West Bengal : ফের কুসংস্কারের বলি, সাপের কামড়ে দেগঙ্গায় প্রাণ গেল যুবকের
সাপের কামড়ানো যুবককে চিকিৎসকের পরিবর্তে ওঝার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ওঝার ঝাড়ফুঁক শেষ করে বাড়িতে নিয়ে গেলে, ফের অসুস্থ হয়ে হয়ে পড়েন যুবক। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন
সমীরণ পাল, দেগঙ্গা : আবারও কুসংস্কারের বলি হতে হল একটা তরতাজা প্রাণকে। সাপের কামড়ে আক্রান্ত যুবককে চিকিৎসকের পরিবর্তে ওঝার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরে ওঝার ঝাড়ফুঁক শেষ করে বাড়িতে নিয়ে গেলে, ফের অসুস্থ হয়ে হয়ে পড়েন ওই যুবক। তখন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেগঙ্গা থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন।
ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে আজও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে কুসংস্কার। আজও বহু জায়গাতেই অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসকের পরিবর্তে নিয়ে যাওয়া হয় ওঝার কাছে। আর এই কুসংস্কারের জেরেই এক তরতাজা যুবকের প্রাণ গেলো দেগঙ্গায় বেড়াচাঁপা পাড়ুঁই পাড়া এলাকায়। মৃত যুবকের নাম সমীর পাড়ুঁই (৪০)। মৃত যুবকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই যুবকের পেশা ছিল মাছ ধরা । রাতের অন্ধকারে খালে বিলে মাছ ধরতে যেতে হত তাঁকে। দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা দেউলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনে বিলে শুক্রবার রাতে মাছ ধরতে যান ওই যুবক। তখনই তাঁকে বিষধর সাপে কামড়ায়। এরপর সমীর বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে আসার পর যুবককে কী কামড়েছে তা শনাক্ত করতে ওঝার বাড়িতে যান তাঁর পরিবারের লোকেরা। ওঝার বাড়িতে যাওয়ার পরে ওঝা ঝাড়ফুঁক করে, গাছ গাছড়ার ওষুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। ওঝার কাছ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসার পর গভীর রাতে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই যুবককে দেগঙ্গা বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বিংশ শতাব্দীতে গ্রাম বাংলার মানুষ আজও কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে তা এই ঘটনায় আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শোকাহত পরিবার সংবাদমাধ্যমের কাছে গোটা ঘটনাটা জানান।
উল্লেখ্য, সাপে কামড়ের ক্ষেত্রে সচেতনতা ও সতর্কতা সবচেয়ে জরুরি। সবচেয়ে বেশি জরুরি, সাপে কামড়ালে সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। ওঝার বাড়িতে যাওয়াটা ঠিক নয়। সাপে কাটার পর যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তবেই এই সাপে কাটার ফলে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা কমবে। পাশাপাশি এসব ক্ষেত্রে মানুষকেও অনেক সচেতন হতে হবে।