US-China Relations: 'দায় ঝেড়ে ফেললে চলবে না, দায়িত্ব নিতে হবে', পুতিন-বিরোধী বাইডেনকে বার্তা চিনপিংয়ের
US-China Relations: যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাশিয়ার গলার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফাঁস টেনে ধরলেও, চিনের অবস্থান নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে ওয়াশিংটন (US-China Relations)।
বেজিং: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে কার্যত আড়াআড়ি বিভাজন দুই দেশের অবস্থানে (Russia Ukraine War)। তা নিয়ে চিনকে হুঁশিয়ারি দেওয়া থেকেও পিছপা হয়নি আমেরিকা (US Warns China)। সেই পরিস্থিতিতেই ফোনে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বললেন দুই দেশের রাষ্ট্রনেতা জো বাইডেনে (Joe Biden) এবং শি চিনপিং (Xi Jinping)। তাতে রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধের দায় কোনও দেশই এড়াতে পারে না বলে বাইডেনকে স্মরণ করালেন চিনপিং।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাশিয়ার গলার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফাঁস টেনে ধরলেও, চিনের অবস্থান নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে ওয়াশিংটন (US-China Relations)। তা নিয়ে শুক্রবার সরাসরি ফোনে চিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলেন বাইডেন। পারস্পরিক সম্পর্ককে সরিয়ে রেখে, বেজিং যাতে রাশিয়ার নিন্দায় সরব হয়, ফোনালাপে সেই বার্তাই দেওয়া হয় বলবে চিনের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল সিসিটিভি জানিয়েছে।
কিন্তু প্রত্যুত্তরে এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকা নিয়ে চিনপিং প্রশ্ন তোলেন বলে জানা গিয়েছে। চিনপিংকে উদ্ধৃত করে চিনা সংবাদমাধ্যম কথোপকথনের যে অংশ তুলে ধরেছে, সেই অনুযায়ী বাইডেনকে চিনপিং বলেন, “পারস্পরিক সম্পর্ক কখনওই সামরিক শত্রুতায় পর্যবসিত হওয়া উচিত নয়। যুদ্ধ প্রত্যেকেরই স্বার্থের পরিপন্থী। তাই বর্তমান পরিস্থিতে দায় ঝেড়ে না ফেলে, চিন এবং আমেরিকা, দুই দেশকেই নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারণ শান্তি এবং নিরাপত্তাই আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্যের ভিত্তি।”
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের ঘোষণা করেন। তার পর থেকে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ তিন সপ্তাহ পার করে ফেলেছে। তাতে প্রাণ হারিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দু’পক্ষেরই। যুদ্ধে ঘরছাড়া মানুষদের নিয়ে শরণার্থী সঙ্কটে জেরবার গোটা বিশ্ব। সেই নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হলেও, রাশিয়া-ইউক্রেন সমঝোতা এখনও অধরাই।
সেই পরিস্থিতে আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন, ইউরোপের অধিকাংশ দেশ মিলে রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে উঠেপড়ে নামলেও, তাতে বাদা হয়ে দাঁড়িয়েছে চিন, এশিয়া এবং উপসাগরীয় উঞ্চলের কিছু দেশ। তাতে একরকম বাধ্য হয়েই চিনকে পাশে পাওয়ার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে আমেরিকা। কথায় কাজ না হলে, চিনের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় তারা। জানিয়ে দেয়, নিষেধাজ্ঞার ফাঁস থেকে রাশিয়াকে মুক্ত করার কোনও চেষ্টা করলে, তার ফল ভুগতে হবে বেজিংকে।
চিন যদিও গোড়া থেকেই জানিয়েছে, রাশিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমিকতা রক্ষার অধিকারকে সমর্থন করলেও, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বন্ধ করার পক্ষেই তারা। তবে নিষেধাজ্ঞার ফাঁস নয়, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমঝোতা হওয়া সম্ভব বলে তারা জানিয়ে দেয়। যে কারণে রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবে যখন বিশ্বের তাবড় দেশকে সমর্থন জানাতে দেখা যায়, সেই সময় ভোটদান থেকে বিরত থাকে চিন। ভোটদান থেকে বিরত থাকে ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশও।
সেই অবস্থান থেকেই চিনকে বার করে আনতে তৎপর হয়েছে আমেরিকা। যে কারণে আমেরিকার ডেপুটি বিদেশ সচিব ওয়েন্ডি শার্মানের সাফ বক্তব্য, “চিনকে বুঝতে হবে যে, আমেরিকা, ইউরোপ, বিশ্বের উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির সঙ্গেই তাদের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে। ভ্লাদামির পুতিনের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ানোয় কোনও ভবিষ্যৎ নেই তাদের।” তবে আমেরিকার হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও রাশিয়ার নিন্দা করা থেকে নিজেদের দূরেই সরিয়ে রেখেছে তিন। বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপে যুদ্ধ সমাপ্তির পক্ষে সওয়াল করলেও, রাশিয়ার নিন্দায় যাননি চিনপিং।