সীমান্তে আচ্ছে দিন আসছে, দায়িত্ব নিয়েই ভারতকে ঘুরিয়ে ‘হুঁশিয়ারি’ বাজোয়ার
রাওয়ালপিন্ডি: যেদিন জম্মুতে জোড়া জঙ্গি-হামলা ঘটল, সেদিনই পাকিস্তানের নয়া সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। এসেই ঘুরিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে তাঁর ‘হুঁশিয়ারি’ সীমান্তে আচ্ছে দিন আসছে।
মঙ্গলবার, রাওয়ালপিন্ডির জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সের কাছে সেনা হকি স্টেডিয়ামে একটি অনুষ্ঠানে ৫৭ বছরের উত্তরসূরীর হাতে বাহিনীর ব্যাটন তুলে দেন বিদায়ী জেনারেল রাহিল শরিফ।
এর আগে গত শনিবারই বাজওয়াকে ফোর-স্টার জেনারেল হিসেবে উন্নীত করে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ করেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে সেনাপ্রধানের পদ হল অন্যতম শক্তিশালী। গত বছর থেকেই পাকিস্তানে জোর জল্পনা ছিল যে, রাহিলের মেয়াদবৃদ্ধি করতে পারে নওয়াজ প্রশাসন। কিন্তু গত জানুয়ারিতে রাহিল জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি মেয়াদ বৃদ্ধি চান না।
এদিন নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বাজওয়া জানিয়ে দেন, সীমান্ত পরিস্থিতি উন্নত করাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য। বলেন, নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি শীঘ্র ভাল হবে।
যদিও, প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুরিয়ে ভারতকে ‘হুঁশিয়ারি’-ই দিয়েছেন বাজওয়া। তাঁদের মতে, নতুন পাক সেনাপ্রধানের শপথের দিন ভারতীয় সেনার ১৬ কোরের সদর দফতরে নাশকতা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এই দুই ঘটনা একেবারে কাকতালীয় হতে পারে না বলেও মনে করেন তাঁরা।
পাকিস্তানের ষোড়শ সেনাপ্রধান হওয়ার আগে বাজওয়া পাক সেনার (বৃহত্তম) ১০ কোরের দায়িত্বে ছিলেন। এই কোরের দায়িত্ব ছিল নিয়ন্ত্রণরেখা সহ গোটা ভারত-সীমান্তের ওপর নজরদারি রাখা। এদিন বাজওয়া জানান, তাঁর ওপর প্রচুর দায়িত্ব। বাহিনীর মনোবল তুঙ্গে যাতে থাকে, তার জন্য তিনি সংবাদমাধ্যমেরও সাহায্যও চান।
নয়া সেনাপ্রধানের লক্ষ্য নিয়ে রবিবারই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, আমাদের বর্তমান সামরিক নীতিই বহাল থাকবে, আপাতত তাতে (বাজওয়ার অধীনে) কোনও রদবদল হচ্ছে না।
এদিকে, শেষবার বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে বিদায়ী সেনাপ্রধান রাহিল শরিফ ছিলেন আক্রমণাত্মক। এদিন কাশ্মীর নিয়ে ভারতকে একপ্রকার হুমকিও দেন ৬০ বছরের শরিফ।
তিনি বলেন, কাশ্মীরে ভারতের লাগাতার সন্ত্রাস এবং আগ্রাসী মনোভাব গোটা অঞ্চলের স্থিতাবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাঁর হুঁশিয়ারি, পাকিস্তানের ধৈর্য্যকে ভারত যদি দুর্বলতা মনে করে, তাহলে তারা ভুল করবে।
তিনি যোগ করেন, কাশ্মীর ইস্যুর সমাধান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।