মায়ের কাজ নেই, লকডাউনে জুতো সেলাই করে সংসার চালাচ্ছে স্কুলের ফার্স্ট বয়
আধপেট খেয়েই কার্যত দিন কেটেছে মালদার কনুয়া হাইস্কুলের ফার্স্ট বয়ের।
মালদা: বড় পরীক্ষা দিয়ে স্বপ্নের উড়ান ধরার মাঝেই থমকে গিয়েছে জীবন। লকডাউনের কারণে শেষ হয়নি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাও। এদিকে বেঁচে থাকার শেষ রসদও ক্রমশ ফুরিয়ে আসছিল। বিগত কয়েকদিন কোনও বেলা খাবার জুটেছে, কোনও বেলা জোটেনি। আধপেট খেয়েই কার্যত দিন কেটেছে মালদার কনুয়া হাইস্কুলের ফার্স্ট বয়ের। কোনও উপায় না পেয়ে লকডাউনেও সেই ছেলে কিনা জুতো সেলাই করছে!
হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুয়া বাজারের মোড়ে অস্থায়ীভাবে জুতো সেলাইয়ের কাজ করছে স্কুলের ফার্স্ট বয় সঞ্জয় রবিদাস। ২০১৮ সালে প্রথম দুরন্ত রেজাল্ট করে গোটা স্কুলের নজর কেড়েছিল সঞ্জয়। উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষাতেও প্রথম হয় সে। ২০০৩ সালে সঞ্জয়ের বাবা মারা যান। সঞ্জয়ের মা জমিতে নিড়ানির কাজ করে সংসার চালান। লকডাউনের কারণে তিনিও কর্মহারা। এই সঙ্কটে সঞ্জয়কেই সংসার চালাতে কার্যত পথে নামতে হয়েছে। ছোটবেলায়ও জুতো সেলাই করেছে সঞ্জয়। অভাব অনটনের সংসারে গত ৭-৮ বছর ধরে সঞ্জয় জুতো সেলাই করে মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে। সংসার টানার পাশাপাশি পড়াশোনাও করছে।
সঞ্জয় রবিদাস জানিয়েছে, “ভেবেছিলাম লকডাউন উঠে গেলে সব স্বাভাবিক হবে। মা কাজ পাচ্ছে না। পরিবারের উপার্জন করার মতো এখন একমাত্র আমিই রয়েছি। কীভাবে দিন কাটাব ভেবেই কুল করতে পারছি না।”
কনুয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজা চৌধুরী সঞ্জয়ের সঙ্কটের কথা জানার পর বলেন, “ওর পড়াশোনার ব্যাপারে স্কুলের তরফ থেকে সমস্ত শিক্ষক সবসময় পাশে থাকবে। এছাড়াও স্কুল আরও কোনওভাবে সাহায্যে করতে পারবে কিনা তাও দেখা হচ্ছে।” প্রধান শিক্ষক আশাবাদী, মাধ্যমিকে যেমন ভালো ফল করেছিল উচ্চমাধ্যমিকেও তেমনই সাফল্য পাবে সঞ্জয়।