করোনার জের, আর্থিক সঙ্কটে রায়গঞ্জের কয়েকশো পরিযায়ী শ্রমিক
আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধের জেরে অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিকের জীবন, জীবিকা বিপর্যস্ত। কেউ ফিরে এসেছেন নিজের রাজ্যে, কেউ বা আবার ভিন রাজ্যে কোনওরকমে দিন কাটাচ্ছেন।
সুদীপ চক্রবর্তী, রায়গঞ্জ: লকডাউনের কারণে ফিরেছিলেন বাড়িতে। কিন্তু সেখানে ফিরেও শান্তি নেই। কাজ না থাকায় চরম আর্থিক সঙ্কটে রায়গঞ্জের কয়েকশো পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের একশো দিনের প্রকল্পে আওতায় আনতে প্রধানের কাছে আর্জি জানিয়েছে পঞ্চায়েত সদস্য।
বেলগাম দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় দেশের অধিকাংশ রাজ্যেই হয় লকডাউন। নাহলে গুচ্ছের বিধিনিষেধ। আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধের জেরে অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিকের জীবন, জীবিকা বিপর্যস্ত। কেউ ফিরে এসেছেন নিজের রাজ্যে, কেউ বা আবার ভিন রাজ্যে কোনওরকমে দিন কাটাচ্ছেন।
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি বা সিএমআইই-র সমীক্ষা বলছে, ১৬ মে যে সপ্তাহ শেষ হয়েছে। তাতে গ্রামীণ এলাকায় বেকারত্ব বেড়েছে আগের সপ্তাহের দ্বিগুণ, ১৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। শহর এলাকাতেও বেকারত্ব বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭১ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি সাতজনে একজন কর্মহীন।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বীরঘই অঞ্চলের প্রায় ৫০০ পরিযায়ী শ্রমিক পেটের তাগিদে বাইরে গিয়েছিলেন। করোনার জেরে বাড়ি ফিরেও তাঁদের শান্তি নেই। অভিযোগ, গ্রামে পাচ্ছেন না কাজ। ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তায় পরিযায়ী শ্রমিকরা। এমনই এক পরিযায়ী শ্রমিক মহম্মদ বাবুল বলেন, ভয়ে কেউ কাজে নিচ্ছি না, কোনও কাজ-কাম নেই, বাড়ি চলবে কীভাবে বুঝতে পারছি না, অনাহারে মরতে হবে।
এঁদের কেউ কেরল, কেউ হরিয়ানায় কাজ করেন। কাজ হারিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। আরেক পরিযায়ী শ্রমিক রহিম আলির কথায়, সদস্যের কাছে আবেদন করেছি ১০০ দিনের কাজের যাতে ব্যবস্থা হয়, লকডাউন থাকলে অনাহারে মরতে হবে, কিছু হলে করে খেতে পারতাম।
১০০ দিনের কাজের আওতায় পরিযায়ীদের আনার ব্যবস্থা করছে পঞ্চায়েত। বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা ও সদস্য মনসুর হোসেন বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাকে বলে পঞ্চায়েতের কাজে আনতে, প্রধানকে বলব, এদের যেন বঞ্চিত না করা হয়, ১০০ দিনের কাজের আওতায় যাতে আনা হয়। বাইরে গেলে রোগের ভয়। কোনওরকমে বাড়ি ফিরলেও সংসার চলে না। করোনার জেরে কার্যত পথে বসেছেন বহু মানুষ।