এক্সপ্লোর
সাংসদদের বেতন দ্বিগুণ করার সুপারিশ কমিটির, অপেক্ষা মোদীর সম্মতির

নয়াদিল্লি: সাধারণ মানুষ যখন মূল্যবৃদ্ধির জেরে নাজেহাল, তখন সাংসদদের বেতন এক ধাক্কায় বেড়ে হতে পারে দ্বিগুণ। সাংসদদের নিয়ে তৈরি বিশেষ কমিটিই এমনটাই সুপারিশ করেছে। অপেক্ষা এখন শুধু প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির। চড়া দাম। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে মধ্যবিত্ত। সপ্তম পে কমিশনের মাধ্যমে ৭০ বছরে সবচেয়ে কম বেতন বৃদ্ধি হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের। তাও আবার মোটে ২৩ শতাংশ! কিন্তু, এই পরিস্থিতিতেই সাংসদদের বেতন একলাফে বাড়তে পারে একশো শতাংশ! অর্থাৎ ডবল! শুধু দরকার প্রধানমন্ত্রীর সবুজ সংকেতের। আর সাংসদদের বেতন বৃদ্ধির এই সুপারিশ করেছেন খোদ সাংসদরাই! এখন সাংসদরা মাস গেলে মূল বেতন পান ৫০ হাজার টাকা। এর সঙ্গে লোকসভা কেন্দ্রে কাজ করার জন্য ভাতা বাবদ মেলে আরও ৯০ হাজার টাকা। এই টাকার ওপর তাঁদের কোনও আয়করও দিতে হয় না। অর্থাৎ বেতন ও ভাতা মিলিয়ে সাংসদদের মাসিক আয় প্রায় এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা। বিজেপি সাংসদ যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন সাংসদদের কমিটি এই বেতনই দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছে। সেক্ষেত্রে সাংসদদের বেতন এক লক্ষ চল্লিশ হাজার থেকে একলাফে বেড়ে হতে পারে দু’লক্ষ আশি হাজার। শুধু অবশ্য বেতনই নয়। সাংসদদের দিল্লির বাসভবনের আসবাব বাবদ ভাতা দ্বিগুণ করে বছরে দেড় লক্ষ এবং ব্রডব্যান্ড বাবদ ভাতা মাসে এক হাজার সাতশো টাকা করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সাংসদদের পেনশন ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে প্রতি মাসে ৩৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বছরে বিনামূল্যে বিমানের টিকিটের সংখ্যা ৩৪ থেকে বাড়িয়ে ৪৮ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, আবাসন, গৃহ ঋণ, সরকারি গাড়ির বন্দোবস্ত, সংসদ ভবনেই কেবিন ও কাজের জায়গা, রাস্তার টোল মকুব, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে আলাদা ক্যান্টিনেরও বন্দোবস্তের সুপারিশ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অবশ্য বেতনের পাশাপাশি একগুচ্ছ সুযোগ সুবিধা পান সাংসদরা। সাংসদদের সরকারি বাসভবনের জন্য কোনও বিদ্যুতের বিল দিতে হয় না। বাড়ির জলও ফ্রি। সারাবছর সস্ত্রীক কিংবা স্বামী সহ একজন সাংসদ বিনা খরচায় ট্রেনের এসি ফার্স্ট ক্লাস কামরায় ভ্রমণ করতে পারেন। তাঁর অ্যাটেনডেন্টও তাঁর সঙ্গে বিনা খরচরায় এসি টু টিয়ারে যাতায়াত করতে পারেন। একজন সাংসদ বছরে ৩৪ বার বিনা খরচে দেশের মধ্যে বিমানে যাতায়াত করতে পারেন। সংসদের অধিবেশনের শুরু এবং শেষের সময়ও বিমান সফর সম্পূর্ণ ফ্রি। বছরে গড়ে সংসদের স্থায়ী কমিটির ১২টি বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্যও ১২ বার নিখরচরায় বিমানে যাতায়াত করতে পারেন এক সাংসদ। সাংসদের বাড়িতে ৫টি টেলিফোনের সংযোগ থাকে। দেড় লক্ষ ইউনিট ফ্রি। এরমধ্যে ইন্টারনেট সংযোগও রয়েছে। সাংসদের চিকিৎসার সব খরচ বহন করে সরকার! এরপরও সাংসদদের বড় অংশের দাবি, মূল্যবৃদ্ধির জেরে যে হারে খরচ বাড়ছে, তাতে নাকি বেতন না বাড়লে উপায় নেই! কারোর যুক্তি, ক্যাবিনেট সচিবের বেতন যদি বেড়ে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হয়, তাহলে সাংসদদের বেতন কম রাখা যায় কী করে? কিন্তু, প্রয়োজন তো সবার আছে! মূল্যবৃদ্ধির চাপে নাজেহাল সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধির দরকার নেই? কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারি কর্মচারীর বেতন আরও বাড়লে ভাল হয় না? ১০০ দিনের প্রকল্পের মজুরি আরও বাড়ানোর প্রয়োজন নেই? কিন্তু, কেউ তো আর ইচ্ছেমতো নিজেদের বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করতে পারেন না! তাহলে সাংসদদের বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করার দায়িত্ব সাংসদদের কমিটিকেই দেওয়া হয়েছে কেন? সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্ন...
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও পড়ুন






















