Space Traffic Jam: মহাকাশেও তীব্র যানজট, মাথা গলানোর জায়গা নেই, যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে
Traffic Jam in Space: মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর ক্ষেত্রে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথই প্রথম পছন্দ বিজ্ঞানীদের, যেখান থেকে ভূপৃষ্ঠের দূরত্ব ২০০০ কিলোমিটার বা তার কম।
নয়াদিল্লি: রাস্তাঘাটে যানজট হওয়া নতুন কোনও ঘটনা নয়। এমনকি বিমান পরিবহণে আকাশেও যানজট দেখেছি আমরা। এবার পৃথিবীর কক্ষপথেও অসম্ভব যানজটের ছবি ধরা পড়ল। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, আগামী দিনে মহাকাশ গবেষণার পথেও এই যানজট বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অসহযোগিতার জেরেই এমন পরিস্থিতি বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। (Space Traffic Jam)
মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর ক্ষেত্রে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথই প্রথম পছন্দ বিজ্ঞানীদের, যেখান থেকে ভূপৃষ্ঠের দূরত্ব ২০০০ কিলোমিটার বা তার কম। কিন্তু বর্তমানে ওই অঞ্চলে মাথা গলানোর জায়গা নেই। কারণ এই মুহূর্তে সেখানে ১৪০০০ কৃত্রিম উপগ্রহ ভিড় করেছে, যার মধ্যে ৩৫০০টিই যদিও নিষ্ক্রিয়। মহাকাশে আবর্জনার ভিড় বাড়ছে হু হু করে। সংঘর্ষ লেগে যে কোনও মুহূর্তে অঘটন ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা। (Traffic Jam in Space)
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মহাজাগতিক ধ্বংসাবশেষ ভেসে বেড়াচ্ছে মহাকাশে। কোনও মহাকাশযান নিষ্ক্রিয় হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, উৎক্ষেপণের সময় বা পরবর্তীতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া মহাকাশযান, রকেটের টুকরোও ওই ভিড়ের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে বেড়েই চলেছে মহাজাগতিক ধ্বংসাবশেষেরসংখ্যা। বার বার সেই নিয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হলেও, কাজের কাজ হয়নি।
চলতি বছরের অক্টোবর মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাকাশ যানচলাচল সমন্বয় কমিটি বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। মহাকাশে সম্পর্কিত ডেটাবেস তৈরির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তারা। রাষ্ট্রপুঞ্জের বহির্জগৎ বিষয়ক বিভাগের সদস্য আরতি হোল্লা-মইনি বলেন, "মহাকাশ যানচলাচল সমন্বয়ে আর ঢিলেমি দেওয়া যাবে না। পরস্পরের সঙ্গে তথ্য ভাগ করে নিতে হবে আমাদের, যাতে মহাকাশে সংঘর্ষ এড়ানো যায়।"
পৃথিবীর কক্ষপথের নিম্ন অংশকে নিরাপদ রাখা অবশ্য কর্তব্য প্রত্যেক দেশের। কারণ সেখান থেকেই গোটা পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থা, নেভিগেশন প্রযুক্তি পরিচালিত হয়। নির্বিঘ্নে সমস্ত পরিষেবা যাতে বজায় থাকে, তার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ করার কথা উঠেও এসেছে বার বার। কিন্তু কিছু দেশ সমস্ত তথ্য প্রকাশে রাজি হলেও, বহু দেশই তাতে রাজি নয়। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে তথ্যপ্রকাশ এড়িয়ে গিয়েছে তারা।
এমন পরিস্থিতিতে যত দিন যাচ্ছে, ঝুঁকি বাড়ছে। চলতি বছরের অগাস্ট মাসেই মহাকাশে পৌঁছে চিনের একটি রকেটে বিস্ফোরণ ঘটে। জুন মাসে বিস্ফোরণ ঘটে রাশিয়ার একটি কৃত্রিম উপগ্রহে। ধ্বংসাবশেষ এত দূর পর্যন্ত ছড়ায় যে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে লুকিয়ে পড়তে হয় নভোশ্চরদের। ইলন মাস্কের SpaceX-এর মতো বাণিজ্যিক সংস্থা মহাকাশ গবেষণায় নাম লেখানোর পর থেকে মহাকাশে ভিড় আরও বেড়ে গিয়েছে। হিসেব বলছে, আগামী কয়েক বছরে আরও কয়েক হাজার কৃত্রিম উপগ্রহ রওনা দেবে মহাকাশে। তাই এভাবে চললে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।