Covid 19 Update: সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় প্রচার শুরুর ভাবনা স্বাস্থ্য দফতরের
ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর কোভিড সংক্রান্ত একটা চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় অসামরিক পরিবহণ মন্ত্রককে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে কেরল, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা এবং কর্ণাটক থেকে এরাজ্যে উড়ানে আসা যাত্রীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা আরটিপিসিআর কোভিড টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ থাকতে হবে ৷
ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: বিভিন্ন রাজ্যে ফের বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। তাহলে কি দেশে শুরু হল সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ? উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে দিল্লি, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব-সহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি রাজ্য। সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। মাস্ক, স্যানিটাইজার ও সামাজিক দূরত্ব নিয়ে নতুন করে প্রচার শুরুর ভাবনা স্বাস্থ্য দফতরের।
বছর ঘুরতে চললেও, এখনও কাটেনি করোনার আতঙ্ক। হাতে টিকা এলেও উদ্বেগ বাড়িয়েছে ভাইরাসের নতুন স্ট্রেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, গত কয়েক দিন ধরে কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে মহারাষ্ট্র, কেরল, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এবং পঞ্জাবে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১০৪ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৭৪২। আগের তুলনায় এই সংখ্যাটা কম হলেও নতুন করে কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে মহারাষ্ট্র ও কেরল।
ইতিমধ্যে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর কোভিড সংক্রান্ত একটা চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় অসামরিক পরিবহণ মন্ত্রককে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে কেরল, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা এবং কর্নাটক থেকে এরাজ্যে উড়ানে আসা যাত্রীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে করা কোভিভ নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মোট আক্রান্তের মধ্যে ৭৫ শতাংশ অর্থাত্ ১০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্র এবং কেরলে। তাহলে কি দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হল? সেই সংক্রমণ এই রাজ্যেও শুরু হবে না তো? চিকিৎসক অজয় সরকারের কথায়, ‘‘টিকাকরণের গতি বাড়লে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে, আশঙ্কার কারণ তো বটেই !’’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইতিমধ্যেই কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে বিভিন্ন রাজ্য। মাস্ক না পরে রাস্তায় বেরোলেই মোটা টাকা জরিমানা করছে বৃহন্মুম্বই পুরসভা। পঞ্জাবে নতুন করে লাগু হয়েছে কোভিড বিধি। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে দিল্লি সরকারও। মহারাষ্ট্র, কেরল, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ ও পঞ্জাব থেকে রাজধানীতে ঢুকতে গেলে লাগবে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট। ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত লাগু থাকবে এই নিয়ম। পাশাপাশি কর্ণাটক সরকারের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে যে কেরল, মহারাষ্ট্র এবং মলদ্বীপ থেকে উড়ানে আসা যাত্রীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে করা কোভিভ নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক।
এরই মধ্যে কাঠি পড়ে গিয়েছে রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ঢাকে। চলছে মিটিং-মিছিল-সমাবেশ। যা নিয়ে আশঙ্কিত চিকিৎসকদের একাংশ। চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীর কথায়, ‘‘আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে ৷ এখন ভোটের আবহ ৷ মানুষের কাছে যেতে হবে ৷ কিন্তু নিজেকে অসুরক্ষিত করে ভোটের উন্মাদনায় ভেসে যাবেন না ৷’’
চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, ‘‘বিভিন্ন রাজ্যে যখন হচ্ছে ৷ তখন এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে ৷ মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার বাড়াতে হবে ৷ পরীক্ষার সংস্থা বাড়াতে হবে।’’
এই প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসেছে এই রাজ্যও। স্বাস্থ্য দফতর পরিসংখ্যান অনুযায়ী- এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১০ হারাজ ২৫৩ জনের। মোট আক্রান্ত ৫ লক্ষ ৭৪ হাজার ৯৯। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৮৯জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। মাস্ক পরা, স্যানিটাইজেশন ও সোশ্যাল ডিসটান্সিং নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে নতুন করে প্রচার শুরু করা হবে। তবে চিকিৎসক মহলের একাংশের মতে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মীদের মধ্যে করোনা প্রতিরোধ বিধি সম্পর্কে শিথিলতা এমন পর্যায়ে যে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ এ রাজ্যে আছড়ে পড়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।