বিহার: বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬
পটনা: বৃষ্টি কমলেও জলমগ্ন বিহারের বিস্তীর্ণ এলাকা। জলের তলায় থানা থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র। চরম অসহায়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এখনও পর্যন্ত বৃষ্টি ও বন্যায় রাজ্যে ৫৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ১৩ বন্যা-কবলিত জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ। এদিনও আকাশপথে বন্যা-পীড়িত জায়গাগুলি পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। শনিবার রাত থেকেই বিহারের কিষাণগঞ্জ, কাটিহার সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে। সেই জল এখন গ্রাস করেছে গোটা স্টেশনকে। দূর দূরান্ত অবধি রেল লাইন দেখাই যাচ্ছে না। কোথাও হাঁটু সমান জল, কোথাও কোমর সমান। জল যন্ত্রণার জেরে ট্রেন পরিষেবা পুরোপুরি বিপর্যস্ত। শুধু কিষাণগঞ্জ নয়, বিহারের কাটিহারের বিভিন্ন এলাকাতেও জল যন্ত্রণার একই ছবি। গ্রামের মধ্যে হু হু করে ঢুকছে জল। কাটিহারের বলরামপুর থানা এলাকায় একটিই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু, সেটিই এখন জলের তলায়। খাবার-দাবার নেই। অসুখ বিসুখ করলে চিকিৎসা করানোর জায়গাও জলের তলায়। অসহায় মানুষগুলো যেন অকুলপাথারে। জল ঢুকেছে কাটিহারের বলরামপুর থানাতেও। জল ঢুকছে স্রোতের মতো। একটু অসতর্কভাবে পা ফেলতে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে। ঘরবাড়ি ছেড়ে গ্রামবাসীরা আশ্রয় নিয়েছে স্কুলে। তবে বুক জলে দাঁড়িয়ে হলেও, স্কুলে জাতীয় পতাকা তুলতে ভোলেননি সবহারানো মানুষগুলো। মধ্য-পূর্ব রেলের এক আধিকারিক জানান, কোনও ট্রেন কাটিহারের পর আর যেতে পারছে না। কারণ, অধিকাংশ জায়গায় রেললাইন জলের তলায় চলে গিয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের অন্তর্গত কাটিহার ডিভিশনের বারসোই-কিষাণগঞ্জ সেকশনে ১৩৩ নম্বর রেলসেতু ভীষণই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের বিশেষ সচিব অনিরূদ্ধ কুমার জানান, আরারিয়াতেই ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া পশ্চিম চম্পারানে ৯, কিষাণগঞ্জে ৮, সীতামারহিতে ৫, মাধেপুরায় ৪, পূর্ব চম্পারন, দ্বারভাঙা ও মধূবনীতে তিনজন করে এবং শেওধরে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি জানান, রাজ্যের ৯৮টি ব্লকে মোট ১,০৭০টি পঞ্চায়েত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১.৬১ লক্ষ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে প্রায় ৮৬ হাজারকে রাখা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশো ত্রাণ শিবিরে।