Bombay High Court: নাবালিকার পিছু নেওয়া, তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়াও যৌন হেনস্থা, POCSO-র আওতায় অপরাধ, জানাল কোর্ট
POCSO Act: একটি মামলার শুনানিতে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ এই রায় শুনিয়েছে।
নাগপুর: আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। সেই নিয়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠে আসছে ভূরি ভূরি। এমন পরিস্থিতিতে বড় রায় শোনাল বম্বে হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, বার বার আপত্তি জানানো সত্ত্বেও কোনও প্রাপ্তবয়স্ক যদি নাবালিকাকে উত্যক্ত করেন, তা POCSO আইনের আওতায় অপরাধ হিসেবে গন্য হবে। (Bombay High Court)
একটি মামলার শুনানিতে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ এই রায় শুনিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, লাগাতার যদি কোনও নাবালিকার পিছু নেওয়া হয়, না বলা সত্ত্বেও যদি ভালবাসা ব্যক্ত করতে যান কোনও প্রাপ্তবয়স্ক, সেক্ষেত্রে যৌন নির্যাতন থেকে শিশু সুরক্ষা আইনে তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধ ধারায় মামলা দায়ের হবে। বিচারপতি গোবিন্দ সনপ এই রায় শুনিয়েছেন। (POCSO Act)
২০১৭ সালের একটি মামলার শুনানিতে এই রায় দিয়েছে আদালত। মিঠুরাম ধুরবে নামের ২৮ বছরের যুবকের বিরুদ্ধে ১৩ বছরের স্কুল পড়ুয়াকে উত্যক্ত করার অভিযোগ ওঠে। জানা যায়, স্কুল এবং টিউশন যাওয়ার পথে মোটর সাইকেলে চেপে কিশোরী মেয়েটির পিছু নিতেন মিঠুরাম। একদিন মেয়েটির হাত টেনে ধরেন তিনি। ভালবাসা ব্যক্ত করেন।
ঘটনাস্থলেই প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে মেয়েটি। মেয়েটি ওই যুবককে থাপ্পড়ও মারে। বাড়ি ফিরে মা-বাবাকেও বিষয়টি জানায়। এর পর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মেয়েটির পরিবারের লোকজন। মিঠুরামের বিরুদ্ধে মেয়েটির পিছু নেওয়ার জন্য ৩৫৪-ডি (১)(আই) ধারায় মামলায় দায়ের হয়। পাশাপাশি, POCSO আইনের ১২ নম্বর অনুচ্ছেদেও মামলা দায়ের হয়। অমরাবতী দায়রা আদালত এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা শোনায় মিঠুরামকে।
নিম্ন আদালতের সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মিঠুরাম। মিথ্যে অভিযোগে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেন। কিন্তু নিম্ন আদালতের রায়ই বজায় রাখে হাইকোর্ট। আদালত জানায়, অভিযুক্তের আচরণ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ক্ষতি করার উদ্দেশ্য ছিল। লাগাতার মেয়েটির পিছু নিচ্ছিলেন। প্রেমের প্রস্তাবও দেন। এমনকি মেয়েটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেও, জোর গলায় ঘোষণা করেন, একদিন না একদিন তাঁর প্রস্তাবে হ্যাঁ বলতেই হবে মেয়েটিকে। মেয়েটির ক্ষতি করাই উদ্দেশ্য ছিল ওঁর, আচরণেই তা স্পষ্ট।
আদালতে কিশোরীর তরফে জানানো হয়, ওই যুবক লাগাতার হেনস্থা করে গিয়েছে তাকে। স্পষ্ট ভাষায় না বলার পরও সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাপ দেওয়া হয়েছে, যা যৌন হেনস্থার মধ্যেই পড়ে। যুবকটির উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কিশোরীর আইনজীবী। শেষ পর্যন্ত আদালতও তাতেই সিলমোহর দেয়।