Turkey Syria Earthquake: শ্মশানের নিস্তব্ধতা চারিদিকে, মৃত্যুপুরী তুরস্কে শবের সারি, ২০ হাজার ছোঁয়ার পথে
Turkey Earthquake Death Toll: সোমবার পর পর ৭.৮, ৭.৬ এবং ৬.০ তীব্রতায় ভূমিকম্প হয় তুরস্ক এবং তার পড়শি দেশ সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে।
আঙ্কারা: অটোমান সাম্রাজ্যের ৬০০ বছরের সুদীর্ঘ ইতিহাস। স্থাপত্য, প্রাচুর্যের গল্প মুখে মুখে ফেরে আজও। কিন্তু প্রকৃতির রোষে আজ মৃত্যু উপত্যকা তুরস্ক, পড়শি দেশ সিরিয়াও। বিধ্বংসী ভূমিকম্পের আঘাতে সেখানে মৃতের সংখ্যা ১৯ হাজার ছাড়াল (Turkey Syria Earthquake)। বৃহস্পতিবার সন্ধে পর্যন্ত পাওয়া শেষ তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ১৯ হাজার ৩০০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তুরস্কে এখনও পর্যন্ত ১৬ হাজার ১৭০ জনের মৃত্য়ু হয়েছে। সিরিয়ায় ৩ হাজার ১৬২ দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর (Turkey Earthquake Death Toll)। ২০১১ সালে ভূমিকম্পের পর সুনামির আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া জাপানে ১৮ হাজার ৪০০ জন মারা যান, সেই হিসেব টপকে গেল তুরস্ক-সিরিয়া।
এখনও পর্যন্ত ১৯ হাজার ৩০০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন
সোমবার পর পর ৭.৮, ৭.৬ এবং ৬.০ তীব্রতায় ভূমিকম্প হয় তুরস্ক এবং তার পড়শি দেশ সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে। তবে সেখানেই শেষ নয়, পর পর কমপক্ষে ৪০টি আফটারশক অনুভূত হয়, যার মধ্যে কোনও কোনওটির তীব্রতা রিখটার স্কেলে ৬.৭ পর্যন্ত ওঠে। তাতেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ছবির মতো সাজানো দেশ তুরস্কর কমপক্ষে ১০টি শহর, সীমান্তে সংযুক্ত সিরিয়ার একাধিক অঞ্চলও। ভূমিকম্প এতটাই তীব্র ছিল যে, ৪৫৬ কিলোমিটার দূরের সাইপ্রাস, ৮৭৪ কিলোমিটার দূরের লেবানন, ১ হাজার ৩৮১ কিলোমিটার দূরের ইজরায়েল এবং ১ হাজার ৪১১ কিলোমিটার দূরের মিশর পর্যন্ত তার প্রভাব অনুভূত হয়।
তার পর থেকে যত সময় গিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে সারি সারি লাশ বেরিয়ে এসেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও না জানি কতশত শরীর আটকে রয়েছে, ইয়ত্তা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, ধ্বংসস্তূপ যত সরবে, ততই বেরোবে লাশের সারি। এমনকি মৃতের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে হু-র সেই আশঙ্কাই সত্য হতে চলেছে বলে বদ্ধমূল হচ্ছে ধারণা।
কারণ তুরস্কে আগাগোড়া উদ্ধারকার্যে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে প্রকৃতি। প্রবল শৈত্যপ্রবাহ, তুষারপাত, বৃষ্টির জেরে বার বার বিঘ্নিত হচ্ছে উদ্ধারকার্য। তাই উদ্ধারকার্যে যত দেরি হবে, ততই লাশের সংখ্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকা, ভারত-সহ একাধিক দেশ তুরস্কের পাশে থাকতে এগিয়ে গিয়েছে। হাজার হাজার উদ্ধারকর্মী কাজ করে চলেছেন দিনরাত এক করে। পরিস্থিতি অনুধাবন করে দেশের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ শহরে আগামী তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট রিচেপ তইপ আর্দোয়ান।
ঠান্ডায় ধ্বংসস্তূপের আশেপাশেই তাঁবু খাটিয়ে রয়েছেন হাজার হাজার মানুষ
একই সঙ্গে এই ভূমিকম্প তুরস্কের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডকেও ধসিয়ে দেবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। কারণ এই মুহূর্তে সেখানে শহরের পর শহর শ্মশানের রূপ ধারণ করেছে। ইঁট-কাঠ-পাথরের ধ্বংসস্তূপ ব্যাতীত চোখে পড়ছে না কিছুই। কনও রকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন যাঁরা, তীব্র ঠান্ডায় ধ্বংসস্তূপের আশেপাশেই তাঁবু খাটিয়ে রয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বেঁচে না থাকার মতো অবস্থায় হাসপাতালেও বহু মানুষ রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কতজন সুস্থ জীবনে ফিরতে পারবেন, সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।