Malda Youth Suicide: সালিশি সভায় জোর করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ, মালদায় আত্মঘাতী যুবক
রবিবার গ্রামেরই এক বাগানে ওই যুগলকে একসঙ্গে দেখে ফেলেন গ্রামের একদল। এরপর সালিশি সভায় বসিয়ে ওই যুগলের জোর করে বিয়ে দেওয়ানো হয় বলেই অভিযোগ।
করুণাময় সিংহ, মালদা : সালিশি সভায় জোর করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। পরেরদিনই তরুণের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। আর গোটা ঘটনাই ঘটল তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে, এমনই অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য মালদায়। সালিশি সভায় থাকার কথা স্বীকার পঞ্চায়েত সদস্যের। মায়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে অভিমানে নিজের বাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন প্রেমিক। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মালদার মানিকচক গ্রামপঞ্চায়েতের মনকুট বাঁধ এলাকায়।
বছর কুড়ির যুবক মানিক মন্ডল গ্রামেরই এক তরুণীর সঙ্গে গত বছর দেড়েক প্রণয়ঘটিত সম্পর্কে যুক্ত ছিলেন। রবিবার গ্রামেরই এক বাগানে ওই যুগলকে একসঙ্গে দেখে ফেলেন গ্রামের একদল। অভিযোগ, এরপরেই বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায়। গ্রামে বসানো হয় সালিশি। পরিবারের আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, সালিশি সভায় উপস্থিতি ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যও। সালিশি সভায় বিয়ের নিদান দেওয়ার পাশাপাশি জোর করে ওই যুগলকে স্থানীয় এক মন্দিরে বিয়েও দিয়ে দেওয়া হয় বলে জানা যাচ্ছে। এরপর মানিক মন্ডলের বাড়িতে ওই যুগলকে তুলে দিয়ে আসা হয়। মানিক মন্ডলের মা এমন ঘটনার আপত্তি জানান। কিন্তু তাঁর কোনও কথা কর্ণপাত করা হয়নি। এমন ঘটনায় মানিক মন্ডলের মা শ্যামলী মন্ডলের বক্তব্য ছিল, মানিকের বাবা কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে রয়েছেন। তাছাড়া এই সম্পর্কে তাঁদের আপত্তিও রয়েছে। তা সত্বেও পরিবারকে এই সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য করা হয়। তা নিয়ে মানিকের সাথে বচসাও হয় তাঁর মায়ের। জানা গিয়েছে সোমবার সকালেও মায়ের সাথে মানিকের কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই অভিমানে আত্মঘাতী হন মানিক। ঘটনা ঘিরে এলাকায় শোকের ছায়া। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মানিকচক থানার পুলিশ।
মৃত তরুণের দাদা তুষার মণ্ডল বলেছেন, 'আমাদের এখনই বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল না। পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। বাবা বাড়িতে নেই। ভিনরাজ্যে গিয়েছে। সেই কারণে আপত্তি ছিল। আমরা বলেছিলাম পরে বিয়ে দেওয়ার কথা।' এদিকে, মৃতের স্ত্রী বসুমতী মণ্ডল বলেছেন, 'আমাদের জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। ওর মা বিষয়টা মেনে নিতে পারেনি। তাই এই ঘটনা।' সালিশি সভার কথা স্বীকার করলেও, জোর করে বিয়ে দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আশিস মণ্ডন। তিনি বলেন, 'গ্রামের লোকজন বলেছিল। আমাকেও ডেকেছিল। আমিও ছিলাম। আমি প্রশাসনকে জানানোর কথা বলেছিলাম। কেউ রাজি হয়নি। জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়নি। সহমতেই বিয়ে দেওয়া হয়।' পুলিশ মৃত মানিক মন্ডলের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। যদিও এখনও এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। যুবকের আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া।