বাঁকুড়ায় স্ত্রীকে খুন করে দেহ পুঁতে রাখার স্বীকারোক্তি স্বামীর, উদ্ধার বধূর কঙ্কাল
বাঁকুড়া: প্রথমে উদয়ন। প্রেমিকা, বাবা-মাকে মেরে পুঁতে দিয়েছিল ঠাণ্ডা মাথার এই যুবক। আর এবার মুলুকচাঁদ। আর এক বিশ্বাসঘাতকার গল্প! আরও একবার প্রিয় মানুষটার হাতেই রক্ত মাংসের শরীর পরিণত হল কঙ্কালে! সাল ২০১৫। বাঁকুড়ার আশ্রম পাড়ার বাসিন্দা পূজা বাউড়ির সঙ্গে বিয়ে হয় বর্ধমানের শক্তিগড়ের বেলনা গ্রামের বাসিন্দা মুলুকচাঁদ সেনের। কিন্তু, ওই বছরই মে মাসে আচমকাই উধাও হয়ে যান পুজা। তাঁর পরিবার বাঁকুড়া সদর থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ পুজার শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করে। উধাও হয়ে যান স্বামী মুলুকচাঁদ। গত দু’বছরে পুজারও কোনও হদিশ মেলেনি। খোঁজ মেলেনি তাঁর স্বামীরও। অবশেষে গোপনসূত্রে খবর পেয়ে মুকুলচাঁদের বাড়িতে হানা দেয় বাঁকুড়া থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। কিন্তু পুজা কোথায়? জেরার মুখে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার সবরকমের চেষ্টা করেছেন ধূর্ত স্বামী। সূত্রের খবর, প্রথমে পুলিশকে মুলুকচাঁদ বলেন, তিনি স্ত্রীকে খুন করে দেহ দামোদরে ভাসিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু, পুলিশ কিচ্ছু খুঁজে পায়নি। এরপর পুলিশকে মুকুলচাঁদ বলেন, স্ত্রীকে মেরে দেহ এক প্রতিবেশির বাড়িতে পুঁতে দিয়েছেন। কিন্তু, সেখানে গিয়েও কিছু পায়নি পুলিশ। এরপর ফের পুলিশকে বিভ্রান্ত করে অভিযুক্ত স্বামী জানান, স্ত্রীকে মুর্শিদাবাদে বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ মুর্শিদাবাদ থেকে খালি হাতে ফিরে আসে। পুলিশ সূত্রে দাবি, অবশেষে আর গল্প ফাঁদতে না পেরে মুলুকচাঁদ স্বীকার করেন স্ত্রী পূজাকে মেরে তিনি নিজের বাড়িতেই পুঁতে রেখেছেন। এরপর পুলিশ বেলনা গ্রামে গিয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে পুজার কঙ্কাল উদ্ধার করে। পুজার পরিবার দেহ সনাক্ত করেছে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফরেন্সিক টেস্ট করা হবে। সাধ করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু, শুরুতেই সব শেষ। বাবার চোখে শুধুই জল।