(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Narendra Modi: 'অধীরকে অপমান কংগ্রেসেরই, কলকাতা থেকে ফোন এসেছিল?' কটাক্ষ মোদির
Parliament Session: অধীরের নিজের দল কংগ্রেসই তাঁকে কোণঠাসা করে অপমান করেছে বলে কটাক্ষ করেন নরেন্দ্র মোদি। যদিও এই কটাক্ষকে আমল দিতে নারাজ অধীর।
বিজেন্দ্র সিংহ ও আশাবুল হোসেন, নয়াদিল্লি: বুধবার সংসদে মোদিকে (PM Modi) নিশানা করে কড়া আক্রমণ করেছিলেন রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi) । আর বৃহস্পতিবার লোকসভায় (Lok Sabha) প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে লাগাতার উঠে এল লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর (Adhir Chowdhury) নাম। অধীরের নিজের দল কংগ্রেসই তাঁকে কোণঠাসা করে অপমান করেছে বলে কটাক্ষ করেন নরেন্দ্র মোদি। যদিও এই কটাক্ষকে আমল দিতে নারাজ অধীর।
অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর জবাবি আলোচনার শুরুতেই নাম না করে কার্যত বঙ্গ রাজনীতির প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন নরেন্দ্র মোদি। বেঙ্গালুরুতে কংগ্রেস-তৃণমূলের এক মঞ্চে আসার প্রসঙ্গ এবং বাংলায় অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সরকারের তীব্র বিরোধিতার কথা উঠে আসে মোদির মুখে। বাংলায় কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্য়ে অস্বস্তিকর সম্পর্ক নিয়েও কথা ওঠে। অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর বলতে উঠে বৃহস্পতিবার বাছাই করা শব্দে নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণে বিধ্বস্ত করেন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, 'ধৃতরাষ্ট্র যখন অন্ধ ছিলেন, তখন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ হয়েছিল। আজও রাজা অন্ধ হয়ে বসে। কারোর নাম বলিনি আমি। যেখানে রাজা অন্ধ হয়ে বসে থাকেন, সেখানে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ,সেটা হস্তিনাপুরেই হোক বা মণিপুরই হোক। হস্তিনাপুর আর মণিপুরের মধ্যে তখন কোনও ফারাক থাকে না।' এরপর জবাবি ভাষণের শুরুতেই অধীর চৌধুরীর প্রসঙ্গ তোলেন নরেন্দ্র মোদি। কংগ্রেসের লোকসভার নেতা হওয়া সত্ত্বেও কেন, তাঁকে দিয়ে অনাস্থা প্রস্তাবের বিতর্ক শুরুটা কংগ্রেস করাল না সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, '১৯৯৮ সালে সনিয়া গাঁধী ভাষণ শুরু করেছিল, তারপর খাড়গে। এবার অধীর চৌধুরীকে সরিয়ে দিল কংগ্রেস। অমিত শাহ নিজে থেকে বললেন একটু সময় আমাদের থেকে নিয়ে নিন। কংগ্রেস অধীর চৌধুরীকে কেন যে কোণঠাসা করে দেয়। কলকাতা থেকে কোনও ফোন এসেছিল না কি?'
সেদিনই রাতে অধীর চৌধুরী বলেন, 'ওদের দলের পালোয়ান মারতে এসেছিল। আমি বললাম আয়। ওদের লোকেরা নিয়ে গেল। আমার সঙ্গে মস্তানি করে লাভ নেই। মোদির মতো লোক যখন আমার নাম বলছে, তার মানে আমার জায়গা উঁচু হচ্ছে।'
নরেন্দ্র মোদির এই মন্তব্য়ের মধ্য়ে বিশেষ রাজনৈতিক কৌশল দেখছেন পর্যবেক্ষকরা। কারণ, বেঙ্গালুরুতে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর মাঝখানে বসলেও, এ রাজ্য়ে কিন্তু পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে সন্ত্রাস নিয়ে, লাগাতার তৃণমূলকে বিঁধে চলেছেন অধীর চৌধুরী। আর প্রদেশ কংগ্রেসের এই আচরণ যে মোটেও তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের পছন্দ হচ্ছে না, তা ইতিমধ্য়েই স্পষ্ট হয়ে গেছে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কথা থেকে। যদিও এর আগেই অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, 'বাংলায় বোর্ড গঠন নিয়ে অত্য়াচার হচ্ছে, সন্ত্রাস হচ্ছে, অপহরণ হচ্ছে, ভয় দেখানো হচ্ছে, তাই আমি বলেছি। শুধু বলেছি তা নয়, হাইকোর্ট করতেও বলেছি। যেখানে অন্য়ায় দেখব সেখানে বলব। কারও সঙ্গে সমঝোতা করে কোনও রাজনীতি করি না আমি।'
এর আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'ওখানে ন্যাশনাল পার্টিতে ইন্ডিয়া, আর এখানে বিজেন্ডিয়া। বিজেপির সাথে বসে আছে। লজ্জাও করেনা। মানুষের একটা নীতি থাকে,সেই নীতিটাকে নিয়ে চলতে হয়। আমাদের লড়াই সিপিএমের বিরুদ্ধে বাংলায়, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বাংলায়।'
নরেন্দ্র মোদি কি তাহলে এই প্রশ্নই খুঁচিয়ে দিতে চাইলেন যে, জাতীয় রাজনীতির ঐক্য়ের স্বার্থেই মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে খুশি রাখতেই, অধীর চৌধুরীকে কিছুটা আড়ালে রাখতে চাইছে কংগ্রেস হাইকম্য়ান্ড?