এক্সপ্লোর

Forest Conservation (Amendment) Bill: সীমান্ত থেকে ১০০ কিমি পর্যন্ত সংরক্ষিত বনভূমি নিধনে সায়! অরণ্যের অধিকার আইনে সংশোধন, বিল পাস সংসদে

Forest Conservation: বিলে যে যে সুপারিশ রয়েছে, তা নিয়ে ঘোর আপত্তি পরিবেশবিদদের।

নয়াদিল্লি: লোকসভায় পাস হয়েছিল আগেই। এবার রাজ্যসভাতেওপাস হয়ে গেল বন সংরক্ষণ সংশোধনী বিল। বুধবার সংসদের উচ্চ কক্ষে পাস হয়েছে বিলটি। এর আওতায় দেশের সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটার ভিতর পর্যন্ত অরণ্যভূমিতে নির্মাণের অনুমোদন রয়েছে। সেখানে রাস্তা, রেস্তরাঁ, এবং অন্য নির্মাণও করা যাবে বলে প্রস্তাব রয়েছে বিলটিতে (Forest Conservation)। আবার প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্যও বাড়তি জমি ব্যবহারের সুপারিশ রয়েছে। আর সেই নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। সংরক্ষিত বণভূমিকে ধ্বংস করে পুঁজিপতিদের হাতে বিস্তীর্ণ অরণ্যভূমি তুলে দেওয়াই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের উদ্দেশ্য বলে অভিযোগ বিরোধীদের। (Forest Conservation (Amendment) Bill)

১৯৮০ সালের বনভূমি সংরক্ষণ আইন পাস হয়েছিল। সেটিকে 'অরণ্যের অধিকার আইন'ও বলা হতো এতদিন। যেনতেন প্রকারে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমোদন জোগাড় করে নিলেও, যাতে নির্বিচারে বনভূমির নিধন না হয়, তা রুখতেই ওই আইন আনা হয় সেই সময়। সেই কারণে বনভূমিকে আনা হয় সংরক্ষণের আওতায়। প্রকৃতিবিরোধী যে কোনও কর্মকাণ্ড যাতে চোখ না এড়ায়, চালু হয় কড়া বিধিনিয়ম। সেই আইনে সংশোধন ঘটাতেই রাজ্যসভায় নয়া সংশোধনী বিল পাস করিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র।

কেন্দ্রের দাবি, সংশোধিত নয়া আইনে বনভূমিকে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। উন্নয়নের মূল স্রোতে শামিল হতে পারবেন স্থানীয় মানুষজন। কিন্তু বিলে যে যে সুপারিশ রয়েছে, তা নিয়ে ঘোর আপত্তি পরিবেশবিদদের। কারণ নয়া সংশোধনী বিলে বলা রয়েছে, সবুজ অরণ্য এবং বনভূমি এলাকায় প্রকৃতিবান্ধব কোনও নির্মাণের ক্ষেত্রে আর সরকারি অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে না। চিড়িয়াখানা, হোটেল, রেস্তঁরা, পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলায় বাধা থাকবে না কোনও। জমি জরিপের করতে যাচাই করাতে হবে না নথিপত্র।

শুধুমাত্র রেললাইন, সরকার নিয়ন্ত্রিত সড়ক, নিয়ন্ত্রণরেখা এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন সংরক্ষিত বনভূমিকে সংশোধনী বিলের বাইরে রাখা হয়েছে। মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায়, যেখানে সেনাশিবির রয়েছে, সেই এলাকাও এর মধ্যে পড়ছে না। দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলার জবন্য ১০ হেক্টর পর্যন্ত জমির ব্যবহার রয়েছে যেখানে, সেগুলিকেও বাদ রাখা হয়েছে। 

এতে বণভূমির উপর শোষণ বাড়বে বলেই মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা। সংসদে বিরোধীরাও তাই বিলটিতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সামনে সেই আপত্তি ধোপে টেকেনি। সংসদীয় কমিটির ৩১ জন সদস্যের অনুমোদনে বুধবার রাজ্যসভায় পাস হয়ে যায় বিলটি।  এবার শুধু রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সিলমোহর পড়ে বিলটির আইনে পরিণত হওয়ার অপেক্ষা। কেন্দ্রের যুক্তি, সংরক্ষণের আওতায় থাকা বনভূমি এলাকার স্কুলে শৌচাগার তৈরি করতে সমস্যায় পড়তে হয়। তার জন্যও আইনে সংশোধনের প্রয়োজন ছিল। বুধবার সংসদে এই দাবি করেন দেশের পরিবেশ মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। এর সঙ্গে দেশের জাতীয় নিরাপত্তাও জড়িয়ে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

আরও পড়ুন: Laptops Import: বিদেশ থেকে ল্যাপটপ,ট্যাবলেট আমদানিতে কেন্দ্রীয় নিষেধাজ্ঞা, কী করবে Apple, HP, Dell? প্রভাব পড়ল বাজারেও

