Pahalgam : 'দেশের মহিলাদের দুর্বল ভাবি না', পহেলগাঁও-মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় সামলাতে রাতারাতি ইউটার্ন বিজেপি MP-র
Pahalgam Terror Attack: সারা বিশ্ব যখন পহেলগাঁও হামলার তীব্র নিন্দা করছে, সেখানে নরেন্দ্র মোদির দলেরই এক সাংসদের মুখে পহেলগাঁওয়ের স্বামীহারাদের সমালোচনা !

কলকাতা : পহেলগাঁও হামলাতে ধর্ম বেছে বেছে খুন করা হয়েছিস নিরীহ পর্যটকদের। এক মুহূর্তে সিঁদুর মুছে গিয়েছিল বহু মহিলার। সেই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের জবাব দিতেই ভারতের প্রত্যাঘাতের নাম ছিল 'অপারেশন সিঁদুর'। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এই অপারেশন নিয়ে বারবার বলেছেন, 'যারা সিঁদুর মুছতে গেছিল, তাদের মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছি। যারা ভারতের রক্ত ঝরাত, আজ পাই পাইয়ের হিসাব দিয়েছে। এটা শোধ-প্রতিশোধের খেলা নয়, এটা ন্যায়ের নতুন রূপ।' সারা দেশ যখন...সারা বিশ্ব যখন পহেলগাঁও হামলার তীব্র নিন্দা করছে, সেখানে নরেন্দ্র মোদির দলেরই এক সাংসদের মুখে পহেলগাঁওয়ের স্বামীহারাদের সমালোচনা ! পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় এবার অসংবেদনশীল মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। মহিলাদের মধ্যে বীরাঙ্গনার মতো স্পৃহা ছিল না বলেই তাঁদের স্বামীদের গুলিবিদ্ধ হতে হয়েছে বলে মন্তব্য করে ছিলেন রামচন্দ্র জ্যাংরা। তারপরই সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এবার নিজের মন্তব্যের সাফাই দিতে গিয়ে বললেন, তিনি মোটেই স্বামীহারাদের অপমান করতে চাননি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ‘বিকৃত করে তুলে ধরা’ হয়েছে তাঁর মন্তব্য !
যদিও তাঁর এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ বিরোধীরা। বিরোধী দলগুলির দাবি, সাংসদ রামচন্দ্রকে অবিলম্বে বরখাস্ত করা উচিত। বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সমালোচনার মুখে পড়ে বলছেন, কাউকে অপমান করার কোনও ইচ্ছা তাঁর ছিল না। তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করে তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘আমি আমার দেশের মহিলাদের কোনওভাবেই দুর্বল মনে করি না। আমরা সেইসব মহিলাদের সঙ্গে আছি, যারা পহেলগাঁও হামলায় তাঁদের স্বামীদের হারিয়েছেন। আমরা তাঁদের পরিবারের সঙ্গে আছি। তবুও, যদি আমি কারও অনুভূতিতে আঘাত করে থাকি, তাহলে আমার ক্ষমা চেয়ে নিতে কোনও দ্বিধা নেই।’’
দেশের সংসদের এক প্রতিনিধি হয়ে, নরেন্দ্র মোদির দলের এক সাংসদ হয়ে, রামচন্দ্র জ্যাংরার মন্তব্য করেছিলেন,'পহেল গাঁওতে সেদিন মহিলাদের বীরাঙ্গনার মতো ভাব ছিল না। সেই স্পৃহা , সেই হৃদয় ছিল না। এইজন্য তাঁদের স্বামীদের গুলিবিদ্ধ হতে হয়েছে।' পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলা সারা জীবনের মতো ক্ষতচিহ্ন এঁকে দিয়েছে বহু পরিবারের মনে। জীবনে তৈরি হয়েছে চিরশূন্যতা। বিয়ের মাত্র সাতদিনের মধ্যে চোখের সামনে স্বামীকে জঙ্গিদের বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে যেতে দেখেছেন হিমাংশী নরওয়াল। স্বামীকে হারিয়ে জীবনটা ওলটপালট হয়ে গিয়েছে বিতান অধিকারী, সমীর গুহর স্ত্রীর। অথচ, এই স্বামীহারা মহিলাদের নিয়েই কিনা অসংবেদনশীল মন্তব্য় করলেন বিজেপির হরিয়ানার এক রাজ্য়সভার সাংসদ। মোদি সরকার যখন পাকিস্তানের ওপর প্রত্য়াঘাত প্রসঙ্গে, বারবার মহিলাদের সিঁদুর মোছার যন্ত্রণার কথা বলছেন, তখন পহেলগাঁওয়ের ঘটনা নিয়ে স্বামীহারা মহিলাদেরকেই কার্যত দায়ী করলেন বিজেপি সাংসদ রামচন্দ্র জ্য়াংরা।
এই বিজেপি নেতার ব্যাখ্যা, 'ওখানে যে আমাদের বীরঙ্গনারা দাঁড়িয়ে ছিলেন, যাঁদের কপালের সিঁদুর মুছে ফেলা হয়েছে...যদি তাঁরা অহল্যাবাইয়ের ইতিহাস পড়তেন, তবে তাঁদের সামনে তাঁদের স্বামীদেরকে কেউ গুলি মারতে পারত না এমনকী, তাঁরাও যদি শহিদ হয়ে যেতেন... বীরাঙ্গনার মতো ভাব ছিল না। সেই স্পৃহা , সেই হৃদয় ছিল না। এইজন্য তাঁদেরকে গুলিবিদ্ধ হতে হয়েছে।' অর্থাৎ বিজেপি সাংসদের স্পষ্ট দাবি, মহিলাদের সেই স্পৃহা ছিল না বলেই, তাঁদের স্বামীদের প্রাণ হারাতে হল। এমন বিতর্কিত মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় দেশ জুড়ে। কড়া সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।





















