Women's Reservation Bill: মেয়েদের এত সম্মান করে বিজেপি! তাহলে সংসদে কী করছেন ব্রিজভূষণ? লোকসভায় গর্জে উঠলেন কাকলি
Kakoli Ghosh Dastidar: বুধবার লোকসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সেখানে উপস্থিত রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের সাংসদরা।
নয়াদিল্লি: মহিলা সংরক্ষণ বিলের কৃতিত্ব নিয়ে সংসদে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ তৃণমূলের (TMC)। বাংলার উদাহরণ তুলে ধরে কেন্দ্রকে নিশানা করলেন দলের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার (Kakoli Ghosh Dastidar)। জানালেন, বাংলায় ঢের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা জনপ্রতিনিধিদের ৪০ শতাংশ সংরক্ষণ দিয়েছেন। অথচ ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর এতদিন লেগে গেল বিজেপি-র। আদৌ মহিলাদের নিয়ে চিন্তিত বিজেপি, নাকি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ছলনার আশ্রয় নিচ্ছে, সেই প্রশ্নও তোলেন কাকলি। (Women's Reservation Bill)
বুধবার লোকসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সেখানে উপস্থিত রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের সাংসদরা। অভিষেকের ঠিক পাশে দাঁড়িয়েই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে বেঁছেন কাকলি। তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে আগেই কার্যকর হয়ে গিয়েছে। গোটা দেশে এই মুহুর্তে একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ ১৬টি রাজ্যে ক্ষমতায় থাকলেও, কোথাও মহিলা মুখ্যমন্ত্রী নেই বিজেপি-র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঢের আগে করে দিয়েছেন, এতদিনে উপলব্ধি হল আপনাদের। আমাদের রাজ্যে স্বাস্থ্য থেকে নারীকল্যাণ, শিল্প, মহিলাদের হাতেই রয়েছে মন্ত্রিত্ব।" মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৪০ শতাংশ সংরক্ষণ দিয়েছেন, কেন্দ্রও মহিলাদের সংরক্ষণ ৩৩ থেকে ৪০ করে দেখাক বলে চ্যালেঞ্জও ছোড়েন কাকলি।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পেশ করেছে মোদি সরকার। এর আওতায়, প্রতিটি নিবার্চনে লোকসভা এবং বিধানসভাগুলির এক তৃতীয়াংশ আসন ‘মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত’ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ১৯৯৬ সাল থেকে বার বার এই বিল সংসদে উঠলেও, একবারও কারণে তা পাস করানো যায়নি। এমনকি এই বিজেপি-ই একসময় মহিলা সংরক্ষণ বিলের বিরোধিতা করেছিল বলেও এ দিন সংসদে মন্তব্য করেন কাকলি।
এই প্রসঙ্গে নাম না করে বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যকে নিশানা করেন কাকলি। জানান, ২০১০ সালে কংগ্রেস মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস করাতে চাইলে, অমিত বলেছিলেন, নিজের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে গোটা দেশকে কার্যত পণবন্দি করে রেখেছেন সনিয়া। কোনও সংরক্ষণই আর থাকা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এমনকি স্থানীয় নির্বাচনে মহিলাদের সংরক্ষণ দিয়ে কাজের কাজ কী হচ্ছে, বিজেপি-র তরফে এমন প্রশ্নও উঠেছিল বলে জানান কাকলি। ২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকলেও, এতদিন কেন ওই বিল নিয়ে উদ্যোগী হয়নি কেন্দ্র, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগেই কেন এই তৎপরতা, প্রশ্ন তোলেন।
সংসদে দাঁড়িয়ে এদিন ব্রিজভূষণ সিংহকে নিয়েও কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন কাকলি। ভারতীয় মহিলা কূস্তিগীরদের তরফে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌননিগ্রহ থেকে শ্লীলতাহানি, হুমকির একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই নিয়ে দিল্লিতে টানা ধর্নাও দেন ভারতীয় কুস্তিগীররা। তার পরও তাঁকে পদ থেকে সরানো হয়নি, আগের মতো সংসদেও আসছেন তিনি। তাই বিজেপি মহিলাদের সম্মান নিয়ে কথা বলা বিজেপি-র সাজে না বলে মন্তব্য করেন কাকলি। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, মোদি সরকারের কাছে জানতে চান তিনি।
@AITCofficial MP @kakoligdastidar seen as 'Durga' in #Parliament today
— Ranjan Sarkar Rana (@RanjansarkarTMC) September 20, 2023
She said Criminal like #BrijBhushan are sitting in House. Brij Bhushan Abuse of women #Wrestlers will pass this bill? This @BJP4India should learn to respect women first pic.twitter.com/wYG522xhD1
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস করাতে কেন্দ্র উদ্যোগী হলেও, ২০২৯ সালের আগে তা কার্যকর সম্ভব নয় বলে জানা গিয়েছে। এর জন্য জণগনতা এবং সীমানা পুনর্বিন্যাসকে কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে তারা। কিন্তু মহিলাদের সংরক্ষণের সঙ্গে সীমা পুনর্বিন্যাসের কী সংযোগ, প্রশ্ন তোলেন কাকলি। হাথরস, উন্নাও থেকে ভূরি ভূরি শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা সামনে এলেও আজ পর্যন্ত কারও কিছু হয়নি বলে দাবি করেন। তাই বিজেপি-র কথা এবং কাজের মধ্য়ে ফারাক রয়েছে বলে মন্তব্য করেন কাকলি। তিনি বলেন, "মূর্তি নির্মাণে দেদার খরচ না করে, প্রতিষ্ঠান, শহরের নাম না পাল্টে বরং নিজেদের মনটা পাল্টান।"
এ যাবৎ বিভিন্ন প্রকল্পের বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মহিলা সংরক্ষণ বিলের আলোচনায় সেই প্রসঙ্গও টানেন কাকলি। তাঁর দাবি, রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে যুক্ত বহু মহিলা। জবকার্ড রয়েছে তাঁকে। কিন্তু অক্লান্ত পরিশ্রমের পরও প্রাপ্য টাকা থেকে বঞ্চিত রয়ে যান। আসলে তাঁদের অপমান করছে মোদি সরকার। ইসরো-র মহিলা বিজ্ঞানী থেকে আইআইটি-র মহিলা গবেষকরা স্টাইপেন্ড পাচ্ছেন না, শ্রমিকরা পরিশ্রমের মূল্য পাচ্ছেন না বলেও সংসদে মন্তব্য করেন কাকলি। শিক্ষা, স্বাস্থ্যে মহিলাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার পাশাপাশি, গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যখাতে অতিরিক্ত বরাদ্দের দাবি জানান। সরকারের উচিত, আগে মহিলাদের সম্মান প্রদান করা, তাঁদের ছোট চোখে করে না দেখা, তার পর বিল আনা উচিত বলেও মন্তব্য করেন কাকলি।