তবে তাতেও পিছু হটছেন না পরিবেশবিদরা। আইনি পথে এগনোর কথা ভাবছেন কেউ কেউ। নয়াদিল্লি পরিবেশবিদ বাহার দত্ত বলেন, "মনুষ্যঘটিত কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রমাণ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বনভূমি নিধনের পরিবর্তে, তাকে সংরক্ষণ করাই বিচক্ষণতার পরিচয়।"

বনভূমি সংরক্ষণ আইনে রদবদল ঘটানোর বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে আসছেন পরিবেশ এবং সমাজকর্মীদের একাংশ। প্রায় ৪০০ জনের তরফে চিঠিও লেখা হয় কেন্দ্রকে। একাধিক রাজ্যে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে বিভিন্ন জনজাতি সংগঠনও। সোশ্যাল মিডিয়াতেও লাগাতার প্রচার চলছে। বনভূমি রক্ষার কাতর আর্জি শোনা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। কিন্তু তাতেও বিলে কোনও সংশোধন ঘটানো হয়নি। অভিযোগ নিয়ে সাফাইও দেওয়া হয়নি কোনও। বিরোধীদের দাবি, বিলটি আইনে পরিণত হলে বনভূমির সংজ্ঞাই পাল্টে যাবে দেশে। সবুজ এলাকা বলে আর কিছু থাকবে না। এত দিন ধরে সংরক্ষিত দেশের ২৫ শতাংশ বনভূমিই আইনি রক্ষাকবচ হারাতে চলেছে।

এ নিয়ে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, "এতে শুধুমাত্র বাস্তুতন্ত্রই বিঘ্নিত হবে না, হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল থেকে উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে। এখনও বনভূমির উপর ভরসা করে জীবনধারণ করেন বহু মানুষ। তাঁদের জীবন-জীবিকা সঙ্কটে পড়বে।" মোদি সরকার শিল্পপতি বন্ধুদের জন্যই বনভূমি ধ্বংসের রাস্তা পরিষ্কার করে দিল বলেও অভিযোগ উঠছে বিরোধীদের তরফে।

এর আগে, ছত্তীসগঢ়ের হাসদেও আরান্ডের ৩ হাজার একর বনভূমিতে খনির পরিধি বিস্তারে অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। সরকারের বন্যপ্রাণ সংস্থার তরফে সেই নিয়ে আপত্তি জানানো হলেও, অনুভূমিক ভাবে সেখানে কয়লা খনির আয়তন বৃদ্ধিতে ছাড়পত্র দেওয়া হয় আদানি গোষ্ঠীকে। সড়কপথ বা নির্মাণের দ্বারা বিভাজিত নয়, মধ্যভারতের এমন একমাত্র অরণ্য ওই হাসদেও আরান্ড। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এডুকেশন এবং ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া, দুই সরকারী সংস্থা সেখানে ২০১৯-এর মে মাস থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সমীক্ষা চালায়। খনির আয়তন বৃদ্ধির বিরুদ্ধেও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দেয় তারা। তার পরেও বনভূমি নিধনে ছাড়পত্র পেয়ে যায় আদানি গোষ্ঠী।

ছত্তীসগঢ়ে এই মুহূর্তে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার তাদের আপত্তিকে কোনও গুরুত্বই দেয়নি।  দলের মুখপাত্রপ ধনঞ্জয় সিংহ বলেন, "অরণ্যের সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে মানুষের। এখানে নতুন করে আর খনির প্রয়োজন নেই। মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল কলয়া মন্ত্রীকে চিঠিও দেন। কিন্তু তার পরও ছাড়পত্র দেওয়া হয় আদানি গোষ্ঠীকে।" অরণ্য নিধনের পর সেখানে জনে জনে চাকরি দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করা হয়। কিন্তু ভিটেমাটি সব হারিয়ে, ১০ হাজার টাকারও কম বেতনে খনিতে স্থানীয় মানুষজনকে কাজ করতে হচ্ছে বলেও রিপোর্ট সামনে এসেছে। আইন পাল্টে সরকার বনবাসীদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের রাস্তাও সুগম করে দিল বলে তাই অভিযোগ করছেন বিরোধীরা।

