ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপের সঙ্গে প্যান-আধার সংযুক্তিকরণের আর্জি খারিজ দিল্লি হাইকোর্টে
আদালতের মতে, ভুয়ো অ্যাকাউন্ট বাতিল করতে গিয়ে অহেতুক অধিক পরিমানে থাকা আসল অ্যাকাউন্টের ব্যক্তিগত তথ্য বিদেশে চলে যাবে।
নয়াদিল্লি: ফেসবুক, টুইটার সহ জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের সঙ্গে প্যান, আধার বা ভোটার কার্ডের সংযুক্তিকরণে সম্মতি দিতে অস্বীকার করল দিল্লি হাইকোর্ট। আদালতের মতে, ভুয়ো অ্যাকাউন্ট বাতিল করতে গিয়ে অহেতুক অধিক পরিমানে থাকা আসল অ্যাকাউন্টের ব্যক্তিগত তথ্য বিদেশে চলে যাবে। মঙ্গলবার, প্রধান বিচারপতি ডি এন পটেল ও বিচারপতি সি হরিশঙ্করের ডিভিসন বেঞ্চ জানিয়েছে-- ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড সহ বিভিন্ন পরিচয়পত্রকে জুড়তে হলে নীতি নির্ধারণ করতে হবে, অথবা কেন্দ্র মারফৎ বর্তমান আইনের সংশোধন করা প্রয়োজন। যা এই আদালতের পক্ষে সম্ভব নয়। বিচারপতিদ্বয় বলেন, আদালতের ভূমিকা হল আইন যেমন রয়েছে, সেই অনুযায়ী রায় দেওয়া। আইন কী হওয়া উচিত বা কী হতে পারে, সেই নিয়ে আদালতের কোনও চিন্তা নেই। তবে, বিরল কয়েকটি ক্ষেত্রে, আইনের কোনও ফাঁকফোঁকর থাকলে, আদালত সেখানে নিজ দায়িত্বে তা ভরাট করতে পারে। বিচারপতিরা আরও বলেন, অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার-প্যান সংযুক্তিকরণের বিষয়টি কোনও ‘আইনের ফাঁক’ নয়। এটা গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়, যেখানে কেন্দ্রের সদর্থক ভূমিকা নেওয়া উচিত। আমাদের মতে, এই আইনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। কারণ, এর সঙ্গে ভুয়ো অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আসল অ্যাকাউন্টধারীদের স্বার্থ ও তথ্যও জড়িত। এদিন বেঞ্চের তরফে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়, যেহেতু এই মর্মে আইন কমিশনের রিপোর্ট খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র, তাই এই মুহূর্তে আদালত কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে কোনও নির্দেশিকা জারি করবে না। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়ার আর্জি নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এদিন সেই দাবি খারিজ করতে গিয়ে আদালত এই মন্তব্য করে। তবে, কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে একটি পরামর্শ দেয় দিল্লি হাইকোর্ট। বেঞ্চের মতে, এই সংক্রান্ত আইন করতে গিয়ে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। কারণ, ভুয়ো অ্যাকাউন্টধারীদের পাশাপাশি আসলদেরও স্বার্থও এক্ষেত্রে জড়িত। প্রসঙ্গত, বিজেপি নেতা অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায় এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে দাবি করেন, অন্তত ২০ শতাংশ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টই ভুয়ো। তিনি আরও জানান, যে কোনও ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্য কারও নামে একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলতেই পারে। ফলে, কিছু একটা করা দরকার। তাঁর আরও দাবি, ভুয়ো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ভুয়ো ও পেইড নিউজ প্রচারিত হয়ে থাকে। বিশেষ করে নির্বাচনের সময়। উত্তরে আদালত জানিয়েছে, ২০ শতাংশ ভুয়ো অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করতে আসল অ্যাকাউন্টধারীদের তথ্যও প্রয়োজন ছাড়াই বিদেশে চলে যাবে। এর আগে, মাদ্রাজ হাইকোর্টও একই আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল। কারণ, আদালতের মনে হয়েছিল, বিষয়টি আধার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা লঙ্ঘন করছে।