Purba Bardhaman School: করোনা আবহে বন্ধ স্কুল, দখল নিয়েছে কয়েক হাজার বাদুড়
বাদুড় তাড়াতে গিয়ে সমস্যায় স্কুল কর্তৃপক্ষ।
কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান: করোনা আবহে বন্ধ থাকা স্কুল দখল হয়ে গিয়েছে। স্কুল দখল করে রীতিমতো সংসার পেতে বসেছে। না, মানুষ বা অন্য কোনও প্রাণী নয়। স্কুল দখল করে নিয়েছে একপাল বাদুড়। স্কুল কর্তৃপক্ষ হাজার চেষ্টা করেও দখলদারি হঠাতে পারছেন না। স্কুল ছাড়তে নারাজ বাদুড়ের পাল। বাধ্য হয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ স্কুল কর্তৃপক্ষ।
গত বছর থেকেই বন্ধ স্কুল। সেই সুযোগে স্কুল এখন বাদুড়ের দখলে। স্কুলের সর্বত্র তাদের অবাধ গতিবিধি। নিস্তব্ধতা ও নীরবতাকে কাজে লাগিয়ে এখন স্কুলেই তাদের ভরা সংসার। তাদের নিয়েই এখন চরম সমস্যায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাদুড়দের মুখে করে আনা নানা খাবারের অংশ এবং বিষ্ঠার দুর্গন্ধে দমবন্ধ করা পরিবেশ স্কুলের।
বর্ধমান শহরের প্রাচীন স্কুলগুলির মধ্যে একটি রাজ কলেজিয়েট স্কুল বা রাজ স্কুল। করোনা আবহে প্রায় দেড় বছর বন্ধ রয়েছে স্কুলের পঠনপাঠন। স্কুল বন্ধ থাকার সুযোগে সম্পূর্ণ স্কুল চলে গেছে জবরদখলকারীদের দখলে। স্কুলের দখল নিয়েছে বাদুড়ের দল। স্কুল চত্বরে বাসা বেঁধেছে ছোট, বড় কয়েক হাজার বাদুড়। দিনের পর দিন তারা নিশ্চিন্তে চালিয়ে যাচ্ছে নিজেদের রাজত্ব। এর জেরে স্কুলে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। চরম সমস্যায় পড়েছেন স্কুলের শিক্ষক থেকে শিক্ষাকর্মীরা।
স্কুলে পড়ুয়াদের আসা বন্ধ থাকলেও, মাঝেমধ্যে সরকারি চাকরির পরীক্ষার কেন্দ্র পড়ছে এই রাজ কলেজিয়েট স্কুলে। বাদুড় আতঙ্কের মধ্যে কীভাবে হবে সরকারি চাকরির পরীক্ষা?
পাশাপাশি প্রশাসন সূত্রে খবর, করোনা আবহ কাটিয়ে পুজোর পর রাজ্য খুলতে পারে সব স্কুল। এই অবস্থায় স্কুলটিকে বাদুড়মুক্ত করতে রাতের ঘুম ছুটেছে কর্তৃপক্ষর। স্কুল দখল করে থাকা হাজার হাজার বাদুড় তাড়াতে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও বন দফতরের দ্বারস্থ হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রশাসন ও বন দফতরের পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টায় কিছু অংশ বাদুড়মুক্ত করা গেলেও, অধিকাংশ জায়গায় এখনও রয়ে গেছে তাদের রাজত্ব।
এ বিষয়ে রাজ কলেজিয়েট স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রবীর মন্ডল জানিয়েছেন, ‘লকডাউনে বন্ধ স্কুল চত্বর দখল নিয়ে নিয়েছে কয়েক হাজার বাদুড়। তাদের যত্রতত্র পড়ে থাকা বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ আমরা। মশাল জ্বালিয়ে, বোমা ফাটিয়ে কিছু বাদুড়কে তাড়ানো গেলেও, অধিকাংশই রয়ে গেছে স্কুল দখল করে। পাশাপাশি আগামী ২২ অগাস্ট সরকারি চাকরির পরীক্ষার কেন্দ্র পড়ছে এই স্কুলে। বাদুড়ের আতঙ্কে কীভাবে পরীক্ষা হবে, তা নিয়ে চিন্তিত আমরা। এ বিষয়ে শিক্ষা বিভাগের ডিআই ও জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ অবিলম্বে স্কুলকে বাদুড়মুক্ত করতে হবে এবং স্যানিটাইজ করতে হবে সম্পূর্ণ স্কুল চত্বর।’
যদিও বর্ধমানের আঞ্চলিক বন আধিকারিক নিশা শর্মা জানিয়েছেন, ‘বাদুড় তাড়ানোর নির্দিষ্ট কোনও পদ্ধতি না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। তবু আমরা প্রতিদিনই চেষ্টা করছি।’