পর্রীকরের সফরে ভারতের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে উদ্যোগী বাংলাদেশ
ঢাকা: ভারতের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতাকে আরও প্রসারিত করার ইচ্ছাপ্রকাশ করল বাংলাদেশ।
বুধবার, রাজধানী ঢাকায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ ভারতকে আশ্বস্ত করে জানান, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে তাঁর দেশ আপসহীন নীতি অবলম্বন করে। একইসঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতাকে আরও বৃদ্ধি করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তিনি।
পর্রীকর জানান, সন্ত্রাসবাদ হল এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সঙ্কট। তিনি মনে করিয়ে দেন, গোটা অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত। প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে জানানো হয়, উরি ও পঠানকোটে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন হামিদ। এই প্রেক্ষিতে পর্রীকরকে আশ্বস্ত করেছেন এই বলে যে, বাংলাদেশ কোনও ধরনের নাশকতাকে প্রশ্রয় দেয় না।
পাশাপাশি, দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে যাতে আরও বেশি ভারতীয় সেনা বাংলাদেশে যায়, তার জন্যও প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করেন হামিদ। এই প্রসঙ্গে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন বাংলা প্রেসিডেন্ট। বলেন, ওই যুদ্ধে বহু ভারতীয় বীর সেনানী শহিদ হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, পর্রীকরই হলেন প্রথম ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী, যিনি গত ৪৫ বছরে বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন। এদিন আব্দুল হামিদের সঙ্গে বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) তারিক আহমেদের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্পর্ককে আরও মজবুত করার জন্য আলোচনা করেন পর্রীকর।
আগামীকাল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন পর্রীকর। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে রয়েছেন তিন বাহিনীর উপ-প্রধানরা। রয়েছেন উপকূলরক্ষী বাহিনীর শীর্ষকর্তা। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, বাংলাদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের পদ সামলান শেখ হাসিনা-ই।
ভারতের পাশাপাশি, চিনের সঙ্গেও সামরিক ক্ষেত্রে সুসম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশের। চলতি মাসেই চিনের থেকে প্রথম সাবমেরিন পেয়েছে বাংলাদেশ। আগামী বছর আরও একটি সাবমেরিন আসার কথা। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে চিনা প্রভাব কমাতেই পর্রীকরের এই ঢাকা-যাত্রা।এদিন বাংলাদেশের তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা সেরে নেন ভারতীয় সামরিক কর্তারা। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। জানা গিয়েছে, আগামী মাসে ভারত সফরে আসছেন হাসিনা। সেই সময় দুই দেশের মধ্যে সম্ভবত একাধিক সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।