পণের টাকা না দেওয়ায় বধূকে পুড়িয়ে ‘খুন’, স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির পাঁচ সদস্য পলাতক
জলপাইগুড়ি: পণের জন্য ২৭ বছর বয়সী নববধূকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ। ভয়াবহ এই ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ির বামুনপাড়ায়। যে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ, তিনি আবার জলপাইগুড়ির একটি মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন বলে স্থানীয় সূত্রে দাবি। দেড় বছর আগে বামুনপাড়ার বাসিন্দা দেবব্রত মজুমদারের সঙ্গে বিয়ে হয় ধূপগুড়ির বাসিন্দা শিউলির। অভিযোগ, পেশায় ব্যবসায়ী দেবব্রত বিয়ের সময় ২ লক্ষ টাকা পণ চান। শিউলির বাবা কোনওমতে এক লক্ষ টাকা জোগাড় করে দেন। সঙ্গে গয়না এবং আসবাবপত্র। বাকি একলক্ষ টাকা পরে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আদায় করে তবেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন দেবব্রত। মৃতার বাবা পরিমল রায় বলেন, পণ চায়। কিছুটা দিয়েছিলাম। বাকিটা পরে দেব বলি। অভিযোগ, পণের এক লক্ষ টাকা বাকি থাকায় শিউলির ওপর অকথ্য অত্যাচার চালাতেন শিউলির শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। শিউলির বাবা মায়ের দাবি, রবিবার সকালে হঠাৎ শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোন করে জানানো হয় শিউলি গায়ে আগুন দিয়েছে। শুনে ছুটে যান তাঁরা। কিন্তু, হাসপাতালে পৌঁছনোর দশ মিনিটের মধ্যেই মেয়ের মৃত্যু হয়। শিউলির পরিবারের দাবি, শিউলিকে খুন করা হয়েছে। সেই কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পালান। স্বামী সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের হয়েছে। মৃতার বাবা বলেন, বডি দেখে বুঝলাম পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মাথা পুড়ে গেছে। মৃতার মা শোভা রায় বলেন, অ্যাসিড দিয়ে মেরেছে। দাঁতের পাটি নেই। শিউলির শ্বশুরবাড়িতে গিয়েও কারও দেখা মেলেনি। বাড়িতে একটি সাইনবোর্ড দেখা গিয়েছে, যেখানে গোটা গোটা হরফে লেখা, কলকাতা কমিউনিটি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ডিস্ট্রিক্ট কমিটি, জলপাইগুড়ি। শিউলির স্বামী, অর্থাৎ অভিযুক্ত দেবব্রত মজুমদার এই মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন বলে স্থানীয় সূত্রে দাবি। আপাতত তাঁকে ও পরিবারের সদস্যদের খুঁজছে পুলিশ।