‘আমি স্টার’ বলে বায়নাক্কা করবেন না, রোগীর মতো চলুন! বলিউড গায়িকাকে বলে দিলেন ডাক্তার
ঘরে মশার ভনভন, অপরাধীর মতো ব্যবহার লখনউয়ের হাসপাতালে! করোনা-পজিটিভ কনিকার অভিযোগ ওড়ালেন ডিরেক্টর
নয়াদিল্লি: করোনাভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়া বলিউড গায়িকা কনিকা কপূরকে বায়নাক্কা না করে ভদ্র রোগীর মতো চলতে বললেন তিনি লখনউয়ের যে সঞ্জয় গাঁধী পিজিআইএমএসে ভর্তি রয়েছেন, সেখানকার ডিরেক্টর ডঃ আর কে ধিমান। কনিকা দেশের একটি প্রথম সারির সংবাদপত্রকে সাক্ষাত্কারে অভিযোগ করেছেন,তাঁর সঙ্গে হাসপাতালে অপরাধীর মতো আচরণ করা হচ্ছে, যে ঘরে তাঁকে রাখা হয়েছে, তাতে মশা ভনভন করছে। ঠিকমতো খেতেও দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে, তিনি ভুখা কাটাচ্ছেন, তেষ্টা রয়েছে, বেহাল দশা হয়েছে। ইনস্টাগ্রামে কনিকা করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষায় পজিটিভ বলে জানিয়েছিলেন।
তবে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে ডঃ ধিমানের দাবি, কনিকা কপূর একটা হাসপাতালে যতটা ভাল চিকিত্সা হওয়া সম্ভব, সেটাই পাচ্ছেন। তাঁর সহযোগিতা করা উচিত। তিনি একজন রোগী। স্টারদের মতো বায়নাক্কা এখানে চলবে না, সেটা বুঝুন। ওনাকে গ্লুটেন মুক্ত ডায়েট দেওয়া হচ্ছে হাসপাতালের রান্নাঘর থেকে। ওনাকে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ওনাকে আলাদা ঘর দেওয়া হয়েছে, যার সঙ্গে টয়লেট, রোগীর শয্যা, টেলিভিশন আছে। ঘরের ভেন্টিলেশন বাতানুকূল, কোভিড-১৯ ইউনিটের জন্য আলাদা এয়ার হ্যান্ডলিং ইউনিট রয়েছে। তাঁর যাবতীয় খেয়াল, শুশ্রুষার আয়োজন রয়েছে। তবে ওনাকে আগে বুঝতে হবে, উনি স্টার নন, রোগী, সেইমতোই চলতে হবে।
ইনস্টাগ্রামে কনিকা জানিয়েছিলেন, গত চারদিন হল ফ্লুর লক্ষণ ধরা পড়ছে আমার মধ্যে। নিজে টেস্ট করিয়ে কোভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়েছি। আমার পরিবার, আমি পুরোপুরি কোয়ারেন্টিনে আছি, ডাক্তারের পরামর্শ নিচ্ছি। যাদের সংস্পর্শে এসেছি, তাদেরও কন্ট্যা্কট ম্যাপিং করা হচ্ছে। ১০দিন আগে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া মেনে বিমানবন্দরে স্ক্যান হয়েছে আমার। কিন্তু লক্ষণগুলি সামনে এসেছে মাত্র চারদিন আগে।
কিন্তু পুলিশ দাবি করে, লখনউ বিমানবন্দরে স্ক্যান হওয়ার পর তাঁকে কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও তাতে কান না দিয়ে তিনি একাধিক সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন, শপিংও করেন। পার্টিতে হাজির হন, যেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় দুষ্য়ন্ত সিংহের, যিনি পরীক্ষায় পজিটিভ ধরা পড়েছেন। দুষ্যন্ত আবার মা বসুন্ধরা রাজে সহ একাধিক রাজনীতিক, এমনকী রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেও সাক্ষাত করেন।
কনিকার বিরুদ্ধে উদাসীনতা, সরকারি কর্মীর নির্দেশ অমান্য করা, লোকের মধ্যে সংক্রামক ব্যধি ছড়াতে পরে, এমন ছেলেমানুষি আচরণের অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়। কনিকা অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ খন্ডন করে সাফাই দেন, তিনি বিমানবন্দরে পরীক্ষা করাতে গররাজি হননি, শুধু বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, তাঁর নমুনা যেন পরে পরীক্ষা করা হয়।
তারপর এফআইআরেও গরমিল বেরিয়ে আসে, কেননা যে সিএমও-র অভিযোগের ভিত্তিতে সেটি দায়ের হয়, তিনি পরে বলেন, ১১ মার্চ লখনউ বিমানবন্দরে নয়, ৯ মার্চ মুম্বই বিমানবন্দরে পরীক্ষা করা হয়েছিল কনিকাকে।