Suvendu Adhikari Letter To Mamata: 'এই প্রথম কোনও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সেনাদেরও আক্রমণ', মমতাকে খোলা চিঠি শুভেন্দুর
West Bengal News: বাংলাদেশের অশান্তির আঁচ এবার এসে পড়েছে বাংলার রাজনীতিতেও। বেআইনি অনুপ্রবেশের একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে।
কলকাতা: তাঁদের মুখ দেখাদেখি হলে সৌজন্য বিনিময় হয় কি না হলফ করে বলা যায় না। এতটাই বাগযুদ্ধ চলে সব সময়। তবে এবার সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোলা চিঠি লিখলেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতার চিঠির ছত্রে ছত্রে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ।
বাংলায় অনুপ্রবেশ নিয়ে বিএসএফকে আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি পুলিশকে এ নিয়ে সতর্ক করে মন্তব্য করেছিলেন। সেই বার্তার পাল্টা হিসাবে মমতাকে এবার কড়া চিঠি লিখলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু।
মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় ছিল বিএসএফ। পাল্টা পুলিশকে নিশানা শুভেন্দুর। ৫ পাতার চিঠিতে ছত্রে ছত্রে পুলিশ-রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু চিঠিতে লিখেছেন, 'ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে আক্রমণ করেছেন। এই প্রথম কোনও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সেনাদেরও আক্রমণ করলেন। যতই চ্যালেঞ্জ আসুক না কেন, কেউ সেনার মনোবল ভাঙতে পারেনি। কিন্তু একজন মুখ্যমন্ত্রী এই ধরনের অভিযোগ করলে তা মনোবলকে দুর্বল করে।' মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের অভিযোগ বিরোধী দলনেতার।
শুভেন্দু চিঠিতে আরও লিখেছেন, 'অনুপ্রবেশকারীরা ঢোকার পরে কীভাবে পরিচয়পত্র তৈরি হয়ে যায়? কিন্তু বিএসএফের কার্যক্ষেত্রের পরিধি বাড়ানোর কথা উঠলেও বিরোধিতা করা হয়!'
বাংলাদেশের অশান্তির আঁচ এবার এসে পড়েছে বাংলার রাজনীতিতেও। বেআইনি অনুপ্রবেশের একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে। যা নিয়ে লাগাতার রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে চলেছে বিরোধী দলগুলি। কিন্তু সীমান্তে অনুপ্রবেশের দায় সীমান্তরক্ষীবাহিনীর বলে এবার পাল্টা জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই অনুপ্রবেশ নিয়ে কড়া বার্তা দেন তিনি। বলেন, "BSF-এর সঙ্গে ষড় করে অনুপ্রবেশকারীদের ঢোকানো হচ্ছে। BSF অনুপ্রবেশকারীদের ঢোকাচ্ছে। আমাদের কাছে খবর আছে ইসলামপুর, সিতাই, চোপড়া এবং আরও অনেক জায়গা দিয়ে লোক ঢোকাচ্ছে BSF। BSF মেয়েদের উপর অত্যাচার করছে।" কোন কোন এলাকা দিয়ে লোক ঢোকানো হয়েছে, তা নিয়ে ডিজি রাজীব কুমারের কাছে রিপোর্টও চান মমতা। (Border Infiltration)
মমতা আরও বলেন, "সীমান্ত আমাদের হাতে নয়, BSF-এর হাতে। বাইরে থেকে কারা আসছে, সেই হিসেব আমাদের হাতে নেই, কেন্দ্রের হাতে। বিমানে চেপে যারা আসে, আগে সেই তালিকা দেওয়া হতো, এখন দেওয়া হয় না। ফলে কারা আসছে, কারা ঢুকছে জানতে পারি না। কেউ যদি মনে করে বাংলায় অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়ে তৃণমূলকে বদনাম করব, এটা তৃণমূল করছে না। তৃণমূলের অধিকার নেই, সাধ্যও নেই। এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে BSF, ভাল করে শুনে রাখুন। কেউ কেউ BSF-এর দায় তৃণমূলের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন। তাঁদের বলব, সংযত হোন, সংবেদনশীল হোন, ন্যায়-অন্যায় দেখুন।"
মমতার কথায়, "তৃণমূল সীমান্ত পাহারা দেয় না, পুলিশও দেয় না। BSF পাহারা দেয়। পুলিশের কাছে কিন্তু তথ্য এসে পৌঁছয়, জেলাশাসকের কাছে তথ্য থাকে। অর্থাৎ পুলিশ, জেলাশাসকরা দায়িত্ব পালন করেননি। রাজীব কুমারের কাছ থেকে এবং স্থানীয় সূত্র থেকে কিছু তথ্য পেয়েছি আমরা। আমার রিপোর্ট চাই। কড়া চিঠি লিখব আমি। আমরা চাই, ওখানেও শান্তি থাক, এখানেও থাক। আমাদের দুই বাংলার মধ্যে কোনও খারাপ সম্পর্ক নেই। একভাষায় কথা বলি, চিকিৎসার কারণে, মানবিকতার কারণে কেউ আসতেই পারেন। কিন্তু আমাদের জানাতে হবে। এখানে গুন্ডা পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সীমান্ত পেরিয়ে এসে খুন করে চলে যাচ্ছে।"
এরপরই মমতাকে কড়া চিঠি শুভেন্দুর।
আরও পড়ুন: ভেঙেছে কাঁধ, নাক, মাঠের ভয়াবহ ঘটনার পর কেমন আছেন দুই ক্রিকেটার?