এক্সপ্লোর
Advertisement
কাকে রেখে কাকে ছাঁটবেন দিদি, উদ্বেগ দলে
পশ্চিমবঙ্গের জন্য মঙ্গলবার একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছে কেন্দ্রের সরকার। সে ব্যাপারে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরের বিদায়ী মন্ত্রীর কাছে মত জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে রাজি করানো যায়নি তাঁকে। কেন? পরে ঘরোয়া মহলে তিনিই হেসে বললেন, ‘‘ধুর্, এখন প্রতিক্রিয়া দিয়ে মরি আর কী!’’
বিপুল সাফল্যের সঙ্গে ক্ষমতায় ফিরে কাল, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শপথ নেবে তাঁর নতুন মন্ত্রিসভা। তার আগে দলে জল্পনা এই যে— মোটামুটি ভাবে বড় দফতরগুলিতে মুখের বদল হবে না। যিনি যে দফতরের মন্ত্রী ছিলেন, তিনি সেখানেই থাকবেন। কিন্তু জল্পনা তো জল্পনাই। তৃণমূল নেতারা তাই বলছেন, কেন্দ্রের কোনও প্রকল্প নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের বিদায়ী মন্ত্রী যদি প্রতিক্রিয়া দিতেন তা হলে তা আত্মবিশ্বাস দেখানোরই সামিল হত। হিতে বিপরীত হতে পারত তাতে!
মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে দিদির দলে এমন উৎকণ্ঠা এখন বিক্ষিপ্ত কোনও চিত্র নয়। বরং পুরোদস্তুর চিন্তায় রয়েছেন নেতা-বিধায়ক-বিদায়ী মন্ত্রীরা। কার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে, কার কপাল পুড়বে, উদ্বেগ তা নিয়েই। এরই মধ্যে এ দিন এক ফাঁকে প্রথা মেনে রাজ্যপালের কাছে ইস্তফা দিয়েছেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূলের একাংশের মতে, মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে কিছুটা হলেও চাপে রয়েছেন দিদি। প্রত্যাশীর সংখ্যা দু’শো ছুঁই ছুঁই। কাকে বাদ দিয়ে কাকে মন্ত্রী করবেন, তা নিয়ে দিদির চিন্তা অমূলক নয়। তা ছাড়া জেলা ধরে ধরে ভারসাম্য রাখাও জরুরি। তবে দিদির ঘনিষ্ঠদের মতে, তাঁর কোনও চাপই নেই। তাঁদের মতে, ভোটের আগে কিছু নেতা ভেবেছিলেন, তৃণমূল ১৬৫-র বেশি আসন জিতবে না। সে ক্ষেত্রে দলে তাঁদের গুরুত্ব বাড়বে। পছন্দমতো দফতর বা একাধিক দফতর পেতে পারেন তাঁরা। ফল হয়েছে উল্টো। ২১১টি আসনে দিদিই জিতেছেন। তাই এখন কারও টুঁ শব্দ করার জো নেই। দিদি যাঁকে যা দফতর দেবেন, তাই খুশি হয়ে নিতে হবে।
প্রশ্ন হল, মন্ত্রী হচ্ছেন কারা?
সূত্রের মতে, অমিত মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসের মতো বিদায়ী মন্ত্রীদের দফতর বদলের সম্ভাবনা খুব বেশি নেই। তবে ভোটে আট জন মন্ত্রী হেরেছেন। তাই পূর্ত, পরিবহণ, আইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু দফতরে নতুন মুখ আনতে হবে। সে দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ দফতর পাওয়ার দৌড়ে প্রথমেই নাম রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। নন্দীগ্রামের নতুন বিধায়ককে মন্ত্রী করার কথা ভোটের আগেই মমতা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি এক না একাধিক দফতর পান, সেটাই দেখার। গুরুত্বপূর্ণ দফতর পাওয়ার সম্ভাবনা রাসবিহারীর বিধায়ক তথা দলের শ্রমিক নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের।
মন্ত্রী হওয়ার ব্যাপারে তৃণমূলের পুরনো বিধায়কদের মতো এ বার নতুনদের মধ্যেও আশা রয়েছে। তবে বুধবার কালীঘাটে দলের নেতাদের নিয়ে ডাকা বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘প্রথম বার বিধায়ক হয়েই কেউ যেন মন্ত্রী হওয়ার আশা না করেন।’’ নেত্রী এ কথা বললেও নতুনদের মধ্যে থেকে কয়েক জনের ভাগ্য প্রসন্ন হতে পারে। সেই সম্ভাব্যদের তালিকায় রয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী, কুমারগ্রামের বিধায়ক জেমস কুজুর। আবার কোচবিহার থেকে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বা উদয়ন গুহর মধ্যে এক জনের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা ছাড়া, দৌড়ে রয়েছেন উত্তর দিনাজপুরের বিধায়ক গোলাম রব্বানি এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের আদিবাসী নেতা বাচ্চু হাঁসদা।
মালদহে এ বার একটি আসনেও জেতেনি তৃণমূল। ওই জেলা থেকে মন্ত্রিসভায় দুই মন্ত্রী ছিলেন। তবে মুর্শিদাবাদে দল চারটি আসন জেতার পর মনে করা হচ্ছে, অধীর চৌধুরীকে চাপে ফেলতে সেখানে একাধিক বিধায়ককে মন্ত্রী করবেন মমতা। অনেকের মতে, হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের বিধায়ক তথা প্রাক্তন বিচারপতি আব্দুল গনিকে আইনমন্ত্রী করতে পারেন দিদি। নতুনদের জায়গা করে দেওয়ার জন্য বিদায়ী মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে পারে কিছু বর্ষীয়ান মুখ। তার মধ্যে রয়েছেন সুদর্শন ঘোষদস্তিদার, রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় এবং হায়দার আজিজ সফি।
প্রসঙ্গত, পরাজিত মন্ত্রীদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলেন প্রাক্তন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত, প্রাক্তন অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস, প্রাক্তন আইন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং প্রাক্তন পূর্ত মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী। মমতা এ দিনের বৈঠকে বুঝিয়ে দেন, তাঁদের মন্ত্রী করতে না পারলেও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবেন তিনি। বিশেষ করে মণীশবাবুকে বিদ্যুৎ দফতর সংক্রান্ত কোনও সরকারি পদ দেওয়া হতে পারে।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
খবর
জেলার
ক্রিকেট
Advertisement