আয়কর অভিযানে কেন সিআরপি, রাজনাথকে ‘পত্রবোমা’ মমতার
কলকাতা: আয়কর দফতরের অভিযানের জন্য ১৫ জন সিআরপিএফ জওয়ান পাঠিয়েছে নয়াদিল্লি। আর তা নিয়েই এবার ফের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছাড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে তিনি দাবি করেছেন, এই সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক। তা এখনই প্রত্যাহার করতে হবে। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, আমাদের নজরে এসেছে, আয়কর কর্তাদের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ১৫ জন সিআরপি জওয়ান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু, এনিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। বেআইনি, অসাংবিধানিক এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী এই সিদ্ধান্তের কড়া আপত্তি জানাচ্ছি। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ভেঙে দিতে চাইছে। দেশজুড়ে গৈরিকিকরণ চলছে। প্রতিবাদ করছি। এমাসের শুরুতে রাজ্যের বিভিন্ন টোল প্লাজায় সেনার সমীক্ষা কর্মসূচি দেখে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ক’দিনের মধ্যে এই ঘটনা দেখে তাঁর সুর ফের সপ্তমে উঠেছে। রাজনাথ সিংহকে লেখা চিঠিতে তিনি লিখেছেন, সংবিধানের কেন্দ্র ও রাজ্যের এক্তিয়ার স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা আছে যে ‘পাবলিক অর্ডার’ এবং ‘পুলিশ’ রাজ্যের বিষয়। একমাত্র কোনও রাজ্য অনুরোধ করলে, তবেই কেন্দ্র সেখানে তাদের বাহিনী পাঠাতে পারে। আয়কর দফতর সূত্রে দাবি, ৮ নভেম্বরের পর অভিযান চালানোর জন্য একাধিক বার পুলিশ চেয়ে রাজ্য সরকার ও কলকাতা পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়। কিন্তু কোনও সাহায্য মেলেনি। কলকাতা পুলিশের পাল্টা দাবি, ৩ দিন আগে তাদের কাছে বাহিনী চায় আয়কর দফতর। প্রয়োজন মতো পরিস্থিতি অনুযায়ী তা দেওয়া হয়েছে। রাজনাথ সিংহকে লেখা চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এক্ষেত্রেও কেন্দ্রের কোনও সংস্থা যদি অনুরোধ করে, তাহলে রাজ্য সরকার এবং পুলিশ তাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত সাহায্য করবে। এই ইস্যু নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, মাথা উঁচু করে আন্দোলন করছেন। সেজন্যই এই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে করছেন। পাল্টা বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, মমতা কালো টাকা রক্ষা করতে চাইছেন। সেজন্য পুলিশ লাগবে। তিনি যদি না দেন, তাহলে কেন্দ্রের পুলিশ আসবে। মোদী-মমতা সংঘাতের আবহে কী বলছে সিপিএম? বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর মতে, কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা চাইতেই পারে। কেন্দ্র-রাজ্য এই চাপানউতোরের মাঝে শুক্রবার সিআরপিএফ জওয়ানদের নিয়েই তল্লাশি অভিযান চালায় আয়কর দফতর। ব্রেবোর্ন রোডে অনিরুদ্ধ এন মেহতা নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৩ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার অচল নোট।