রক্ত জমাট বেঁধে দুটি পায়ে পচন এক রোগীর, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অঙ্গহানির আশঙ্কাও কি বাড়ছে?
দমদমের বাসিন্দা রিমা দত্ত। করোনার মারণ-কামড় থেকে বেঁচে ফিরলেও দুটি পা হারানোর উপক্রম হয়েছে তাঁর। শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত জমে যাওয়ার ঘটনাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় থ্রম্বোসিস।
ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রাণহানির সঙ্গে অঙ্গহানির আশঙ্কাও কি বাড়ছে? সময়ের সঙ্গে জোরাল হচ্ছে সেই প্রশ্ন। মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর দমদমের এক রোগীর দুটি পায়েই রক্ত জমাট বেঁধে পচন ধরে গিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অবিলম্বে অস্ত্রোপচার করে দুটি পায়েরই ক্ষতিগ্রস্ত অংশ বাদ দিতে হবে। শেষ পর্যন্ত রোগীকে পা খোয়াতে হবে কিনা, তা নিয়ে আশঙ্কায় পরিবার।
দমদমের বাসিন্দা রিমা দত্ত। করোনার মারণ-কামড় থেকে বেঁচে ফিরলেও দুটি পা হারানোর উপক্রম হয়েছে তাঁর। শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত জমে যাওয়ার ঘটনাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় থ্রম্বোসিস।
পরিবার সূত্রে খবর, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে রিমাকে প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসায় শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে কোভিডমুক্ত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার ফের এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয় তাঁকে। তাঁর স্বামী বলেছেন, ডাক্তাররা বললেন রক্ত জমাট বেঁধে পায়ে পচন ধরে গিয়েছে। দুটো পায়েই পচন। বাদ দিতে হবে।
পরিস্থিতি এতটাই জটিল, রিমা দত্তর চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠিত হয়েছে এসএসকেএমে। মেডিক্যাল বোর্ডের নেতৃত্বে রয়েছেন ওই হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান সৌমিত্র ঘোষ।
তিনি জানিয়েছেন, করোনা পরবর্তী জটিলতার কারণে রক্ত জমাট বেঁধে অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। রিমা দত্তর দুটো হাত ও দুটো পায়ে রক্ত জমাট বেঁধেছিল। হাতের সমস্যার সমাধান হলেও, পায়ের জটিলতা সারানো যায়নি। দুটি পায়ের কিছু অংশে পচন শুরু হওয়ায় অস্ত্রোপচার জরুরি হয়ে পড়েছে। আর এ থেকেই উঠছে প্রশ্ন, করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে কি অঙ্গহানির আশঙ্কা বাড়ছে?
রিমা দত্তর পরিবার যখন প্রিয়জনের পা হারানোর আশঙ্কা করছে, তখন সময় মতো অস্ত্রোপচার করিয়ে বড় বিপদ এড়িয়েছেন মুর্শিদাবাদের এষা রায়।এষার স্বামী বলেছেন,সিটি স্ক্যান করান ডাক্তার। সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট দেখে বলেন হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন আস্তরণে চোট লেগেছে। মেরামতি দরকার। দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে বাঁচানো সম্ভব নয়।১২ মে এষা রায়কে বহরমপুর থেকে কলকাতায় আনা হয়। আরএন টেগোর হাসপাতালে ভর্তি করার পর, করোনা রিপোর্টে দেখা যায় তিনি পজিটিভ। ঝুঁকি নিয়েই সংক্রমিত রোগীর হৃদযন্ত্রে ১৪ ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা।হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখন ভাল আছেন এষা। সব মিলিয়ে মহামারীতে আশা আর নিরাশার দুই ছবি দেখল মহানগর।