শহরের ৮টি ওয়ার্ডে ডায়রিয়ায় কাবু ৭০০, জিএসটি দেখিয়ে বোতলবন্দি জলের চড়া দাম নিচ্ছে বিক্রেতারা, অভিযোগ

কলকাতা: ডেঙ্গির পর কি এবার ডায়রিয়া! কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, দক্ষিণ কলকাতায় ৮টি ওয়ার্ডে ছড়িয়েছে সংক্রমণ। ৯৬, ১০১, ১০২, ১০৭, ১০৮, ১০৯, ১১০, ১১১ নম্বর ওয়ার্ডে এখন ডায়রিয়া-আতঙ্ক। দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা যেমন যাদবপুর, বাঘাযতীন, পাটুলি, মুকুন্দপুর, গড়িয়া, বৈষ্ণবঘাটার বহু বাসিন্দা শুক্রবার রাত থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনেকেই ছোটেন বাঘাযতীন হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শনিবার থেকে রবিবার বিকেল চারটে চারটে পর্যন্ত, শুধু বাঘাযতীন হাসপাতালের এমার্জেন্সিতে ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে যান ৭০০ জন। কলকাতা পুরসভা এই সংখ্যা মানতে নারাজ। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, বাঘাযতীন হাসপাতালে শুক্রবার রাত থেকে রবিবার পর্যন্ত, ৪২৯ জন আসে। এর মধ্যে ৪৩ জন এখনও ভর্তি। খুব মেজর কিছু হচ্ছে না। তবে অনেকেরই সংক্রমণ হয়েছে। তবে কী থেকে সংক্রমণ বোঝা যাচ্ছে না। উপসর্গ প্রায় সবারই এক। পেট ব্যথা, বমি, পায়খানা। ভুক্তভোগীদের দাবি, পুরসভার জল খেয়েই এই সমস্যা। কলকাতা পুরসভার জল বিভাগ মেয়রের হাতে। তিনি জল নিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সাফাই, অনেক ওয়ার্ডের জল পরীক্ষা করা হয়েছে। কোনও কিছু পাওয়া যায়নি। জলের থেকে হলে তো একই পরিবার সবার হতো। বিরোধী দলের কাউন্সিলররা মেয়রের এই দাবি মানতে নারাজ। ১০২ ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর রিঙ্কু নস্কর বলেন, আমার এলাকায় অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। মেয়র যতই আপত্তি করুন, আমার মনে হয় জল থেকেই হয়েছে। উনি জলের দায়িত্বে। আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। যাদবপুরের বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, ধাপার জল থেকে হচ্ছে। আবার, বাঘাযতীন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও অনেক প্রশ্ন উঠছে রোগীর পরিবারের মধ্যে। অনেকের দাবি, বাঘাযতীনে কোনও চিকিৎসা হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে অনেক রোগীকে আইডি হাসপাতালে রেফার করছে বাঘাযতীন হাসপাতাল বলেও জানা গিয়েছে। যা ঘিরে রোগীর পরিজনরা আশঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু, একের পর এক ওয়ার্ডে এই সংক্রমণের কারণ কী? জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞান বেরা বলেন, নির্দিষ্ট জায়গায় শরীর খারাপ হচ্ছে নিকাশী ও পানীয় জলের যে লাইনে সেখানে কোনও দূষণ হয়ে থাকতে। পুরসভা সূত্রে খবর, বৈষ্ণবঘাটা, পাটুলির মতো বিভিন্ন জায়গায় নিকাশি ও জল সরবরাহের পাইপ লাইনের মধ্যে ব্যবধান কম। সেখানে কোথাও জলের লাইনে ফাটল ঘটে বিপত্তি হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুরসভা। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে ওআরএস, জল পরিশোধনের ট্যাবলেট বিলি করা হচ্ছে। জলের নমুনাও পরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, যে সব এলাকায় সংক্রমণ, সেখানকার বাসিন্দাদের জল ফুটিয়ে খেতে হবে। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এখন ঘোর চিন্তায়। এদিকে, ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যাওয়ায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বোতলবন্দি পানীয় জল। এই এলাকাগুলিতে জল সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলেও দাবি এলাকাবাসীর। সেই সুযোগেই দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এলাকাবাসী বলছেন, অনেক দোকানদার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আগে কুড়ি টাকায় কুড়ি লিটারের জার। এখন দাম চল্লিশ টাকা। অন্যদিকে বিক্রেতাদের বক্তব্য, জিএসটির কারণের দাম বেড়েছে জলের।






















