Startup India: স্টার্টআপ থেকেই জোগান অক্সিজেনের, বেকারত্ব ঘোচাতে যেতে হবে আরও অনেক দূর
Employment Rate: তথ্য এবং প্রযুক্তি সংক্রান্ত স্টার্টআপই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের রোজগারের ব্যবস্থা করতে সক্ষম।
গিরীশ কে নায়ার, ত্রিথেশ নন্দন, নয়াদিল্লি: অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে অতিমারির ধাক্কা, ২০১৬ থেকে দেশে বেকারত্বের হার (Unemployment Rate) লাগাতার ৫ শতাংশের নীচে রয়েছে। সেই আবহে কর্মহীনদের অক্সিজেন জোগাচ্ছে স্টার্টআপ সংস্থাগুলি (Startups)। বাজারমূল্য ১০০ কোটি ডলারের বেশি, চলতি বছরের মে মাসে ভারতে এমন ইউনিকর্ন স্টার্টআপের সংখ্যা ১০০ পেরিয়ে গিয়েছে। ২০১৬-র ১৬ জানুয়ারি দেশে ‘স্টার্টআপ ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত এই সব সংস্থাগুলিদেশ জুড়ে ৭ লক্ষের বেশি মানুষের রোজগারের সংস্থান করেছে।
বেকারত্ব ঘোটাতে ভরসা স্টার্টআপ!
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি সংস্থা (Centre for Monitoring Indian Economy/CMIE) প্রদত্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে বেকারত্বের হার ৭.৩ শতাংশ। অর্থাৎ দেশের কর্ম সক্ষম নাগরিকদের ৭.৩ শতাংশই বেকার, ২০১৭ সালে যা ছিল ৫.৫১ শতাংশ। ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে যথাক্রমে তা ৫.৪১, ৫.৩৩ এবং ৫.২৩ শতাংশ ছিল। যতটুকু উন্নতি লক্ষ্য করা গিয়েছে, তা স্টার্টআপ সংস্থাগুলির দৌলতেই সম্ভব হয়েছে বলে দাবি CMIE-র। আবার ২০২০-তে বেকারত্বের হার ছিল ৭.১১ শতাংশ হওয়াকে অতিমারি এবং অর্থনৈতিক সঙ্কটের ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে, এই মুহূর্তেও যা বজায় রয়েছে।
Small Industries Development Bank of India (SIDBI)-র অধীনে ২০১৬ সালে স্টার্টআপ খাতে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল কেন্দ্র, যাতে ব্যবসার প্রয়োজনে সরকারের থেকে ঋণ গ্রহণে সুবিধা হয় স্টার্টআপ সংস্থার মালিকদের। এই মুহূর্তে স্টার্টআপ সংস্থার সংখ্যার নিরিখে পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। ২০১৬ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত দেশে ৬৯ হাজার ৮৯৫টি স্টার্টআপ সক্রিয় রয়েছে। সবমিলিয়ে ৭ লক্ষ ৭ হাজার ৫০৮ নাগরিকের রোজগারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে এই সংস্থাগুলি। অর্থাৎ বর্তমানে দেশে প্রতিদিন গড়ে ৩০টি নতুন স্টার্টআপ তৈরি হয়। সরকারের খাতায় নথিভুক্ত প্রত্যেক স্টার্টআপ থেকে গড়ে ১০ জনের কর্মসংস্থান হয়।
আরও পড়ুন: Stock Market Opening: বাজারে 'সবুজায়ন' জারি, সেনসেক্স খুলল ৫৪,৫৫৪-তে, নিফটি পেরোল ১৬,৩০০
তথ্য এবং প্রযুক্তি সংক্রান্ত স্টার্টআপই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের রোজগারের ব্যবস্থা করতে সক্ষম। দেশের ৮ হাজার ২৮০টি প্রযুক্তি স্টার্টআপ থেকে গত কয়েক বছরে ৯৮ হাজার ২০৭ চাকরি হয়েছে। এর পরেই রয়েছে স্বাস্থ্যক্ষেত্র। সেখান থেকে ৬৬ হাজার ৮৬টি চাকরি হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে চাকরি হয়েছে ৪৬ হাজার ৩২৩টি। এর পর তালিকায় রয়েছে খাদ্য ও পানীয় (৩৭২৫৭), অর্থপ্রযুক্তি (২৮১২৩), নির্মাণ (২৭০৯৩), কৃষি (২৫৮৩৩), মানবসম্পদ (২৫৪০১) এবং প্রযুক্তি যন্ত্রাংশ (১৮৮৮২)।
দেশের মধ্যে সর্বাধিক স্টার্টআপ সংস্থা রয়েছে মহারাষ্ট্রে, ১২ হাজার ৯৬০টি। দ্বিতীয় কর্নাটক (৯৫৯৩), দিল্লি (৮৩২২), উত্তরপ্রদেশ (৬৩৪৩), গুজরাত (৪৬৬২), হরিয়ানা (৩৮২৯), তামিলনাড়ু (৩৭৬৪) এবং তেলঙ্গানা (৩৬৯৬)।
যথেষ্ট কর্মসংস্থান হচ্ছে কি!
মহারাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ছ’টি, কর্নাটক ও দিল্লিতে চারটি, উত্তরপ্রদেশে তিনটি, গুজরাত, হরিয়ানা, তামিলনাড়ু এবং তেলঙ্গানায় দু’টি করে স্টার্টআপ তৈরি হয়।
দিনে গড়ে একটি করে স্টার্টআপ তৈরি হয় কেরল, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা এবং বিহারে। তবে দেশের জনসংখ্যার নিরিখে তা একেবারেই যথেষ্ট নয়। ১ কোটি চাকরির জন্য বছরে কমপক্ষে ১০ লক্ষ স্টার্টআপ তৈরি হওয়া প্রয়োজন। তবে তাতেও সমস্যার সমাধান হবে কিনা, সন্দেহ রয়েছে। কারণ দেশে ইউনিকর্নম স্টার্টআপের সংস্থা ১০০ ছাড়িয়ে গেলেও, ২০২১ সালে এর মধ্যে মাত্র ১৮টি সংস্থারই মুনাফা হয়েছিল।