
বার্বির গড়ন নিয়ে এককালে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল ম্যাটেলকে। কিন্তু গত কয়েক বছরে নিজেদের আমূল বদলে নিয়েছে তারা। কৃষ্ণবর্ণা বার্বি থেকে কেন, এক এক করে রক্ষণশীলতার শৃঙ্খল ভাঙতে ভাঙতে এগিয়েছে। এ বার আরও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ করতে চলেছে তারা।
‘বার্বি ফ্যাশনিস্তাজ’ লাইনের আওতায় নয়া ডাউন সিনড্রোম পুতুল আনছে ম্যাটেল। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে ছুঁৎমার্গ কাটিয়ে উঠতে, সৌন্দর্যের ধরাবাঁধা সংজ্ঞার বাইরে বেরিয়ে আসতে এবং তা নিয়ে শিশুমনে সচেতনতা গড়ে তোলাই তাদের লক্ষ্য বলে জানিয়েছে ন্যাটেল।
ডাউন সিনড্রোমের পুতুল তৈরি করতে, তার জামা, গহনা, অন্য়ান্য সামগ্রীর জন্য আমেরিকার ন্যাশনাল ডাউন সিন্ড্রোম সোসাইটির সঙ্গে ম্যাটেল কাজ করছে বলে জানা গিয়েছে, যাতে প্রতিরূপ তৈরিতে কোনও রকম অসুবিধা না থেকে যায়।
ডাউন সিনড্রোম জিনগত সমস্যা। এ ক্ষেত্রে রোগীর বুদ্ধি লোপ পায়, শেখার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। বাইরে বেরোলে স্থিরদৃষ্টিতে পড়তে হয়। তাই ম্যাটেলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে আমেরিকার ন্য়াশনাল ডাউন সিনড্রোম সোসাইটি। তাদের বক্তব্য, "সমাজের জন্য এই পদক্ষেপ অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। এই প্রথম ডাউন সিনড্রোমের শিশুরা তাদের মতোই দেখতে পুতুল নিয়ে খেলতে পারবে। সমাজে সকলের সার্বিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রেও এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ।"
ডাউন সিনড্রোম পুতুলের যে রূপ এখনও পর্যন্ত যে সামনে আনা হয়েছে, তাতে ডাউন সিনড্রোম বোঝানোর প্রতীকচিহ্ন, অর্থোটিক স্নিকার্স পায়ে দেখানো হয়েছে পুতুলটিকে, ডাউন সিনড্রোম রোগীদের অনেক ক্ষেত্রে যা পরতে দেখা যায়। ইতিমধ্যেই বার্বির নয়া রূপ প্রশংসিত হয়েছে।
১৯৫৯ সালে প্রথম বার বাজারে বার্বির আবির্ভাব ঘটে। তার পর দীর্ঘ কয়েক দশক পুতুলের গায়ের রং ছিল হালকা। গড়ন ছিল তন্বী,মাথার চুল ব্লন্ড। পুতুলের সরু কোমর, উন্নত বক্ষযুগল, পায়ের হাইহিল জুতো, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীসমাজের জন্য সৌন্দর্যের মাপকাঠি ঠিক করে দিচ্ছিল বলে অভিযোগও ছিল দীর্ঘ দিনের।
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা
সমাজে সৌন্দর্যের মাপকাঠি নিয়ে সচেতনতা যত বাড়তে থাকে, ততই কমতে থাকে এককালে হু হু করে বিকোনো বার্বির জনপ্রিয়তা। বিক্রিবাটাতেও প্রভাব পড়ে। তাতেই ২০১৬ সাল থেকে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের ঘষেমেজে নিতে তৎপর হয় ম্যাটেল। তার পর থেকে কৃষ্ণবর্ণা, প্লাস সাইজের বার্বি নিয়ে হাজির হয়েছে ম্যাটেল।