আরও দেখুন
Advertisement
Advertisement
Advertisement

সেরা শিরোনাম

Bangladesh News Live: সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস পাঁচ দিন ধরে জেলবন্দি, কবে মিলবে জামিন?
সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস পাঁচ দিন ধরে জেলবন্দি, কবে মিলবে জামিন?
ISKCON On Chinmay Krishna Das : চিন্ময়কৃষ্ণ কেউ নন ইসকনের? তাঁর আন্দোলনে কি পাশে আছে তারা? স্পষ্ট জানাল ইসকন
চিন্ময়কৃষ্ণ কেউ নন ইসকনের? তাঁর আন্দোলনে কি পাশে আছে তারা? স্পষ্ট জানাল ইসকন
Chinmoy Krishna Das : 'আমার প্রভুর নামকে কী করে তোমরা RSS-এর ট্যাগ দিচ্ছ?' জয় শ্রী রাম স্লোগান নিয়ে কী ব্যাখ্যা চিন্ময়কৃষ্ণের?
'আমার প্রভুর নামকে কী করে তোমরা RSS-এর ট্যাগ দিচ্ছ?' জয় শ্রী রাম স্লোগান নিয়ে কী ব্যাখ্যা চিন্ময়কৃষ্ণের?
Sukanya Samriddhi Yojna: প্রয়োজন হলে আগাম কি তোলা যায় সুকন্যা সমৃদ্ধির টাকা?
প্রয়োজন হলে আগাম কি তোলা যায় সুকন্যা সমৃদ্ধির টাকা?
Advertisement
ABP Premium

ভিডিও

Ghanta Khanek Sange Suman ( ২৮.১১.২০২৪) পর্ব ২: জেলে খুন হতে পারেন চিন্ময়কৃষ্ণ? আশঙ্কাপ্রকাশ কলকাতা ইসকনের । মিছিল ঘিরে কলকাতায় ধুন্ধুমার | ABP Ananda LIVEMadan Mitra: 'এখনও বল পায়ে দিলে দু-চারটে লাথি মারতে পারি', ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য় মদন মিত্রের | ABP Ananda LIVEBangladesh News: বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আবেদন খারিজ করল বাংলাদেশ হাইকোর্ট | ABP Ananda LIVEWestBengal News:DRDO-র সরঞ্জাম ও নথি বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্যার স্বামী | ABP Ananda LIVE

ফটো গ্যালারি

ব্যক্তিগত কর্নার

সেরা প্রতিবেদন
সেরা রিল
Bangladesh News Live: সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস পাঁচ দিন ধরে জেলবন্দি, কবে মিলবে জামিন?
সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস পাঁচ দিন ধরে জেলবন্দি, কবে মিলবে জামিন?
ISKCON On Chinmay Krishna Das : চিন্ময়কৃষ্ণ কেউ নন ইসকনের? তাঁর আন্দোলনে কি পাশে আছে তারা? স্পষ্ট জানাল ইসকন
চিন্ময়কৃষ্ণ কেউ নন ইসকনের? তাঁর আন্দোলনে কি পাশে আছে তারা? স্পষ্ট জানাল ইসকন
Chinmoy Krishna Das : 'আমার প্রভুর নামকে কী করে তোমরা RSS-এর ট্যাগ দিচ্ছ?' জয় শ্রী রাম স্লোগান নিয়ে কী ব্যাখ্যা চিন্ময়কৃষ্ণের?
'আমার প্রভুর নামকে কী করে তোমরা RSS-এর ট্যাগ দিচ্ছ?' জয় শ্রী রাম স্লোগান নিয়ে কী ব্যাখ্যা চিন্ময়কৃষ্ণের?
Sukanya Samriddhi Yojna: প্রয়োজন হলে আগাম কি তোলা যায় সুকন্যা সমৃদ্ধির টাকা?
প্রয়োজন হলে আগাম কি তোলা যায় সুকন্যা সমৃদ্ধির টাকা?
Bangladesh Unrest : 'অভিযুক্ত হতেও পারেন, অভিযুক্ত নাও হতে পারেন', চিন্ময়কৃষ্ণকে কী ইঙ্গিত অন্তর্বর্তী সরকারের?
'অভিযুক্ত হতেও পারেন, অভিযুক্ত নাও হতে পারেন', চিন্ময়কৃষ্ণকে কী ইঙ্গিত অন্তর্বর্তী সরকারের?
Humayun Kabir: 'গ্রামের বিধায়ক বলে এমন বিচার ?' ফের বিস্ফোরক হুমায়ুন ; কী লিখলেন শো-কজের জবাবে
'গ্রামের বিধায়ক বলে এমন বিচার ?' ফের বিস্ফোরক হুমায়ুন ; কী লিখলেন শো-কজের জবাবে
Wedding Stocks: ৪৮ লাখ বিয়ে ! এই মরশুমে ছুটবে ৫টি কোম্পানির স্টক, বলছে মতিলাল ওসওয়াল
৪৮ লাখ বিয়ে ! এই মরশুমে ছুটবে ৫টি কোম্পানির স্টক, বলছে মতিলাল ওসওয়াল
EPFO: সাধ্য অনুসারে টাকা জমাতে পারবেন পিএফে, তোলা যাবে এটিএমের সাহায্যেই- কী কী বদল আসছে ?
সাধ্য অনুসারে টাকা জমাতে পারবেন পিএফে, তোলা যাবে এটিএমের সাহায্যেই- কী কী বদল আসছে ?
Embed widget