এক্সপ্লোর
Advertisement
পাঠ্যসূচীতে সঙ্ঘের কোপে রবীন্দ্রনাথ, এ ধরনের কোনও সম্ভাবনা নেই, নিন্দার মুখে সংসদে আশ্বাস কেন্দ্রের
নয়াদিল্লি: রবীন্দ্রভাবনা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে বলে মনে করে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ শিক্ষা সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস। সেজন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কিত অংশ ইংরেজি পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছে ন্যাস। দেশজোড়া প্রতিবাদের মুখে কেন্দ্র জানাল, এ ধরনের কোনও সম্ভাবনাই নেই।
আগে জানা গিয়েছিল, জাতীয় সঙ্গীতের স্রষ্টার জাতীয়তাবাদ সম্পর্কিত ভাবনা দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে আরএসএসের তাত্ত্বিক নেতা দীননাথ বাত্রার সংগঠন শিক্ষা সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস। কেন্দ্রীয় স্তরে সিলেবাস নির্ণায়ক সংস্থা ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা এনসিইআরটি-র কাছে এই মর্মে সুপারিশ পাঠিয়েছে তারা।
কিন্তু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনায় আপত্তির কারণ কী? পাঁচ পৃষ্ঠার সুপারিশপত্রে ন্যাস জানিয়েছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনাকে সামনে রেখে জাতীয়তাবাদ ও মানবতাবাদের মধ্যে সংঘাত দেখানোর চেষ্টা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসতেই রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন সাসপেন্ডেড সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, সুপারিশের নামে যেভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এটা তাঁর এবং গোটা দেশের অপমান। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ৩৫ কোটি বাঙালিরও অপমান। শিক্ষা সংস্কৃতি উত্থান ন্যাসের এটা মনে রাখা উচিত যে, জাতীয় সঙ্গীতের স্রষ্টাও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
এই সুপারিশের প্রতিবাদে সোমবার রাজ্যসভায় সরব হয় তৃণমূল। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় মুলতুবি প্রস্তাবও আনে তারা। সোমবার এই মর্মে নোটিস জমা পড়ে। সমালোচনার সুর অন্যান্য বিরোধী দলের গলাতেও।
সিপিএম সাংসদ বৃন্দা কারাত থেকে শুরু করে কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ার এ ধরনের প্রবণতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু অবশ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নয়। এর পাশাপাশি আরও একগুচ্ছ বিষয় সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে আরএসএসপন্থী শিক্ষা সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস। যেমন--চিত্রশিল্পী মকবুল ফিদা হোসেনের আত্মজীবনীর একটি অংশ। মোঘল শাসকদের দয়ালু হিসেবে বর্ণনা। ন্যাশনাল কনফারেন্সকে ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে বর্ণনা। ১৯৮৪-র শিখ সংঘর্ষ নিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহর ক্ষমাপ্রার্থনা। ২০০২ সালের গুজরাত হিংসার প্রসঙ্গ।
এর আগে ন্যাসের নজর পড়ে কিংবদন্তী কবি মির্জা গালিবের দিকেও। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে চিঠি লিখে তারা জানায়, পড়ুয়ারা যাতে বিশুদ্ধ হিন্দি শেখে সেজন্য এনসিইআরটি পাঠ্যপুস্তকের হিন্দি বই থেকে বাদ দিতে হবে যাবতীয় উর্দু, ফারসি, ইংরেজি শব্দ-কবিতা।
এর তীব্র নিন্দা করেছেন কবি শঙ্খ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘জ্ঞান যেথা মুক্ত’-এমন একটা দেশের স্বপ্ন যিনি দেখেছিলেন, তিনি যে আরএসএস-এর রোষভাজন হবেন, তাতে কোনও বিস্ময় নেই। কিন্তু দেশজোড়া যে সর্বনাশের চিহ্নগুলি ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠছে, তার বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে সংগঠিত প্রতিবাদ এখনই দরকার।
কবিতা কৃষ্ণনের ট্যুইট-দীননাথ বাত্রার আরএসএস মনে করে রবীন্দ্রনাথ, যিনি জাতীয়সঙ্গীতের স্রষ্টা, পাঠ্যবইয়ে থাকা উচিত নয়! আরও কত কী দেখতে হবে।
সীতারাম ইয়েচুরির ট্যুইট, সঙ্ঘ-বিজেপি জোট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তথা পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে অসম্মান করেছে। এটা সারা ভারতের অপমান।
শোভা দে লিখেছেন, পাঠ্যবইগুলোকে অনন্ত ছেড়ে দিন!দীননাথ বাত্রা: ইতিহাসকে এভাবে মুছে ফেলা যায় না, বিকৃত করা যায় না।
বাত্রার দাবি নিয়ে এর আগেও বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এর আগে তো তিনি উড়োজাহাজ আবিষ্কারক হিসেবে রাইট ভাতৃদ্বয়কে কৃতিত্ব দিতে অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, রামায়ণে বর্ণিত কাল্পনিক পুষ্পক বিমানই বিশ্বের প্রথম উড়োজাহাজ।
কৃষ্ণাঙ্গদের সম্পর্কে তাঁর ব্যাখ্যাও সমালোচনার ঝড় তুলেছিল।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
আইপিএল
জেলার
ব্যবসা-বাণিজ্যের
ব্যবসা-বাণিজ্যের
Advertisement