Volcano Indonesia: শক্তিশালী আগ্নেয়গিরিতে ভয়ঙ্কর অগ্ন্যুৎপাত, চতুর্দিক ঢেকে গেল কালো ধোঁয়া-ছাইয়ে! প্রাণহানির ঝুঁকি ইন্দোনেশিয়ায়
এ কারণে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি এলাকার আকাশ অন্ধকার হয়ে আসে এবং বিমান চলাচলেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

নয়া দিল্লি: ইন্দোনেশিয়ার সেমেরু আগ্নেয়গিরি থেকে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রধান দ্বীপ জাভায় আবারও জেগে উঠেছে একটি শক্তিশালী আগ্নেয়গিরি। বুধবার দুপুরে পূর্ব জাভার সেমরু পাহাড়ের আগ্নেয়গিরিটি অগ্ন্যুৎপাত শুরু করলে মুহূর্তেই আকাশ ঘন ছাইয়ে ঢেকে যায়। পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে এবং বিপদাপন্ন এলাকাগুলো দ্রুত খালি করার উদ্যোগ নিয়েছে।
দেশটির আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, সেমেরু আগ্নেয়গিরি থেকে ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার (৩ দশমিক ৪৮ মাইল) উঁচু ছাইয়ের মেঘ আকাশে ছড়িয়ে পড়েছে। ঝুঁকি এড়াতে বাসিন্দাদের আগ্নেয়গিরি থেকে ২ দশমিক ৫ কিলোমিটার (১ দশমিক ৫৫ মাইল) দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে। সেমরু আগ্নেয়গিরিটি বালি থেকে প্রায় ৩১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আগ্নেয়গিরির ক্রমাগত অগ্ন্যুৎপাতের ফলে আকাশের ১৩ কিলোমিটার ওপর পর্যন্ত ছাই পৌঁছে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এ কারণে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি এলাকার আকাশ অন্ধকার হয়ে আসে এবং বিমান চলাচলেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার ভূতাত্ত্বিক সংস্থা বিবৃতিতে বলেছে, “মাউন্ট সেমরুর চূড়ার ৮ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে সাধারণ মানুষকে যেকোনো ধরনের কাজকর্ম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগ্নেয়গিরি থেকে যেকোনো সময় পাথর বা অগ্ন্যগোলারূপী লাভা ছিটকে আসতে পারে, যা প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।” তিনি আরও জানান, অগ্ন্যুৎপাতের কারণে আশপাশের এলাকায় ভূমিকম্পের উচ্চ সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।
#Indonesia 🇮🇩 #volcano_eruption live : The webcam footage of a pyroclastic flow from Mount Semeru's eruption showing superheated ash and rocks surging down the slope at high speeds amid surrounding vegetation. pic.twitter.com/XJtCajzjrZ
— 𝐒𝐡𝐚𝐤𝐢𝐫 𝐀𝐡𝐦𝐞𝐝 𝐁𝐨𝐫𝐛𝐡𝐮𝐲𝐚𝐧 (@Shk__R) November 19, 2025
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে দ্রুত ঝুঁকি কমাতে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির পাশের দুটি গ্রামের প্রায় ৩০০ বাসিন্দাকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত পুরো অঞ্চল খালি রাখা হয়েছে, যাতে নতুন কোনও বিপদ দেখা দিলে দ্রুত উদ্ধারকাজ পরিচালনা করা যায়।
সেমরু আগ্নেয়গিরি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর একটি। ২০২১ সালে এই আগ্নেয়গিরিতে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল। তখন ৫০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন এবং ৫ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে হয়েছিল। সেই ঘটনার পর থেকে সেমরুর আশপাশের এলাকায় জনসাধারণ সর্বদা সতর্ক থাকে।
ইন্দোনেশিয়া পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল, কারণ দেশটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ার’ এলাকায় অবস্থিত। এখানে প্রায় ১৫০টির মতো সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে এবং মহাদেশীয় প্লেটের সংঘর্ষের কারণে নিয়মিত জ্বালামুখ সক্রিয় হয়ে ওঠে। ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সেমরুর বর্তমান অগ্ন্যুৎপাত বড় ধরনের ভূকম্পন বা পরবর্তী ধাপে আরও শক্তিশালী অগ্ন্যুৎপাতের ইঙ্গিত হতে পারে। ফলে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
অগ্ন্যুৎপাতের কারণে নিকটবর্তী এলাকায় দৃশ্যমানতা কমে গেছে। রাস্তা ও ঘরবাড়ির ওপর ছাই জমে চলাচলে সমস্যা তৈরি হয়েছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত ছাইয়ের কারণে শ্বাসকষ্ট এবং চোখের জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা হতে পারে। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখে মাস্ক ব্যবহার এবং বাইরে সীমিতভাবে বের হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।






















