(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Supreme Court: টিএন শেষন একজনই, মাথা না নোয়ানো কাউকে চাই, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল কোর্টের
TN Sheshan: বুধবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি কেএম জোসেফ, অজয় রাস্তোগি, অনিরুদ্ধ বসু, ঋষিকেশ রায় এবং সিটি রবিকুমারের সাংবিধানিক বেঞ্চে আবেদনটির শুনানি চলছিল।
নয়াদিল্লি: সচিত্র পরিচয়পত্র চালু, স্বচ্ছ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার জন্য আজও স্মরণীয় তিনি। আপসহীন নীতি জন্ম দেয় 'শেষন বনাম নেশন' তত্ত্বের। ক্ষমতাসীন দল হোক বা বিরোধী পক্ষ, কখনও রেয়াত করেননি কাউকে। তার জন্য বাংলার প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রী জ্য়োতি বসু তাঁকে 'পাগল' বলেছিলেন। নির্বাচন কমিশনের স্বতন্ত্রতার পক্ষে, এ বার দেশের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার, সেই তিরুনেল্লাই নারায়ণ আইয়ার শেষনেরই (TN Seshan) উল্লেখ উঠে এল সুপ্রিম কোর্টে। গণতন্ত্রে আদর্শ নির্বাচন কমিশনার (Chief Election Commissioner) হিসেবেই তাঁর নাম উঠে এল খোদ বিচারপতিদের মুখে।
প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার তিরুনেল্লাই নারায়ণ আইয়ার শেষনকে স্মরণ
স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করানোর পরিবর্তে, বর্তমানে দেশে নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাশালীর নির্দেশ পালনকারী হয়ে উঠেছে কিনা, বিগত কয়েক বছর ধরেই উঠছে প্রশ্ন। সেই আবহে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংশোধনের আবেদন জমা পড়ে শীর্ষ আদালতে (Supreme Court)। ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রিসভার সুপারিশ মেনে রাষ্ট্রপতির হাতে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের পরিবর্তে, কলেজিয়াম পদ্ধতিতে নিয়োগ হওয়া উচিত বলে দাবি উঠেছে। তারই শুনানিতে বুধবার শেষনকে স্মরণ করলেন বিচারপতিরা।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি কেএম জোসেফ, অজয় রাস্তোগি, অনিরুদ্ধ বসু, ঋষিকেশ রায় এবং সিটি রবিকুমারের সাংবিধানিক বেঞ্চে আবেদনটির শুনানি চলছিল। সেখানে বর্তমান দিনে নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আদালত বলে, "মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং দুই কমিশনারের পলকা কাঁধে গুরুদায়িত্ব চাপিয়েছে দেশের সংবিধান। এ ক্ষেত্রে পারদর্শিতার পাশাপাশি চরিত্রগত কিছু বৈশিষ্ট্যও থাকা জরুরি। এমন একজনকে দরকার, যাঁকে বুলডোজারের নিচে চাপা দেওয়া যায় না। কিন্তু প্রশ্ন হল, এমন ব্যক্তিকে কে নিয়োগ করবে? নিয়োগ কমিটিতে প্রধান বিচারপতির উপস্থিতিই অনধিকার হস্তক্ষেপ মুক্ত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। যোগ্যতম ব্য়ক্তিকে প্রয়োজন, তবেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। কারণ এ নিয়ে তর্কের অবকাশ নেই যে, কখনও কখনও বিচারপতিরাও পক্ষপাত করে থাকেন। তাই সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় সবকিছু হলে নিরপেক্ষতা আশা করা যায়।"
আর যোগ্যতমের প্রশ্নেই শেষনের উল্লেখ করে আদালত। বলা হয়, "বহু মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এসেছেন, গিয়েছেন। কিন্তু টিএন শেষনরা একজনই।" আদালত আরও বলে, "এই মুহূর্তে পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ২০০৪ সাল থেকে কোনও মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ছ'বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। কারণ নিয়ম বলছে, বয়স ৬৫ হলেই অবসর নিতে হবে। ফলে মেয়াদ পূর্ণই হয় না। তাই সরকার কী করছে! বয়স জেনে নিচ্ছে আগেভাগে। ফলে মেয়াদ পূর্ণই না করতে পারেন, বেছে বেছে এমন লোকজনকেই নিয়োগ করছে। তাই নির্বাচন কমিশন স্বাধীনতা হারাচ্ছে। একই প্রথা চলছে।"
নির্বাচন কমিশনর স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন আদালতের
শুধু তাই নয়, আদালত জানায়, সংবিধানের ৩২৪ নম্বর অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন কার্যকর করার কথা বলে, যাতে সুষ্ঠু পদ্ধতিতে নিয়োগ হয়। কিন্তু আজও সরকার তা কার্যকর করেনি। সুনির্দিষ্ট আইনের অভাব এবং সংবিধানের মৌনতার অপব্যবহার চলছে। এর প্রেক্ষিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমানি জানান, ছোটখাটো সংশোধন যদিও বা করা যায়, সংবিধানে লিখিত বিধি-নিয়ম পাল্টানো যাবে না। আর আইন বদলানোর কথাই যদি ওঠে, তার জন্য মন্ত্রিসভা রয়েছে, আদালতে তর্ক নিষ্প্রয়োজন। কিন্তু খোদ লালকৃষ্ণ আডবাণীর মতো নেতা কলেজিয়াম মারফত নিয়োগের কথা বলেছিলেন বলে উল্লেখ করে আদালত। একই সঙ্গে আদালত জানায়, মন্ত্রিসভাকে কোনও নির্দেশ দিচ্ছে না আদালত। কিন্তু ১৯৯০ সাল থেকে বিতর্ক চলছে। আদালত চাইলেও পদ্ধতিগত বিধি-নিয়ম দেখিয়ে আটকে দেওয়া হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তা নিয়ে কিছু করা উচিত।